ভোট চলাকালেই মারা গেলেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী

বগুড়া নিউজ ২৪ঃ ভোট চলাকালে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন খুলনার চালনা পৌরসভার বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী ও দাকোপ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবুল খয়ের খান (৬০)। সোমবার বিকাল ৩টা ৫০ মিনিটে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ডেডিকেটেড ইউনিটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান তিনি। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ডেডিকেটেড ইউনিটের প্রধান ডা. ফরিদ উদ্দিন তার মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চালনা পৌরসভায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। তবে বিএনপির মেয়র প্রার্থী আবুল খয়ের খানের মৃত্যুর কারণে ওই পৌরসভার ফলাফল ঘোষণা সাময়িক স্থগিত রাখার কথা বলেছে নির্বাচন কমিশন।

এর আগে চালনা পৌরসভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে ভোটকেন্দ্র দখল করে জোর করে ভোট দেয়ার অভিযোগ তুলে সোমবার দুপুর পৌনে ২টায় বিএনপি প্রার্থী আবুল খয়ের খানের নির্বাচনের প্রধান এজেন্ট আবদুল মান্নান খান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ড. অচিন্ত্য কুমার বিশ্বাস পৃথকভাবে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটের চিকিৎসক ডা. তন্ময় মল্লিক জানান, করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২২ ডিসেম্বর রাত থেকে আবুল খয়ের খান খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ডেডিকেটেড ইউনিটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি ছিলেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার ৩টা ৫০ মিনিটে তিনি মারা যান। এছাড়া দুপুর ২টায় নুরুল ইসলাম (৬৮) নামে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ডেডিকেটেড ইউনিটে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে করোনায় আক্রান্ত আরেকজন রোগী মারা গেছেন। তার বাড়ি নগরীর মহেশ্বরপাশায়।

বিএনপি প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট আবদুল মান্নান খান অভিযোগ করে বলেন, ভোটের নামে চালনা পৌরসভায় তামাশা হয়েছে। আওয়ামী লীগের কর্মীরা বুথে ঢুকে তাদের দলীয় প্রার্থীকে ভোট দিয়েছে। প্রিসাইডিং অফিসারের কাছে অভিযোগ করেও কোনো কাজ হয়নি। ফলে আমরা ভোট বর্জন করতে বাধ্য হয়েছি।

জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা অভিযোগ করেন, অসুস্থ অবস্থায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে জোর করে ভোট নেয়ার সংবাদ পেয়েই তিনি মারা গেছেন। একজন প্রার্থী নির্বাচন চলাকালীন সময়ে মৃত্যুবরণ করায় তিনি নির্বাচনী আইন অনুযায়ী পুনরায় চালনা পৌরসভায় ভোটগ্রহণের দাবি জানান।

ভোট বর্জন করা স্বতন্ত্র প্রার্থী (জগ মার্কা) ও সাবেক মেয়র অধ্যক্ষ ড. অচিন্ত্য কুমার বলেন, চালনা পৌর নির্বাচনে মাত্র এক থেকে দেড় ঘণ্টা ভোট হয়েছে। এতে আমি প্রত্যেকটি কেন্দ্রেই এগিয়ে ছিলাম। এর পরই আওয়ামী লীগের কর্মীরা বুথে ঢুকে জোর করে ভোট দিয়েছে। বুথের সামনে আমার এজেন্টদের হুমকি দিয়ে বসিয়ে রাখা হয়েছে। তাদের কথা বলতেও দেয়া হয়নি। এছাড়া দীর্ঘ দুই ঘণ্টা আমার ‘জগ’ প্রতীক কম্পিউটারের স্ক্রিনেও দেখা যায়নি।

তিনি বলেন, প্রিসাইডিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েও কোনো কাজ হয়নি। শেষ পর্যন্ত দুপুর ২টায় আমি ভোট বর্জন করতে বাধ্য হয়েছি।

তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সনত কুমার বিশ্বাস দাবি করেন, ভোট সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হচ্ছে।

নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও দাকোপ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা কাজী মাহামুদ হোসেন বলেন, ‘শুনেছি বিএনপি ভোট বর্জন করেছে। বিভিন্ন নির্বাচনের দিনে দ্বিতীয়ার্ধে বিএনপি ভোট বর্জনের এমন কাজ করে।’

উল্লেখ্য, ৯টি ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করেছেন ১৯১ জন পুলিশ, ২৪ জন র্যা ব ও ৭৭ জন আনসার সদস্য। মোট ভোটার ১২ হাজার ১০০ জন। মেয়র পদে ৪ জন, কাউন্সিলর পদে ২৭ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ১০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ থেকে সনত কুমার বিশ্বাস, বিএনপি থেকে মো. আবুল খয়ের খান এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অচিন্ত্য কুমার ও গৌতম কুমার রায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ