সংবিধান অনুযায়ী সময়মতো আগামী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, নির্বাচনের এখনও এক বছরেরও বেশি সময় বাকি। আমরা চাই সবাই নির্বাচনে আসুক। এখন কোনো দল না এলে সেটা তাদের দলের সিদ্ধান্ত। এজন্য সংবিধান তো বন্ধ থাকবে না।
বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গণভবনে ভারত সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর লিখিত বক্তব্যের পর একে একে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে নানা বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। একজন প্রশ্ন করেন- আগামী বছরের নভেম্বরে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ তাদের মহাজোটে কাদের নেবে? জাতীয় পার্টিকে জোটে নেয়া হবে কি না। জেলা পরিষদের মতো জাতীয় নির্বাচনেও দলের প্রার্থী পরিবর্তন হবে কি না এমন প্রশ্নও করেন এই সাংবাদিক।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটে কে থাকবে সেটা সময় বলে দেবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সময় এলে বলতে পারব। জাতীয় পার্টি আমাদের সাথে ছিল, তারা নির্বাচন করেছে। আগামী নির্বাচনে কে কোথায় থাকবে সেটা সময় বলে দেবে। আওয়ামী লীগ উদারভাবে কাজ করে, আমাদের দরজা খোলা।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘বাংলাদেশের সরকারে আসার পর থেকে আজকে দেশের যে উন্নয়ন আমরা করতে পেরেছি, যোগাযোগব্যবস্থা, নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ, গৃহ তৈরি করে দেওয়া, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা, এই দেশে শীতকালে লাউ শিম খেতেন। এখন সারা বছর খান। এগুলো আকাশ থেকে পড়েনি। সে সুযোগ আমরা করে দিচ্ছি। এভাবে সার্বিক দিক থেকে অর্থনৈতিক থেকে বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্য কর্মসংস্থান কাজ করে যাচ্ছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে এটা আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। যদি জনগণ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে চায়। তবে না চাইলে কিছু করার নেই। এটা জনগণের ইচ্ছা। নির্বাচনের সময় কে কোথায় থাকবে তাতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।’
স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অনেক দিক বিবেচনা করেই প্রার্থিতা দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে পরিবর্তন স্বাভাবিক বলেও মনে করেন সরকারপ্রধান।
আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থিতা পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। তিনি বলেন, যারা একটু বয়স্ক তাদের হয়তো বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে। আবার ভোটে প্রার্থী দিলে কে জিতে আসতে পারবে কি পারবে সেসব বিষয় হিসেবে করে ভোটে যাওয়া হয়। নির্বাচনে এখনও অনেক সময় বাকি।
এর আগে লিখিত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের (বাংলাদেশের) সম্পর্ক ঐতিহাসিক। মুক্তিযুদ্ধকালে সহযোগিতা এবং ভাষা ও সংস্কৃতির মিলের কারণে এই সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হয়েছে।
গত ৫ সেপ্টেম্বর চার দিনের সরকারি সফরে ভারতে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফরে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক ও একান্ত বৈঠক করেন। বৈঠকে নিরাপত্তা সহযোগিতা, বিনিয়োগ, বাণিজ্য সম্পর্ক, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সহযোগিতা, অভিন্ন নদীর পানি বন্টন, পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা, মাদক চোরাচালান ও মানব পাচার রোধ সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়।
প্রধানমন্ত্রীর সফরে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সাতটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। স্মারক সই শেষে দুই প্রধানমন্ত্রী যৌথ বিবৃতি দেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে শেখ হাসিনা ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৮ সেপ্টেম্বর ভারতে সরকারি সফর করেন।