ষ্টাফ রিপোর্টারঃ শীত এলেই যেন ভোজন প্রিয়সীদের জন্য কুমড়া বড়ি চাই ই চাই। শীতকাল কুমড়া বড়ি ভোজনের উপযুক্ত সময়। রান্নায় সব সবজির সাথে যেন যোগ হয় আলাদা একটি স্বাদ। তাইতো বগুড়ার দুপচাঁচিয়ার তালোড়া শাবলা কালিবাড়ি গ্রামে কুমড়া বড়ির মৌ মৌ গন্ধে মুখরিত চারদিক।
হিন্দু ও মসলিমের যৌথ বসবাসের এই গ্রামের সবাই সমপৃক্ত কুমড়া বড়ির তৈরীর সাথে। দীর্ঘদিনের এই পেশাতে শতাধিক পরিবারের আয়ের একমাত্র ভরসা। বাড়ির স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছেলে মেয়ে সহ প্রত্যেকটি পরিবারের সদস্যদের যেন হাতে বিরাম নেবার সময় নেই। বছরের অনান্য সময় যদিও কুমড়া বড়ি তৈরী হয়, তা শীত এলেই যেন কয়েক গুন বেড়ে যায়। ফাঁকা মাঠে বাঁশের উচু মাচং বেঁধে সারাদিন রোদের অপেক্ষায় থাকে কুমড়া বড়ির কারিগররা। বাড়ির সব বয়সি মানুষরা একসাথে কাজকর্ম করছে।
বাজার থেকে মাসকালাই কিনে এনে যাঁতায় পিষছে পুরুষরা, মহিলারা সেই কালাইয়ে ডাল বাড়ির উঠানে ও আঙ্কিনায় কুলাতে তা ঝারছে। আগের দিন বিকেল বেলা মাসকালাইয়ের ডাল পানিতে ভিজে রেখে, ভোর রাত থেকে মাশকালাই ডাল, কুমড়া, কালো জিরা ও বিভিন্ন মশলা ভালভাবে ছেঁছে সকালে তা নেট কাপরে সাথে বাঁশের চটায় বড়ি বানিয়ে শুকাতে দেওয়া দেয়। গড়ে তিনদিন শুকাতে হয় কুমড়া বড়ি, তবেই বাজারের জন্য বা রান্নার জন্য উপযোগী হয়।
প্রযুক্তির ব্যবহারে ও ক্রেতার আকর্ষন বাড়ানোর জন্য কুমড়া বড়ির গায়ে টানা দাগ বা আলপনার ছাপ ও দেখা যাচ্ছে। কুমড়া বড়ির সারাদেশে ব্যপক চাহিদা ও বড়ির গুনগত মান থাকায় প্রতি কেজি ১৫০টাকা থেকে ২০০টাকায় ক্রেতারা তাদের বাড়ি থেকে খুচরা ও পাইকারী নিয়ে যাচ্ছে। শাবলা কালিবাড়ি গ্রামের কুমড়া বড়ির ব্যবসায়ী শ্যামল চন্দ্র মহন্ত বলেন, আমরা সারা বছরই কুমড়া বড়ি তৈরী করি। তবে উত্তম সংরক্ষনের ব্যবস্থা না থাকায় কাঁচা মালের মতো কম দামেও বিক্রয় করতে হয়। ভালো সংরক্ষনের ব্যবস্থা থাকলে তা হতো না। তিনি আরো বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কুমড়া বড়ি তৈরী করে ইটভাটার আগুনে একদিনেই শুকিয়ে বিক্রয় করে মানুষদের ধোঁকা দিচ্ছে।