বৃষ্টির পর ধান রোপণে ব্যস্ত নওগাঁর চাষিরা

নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি : আমন ধান রোপণ করছেন কৃষকরা। মৌসুমের শুরুতে প্রয়োজনের তুলনায় বৃষ্টি কম হওয়ায় আমন ধান চাষ নিয়ে বিপাকে পড়েছিলেন নওগাঁর চাষিরা। তবে কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে স্বস্তি ফিরেছে জেলার কৃষকদের মধ্যে। চাষিরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন আমন ধান রোপণে। সারা দিন থেমে থেমে হচ্ছে বৃষ্টি, তার মধ্যে ভিজে আমান ধান রোপণ করছেন চাষিরা। আমনের আবাদের জন্য প্রকৃতির বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে ছিলেন চাষিরা। আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে জমিতে আমনের চারা রোপণের উপযুক্ত সময় হলেও, বৃষ্টির অভাবে মাঠের পর মাঠ জমি অনাবাদি পড়েছিল। আবার গভীর ও অগভীর নলকূপ থেকে পানি দিয়ে বাড়তি খরচ করে জমি তৈরি করেতে শুরু করেছিলেন অনেকই। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর শ্রাবণের আকাশে ঘটে মেঘের ঘনঘটা। কয়েক দিন থেকে প্রকৃতিতে বইতে শুরু করেছে শ্রাবণের ধারা। আর এই সুযোগে বৃষ্টির পানিতে আমনের জমিতে চাষাবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। আগামী ১০-১৫ দিনের মধ্যে জমিতে চারা রোপণের কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন তারা।

মান্দা উপজেলার কালিসফা গ্রামের কৃষক বুলবুল বলেন, “এবার আমি তিন বিঘা জমিতে আমন ধান রোপণ করার প্রস্তুতি নিয়েছি। আমন ধানে সেচ দিয়ে চাষ করলে তেমন একটা লাভ হয় না। এ সময় ধান রোপণ করতে প্রকৃতির বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়। এবার বৃষ্টি দেরিতে হওয়ায় সেচ দিয়ে জমি চাষ করা শুরু করেছিলাম। এখন বৃষ্টি হওয়ায় আর সেচ দিয়ে জমি চাষ করতে হচ্ছে না। এই বৃষ্টি আমাদের জন্য ভাগ্যের দুয়ার খুলে দিয়েছে।”

নিয়ামতপুর ছাতমা গ্রামের চাষি সজল আলী বলেন, “এখন প্রতিদিন বৃষ্টি হচ্ছে। এই বৃষ্টিতে ভিজে অনেক কষ্ট করে আমরা ধান রোপণ করছি। আর কয়েক দিন বৃষ্টি থাকলে ধান রোপণের কাজ শেষ হয়ে যাবে।”

পোরশার শারাইগাছির গ্রামের চাষি একরামুল হক বলেন, “এত দিন বৃষ্টি না থাকায় ধান রোপণ করতে পারিনি। এখন বৃষ্টি হওয়ায় আমরা আমন ধান রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছি। বৃষ্টি দেরিতে আসায় আমন ধান রোপণে অনেকটা দেরি হয়ে গেছে।”

নওগাঁ জেলা কৃষি কর্মকর্তা সামসুল ওয়াদুদ বলেন, “চলতি আমন মৌসুমে নওগাঁয় ১ লাখ ৬১ হাজার ১৭৬ হেক্টর জমিতে আমনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত জেলায় প্রায় ৮৬ হাজার হেক্টর জমিতে আমনের চারা রোপণ করা হয়েছে। বৃষ্টির অভাবে আমনের চারা রোপণে বিলম্ব হলেও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। নওগাঁয় ইরি-বোরো, আমন ও আউশ ধান থেকে বছরে প্রায় ১৬ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য উৎপাদন হয়ে থাকে।”

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ