মহাস্থান(বগুড়া)প্রতিনিধিঃ বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মহাস্থান ও
গড় মহাস্থান এলাকায় নামে বে নামে শুরু হয়েছে দাদন ব্যবসায়ী
সমিতি, দাদন ব্যবসায়ীদের কবলে পড়ে সর্বশান্ত হচ্ছে সাধারন
খেটে খাওয়া মানুষ , দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী।
সরে জমিনে ও ভুক্ত ভোগী সুত্রে জানা গেছে, বগুড়ার শিবগঞ্জ
এলাকার বিশ্বের পুন্ড্র বর্ধন নামে পরিচিত ঐতিহাসিক
মহাস্থান গড়। প্রতিদিন এখানে দেশ বিদেশ থেকে পর্যটকেরা
বেড়াতে আসে এবং এখানকার সুনাম বহু দিনের। এ সুনাম
করতে বসেছে এখানকার মুখ চিনা কিছু, সমাজের
মুখোশধারী বিভিন্ন সংগঠনের নামের কথিত ব্যক্তি। তারা
নিজেরা এবং পরিবারের সদস্যদের নাম দিয়ে সমাজের সাধারণ
খেটে খাওয়া মানুষের দারিদ্রতার সুযোগ নিয়ে তাদের মধ্যে
ছড়িয়ে দিয়েছে সুদের ব্যবসা। যা কারেন্ট সুদ নামেও
এলাকায় পরিচিত। তাদের সুদের হার প্রতি হাজারে প্রতিদিন
৫০ টাকা এক দিন বা এক সপ্তাহ কেউ ঐ সুদের টাকা না দিতে
পারলে মুল টাকার সাথে সুদের টাকা যোগ হয়ে সুদের পরিমাণ
বেড়ে যাবে। কেউ মাসিক হারে তাদের কাছে থেকে সুদের
টাকা নিতে গেলে তাকে দিতে হবে ফাঁকা চেক ও ২০০/৩০০
টাকার ননজুডিসিয়াল ষ্ট্যাম্প। পরবর্তীতে যাতে ঐসব
জিনিসে নিজের ইচ্ছামত টাকার পরিমান বসিয়ে স্ব স্ব
ব্যাংক থেকে চেক ডিজ অনার করে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
উদহারণ স্বরুপ সদরের ধাওয়া কোলা গ্রামের আব্দুল হামিদ নামে
একজন এনজিও কর্মী মহাস্থান এলাকা থেকে কথিত দুই
সাংবাদিকের কাছে থেকে ৪০ হাজার টাকা সুদে নিয়ে একটি
সাদা চেক, ননজুডিসিয়াল সাদা ষ্ট্যাম্প ও নতুন একটি
বাজাজ সিটি মোটর সাইকেল জমা রাখে। দুই মাসে বিশ
হাজার সুদের টাকা পরিশোধ করে বাঁকী দুই মাসে সুদের
টাকা দিতে না পারায় মোটর সাইকেলটি ঐ সাদা ষ্ট্যামে তাদের
একজনের নামে লিখে নেয় এবং সাদা চেকে ৫লক্ষ টাকা বসিয়ে
কোর্টে মামলা দায়ের করে। মামলায় তার সাজা হয় এবং ৫ লক্ষ
টাকা কোর্টে জমা দেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়। এ সংবাদ
পেয়ে হামিদের পরিবার দিশেহারা হয়ে বাড়ী ঘর ছেড়ে ভয়ে অন্যত্র
পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এভাবেই দাদন ব্যবসায়ীরা সাধারণ মানুষকে
সর্বশান্ত করছে। এখানেই শেষ নয় এলাকায় কথিত সাংবাদিকের
পরিচয়ে সরকারী নির্দেশকে তোয়াক্কা না করে বাজারে বিভিন্ন
নামে বেনামে ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষকে মোটা অংকের লাভ
প্রদানের কথা বলে সঞ্চয় রাখতে উদবুদ্ধু করে দৈনিক সঞ্চয় জমা
দানের ভিত্তিতে তাদেরকে এক বছর মেয়াদী সদস্য করে নিয়ে
দৈনিক ১০/২০/৫০/১০০/২০০/৫০০/ টাকা হারে সঞ্চয় উঠাতে
থাকে। সে টাকা ব্যবসায়ী বা অন্যান্য ব্যক্তিদের মাঝে কারেন্ট
সুদে প্রদান করা হয়। ৫০ টাকা হারে সঞ্চয় রাখলে বছর শেষে
সঞ্চয়ী সদস্যদের টাকা জমা হয় ১৬ হাজার টাকা । প্রদান করা
হয় ২০ হাজার টাকা। পরবর্তীতে সঞ্চয়ী সদস্যদের জমার টাকা
ফিরত দিকে না পারলে তারা এলাকা থেকে পলিয়ে যায়, আর
সর্বশান্ত হয়ে যায় জমা রাখা সঞ্চয়ী সদস্য গণ। এভাবে কয়েক
বছরে সাধারণ মানুষের কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে
পলাতক রয়েছে অনেকে। এদের দৌরাত্ব এখই বন্ধ করতে হবে,
সমাজে তাদের মুখোশ খুলে দিতে হবে, এটা সময়ের দাবী।