পক্ষপাতমূলক আচরণ না করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সিইসির নির্দেশ

বগুড়া নিউজ ২৪ঃ নির্বাচনে কোনো দলের পক্ষে কাজ না করতে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

তিনি বলেন, নির্বাচনে কখনোই পক্ষপাতমূলক আচরণ করা যাবে না, শতভাগ নিরপেক্ষ থাকতে হবে। দলীয় মনোভাব প্রকাশের অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

শনিবার (৮ অক্টোবর) সকাল ১০টায় আগারগাঁও নির্বাচন কমিশন ভবনে জেলা পরিষদ ও অন্যান্য নির্বাচন নিয়ে ৬৪ জেলার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারদের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা জানান সিইসি।

তিনি বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক উদ্দেশে কোনো নেতাকর্মীকে যেন হযরানি করা না হয় সে দিকে নজর রাখতে হবে।

সিইসি বলেন, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে। ইভিএম প্রশ্নেও বিতর্ক রয়েছে। আমরা কেবল বিশ্বাস করি না, প্রমাণ পেয়েছি ইভিএম প্রযুক্তি ব্যবহার করে নির্বাচনি সহিংসতা ও কারচুপি নিয়ন্ত্রণ সহজতর। ১৫০ টি আসনে, প্রাপ্যতা সাপেক্ষে, ইভিএম প্রযুক্তি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। তবে প্রয়োজনে ১৫০ এর অধিক আসনে ব্যালটে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতিও থাকবে। সে লক্ষ্যে নির্বাহী ও পুলিশ প্রশাসনকেও আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে প্রস্তুত থাকতে হবে।

তিনি বলেন, মনে রাখতে হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেশে একই দিনে একই সময়ে ৪২ থেকে ৪৫ হাজার ভোটকেন্দ্রে ভোট গ্রহণের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হবে। কর্মযজ্ঞটি সহজসাধ্য না হলেও, অসাধ্য নয় এবং সমন্বিত প্রয়াসের মাধ্যমে সার্থকভাবেই সাধন করতে হবে।

সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল সাংবাদিকদের বলেন, ডিসি এসপিদের উদ্দেশ্যে বলেছি, কোনো অবস্থাতেই নির্বাচন বিষয়ে কর্মকর্তাদের আচরণে এমন কিছু যাতে প্রতিফলন না হয়-যাতে জনগণ ভাবতে পারেন তাঁরা একটি দলের পক্ষে কাজ করছেন। ‘আপনারা আচরণে এমন কোন কিছু করবেন না যাতে সাধারণ জনগণ মনে করতে পারে আপনারা পক্ষপাতদুষ্ট। আপনারা দল নিরপেক্ষ নয়। আপনাদের অবশ্যই দল নিরপেক্ষ হয়ে কাজ করতে হবে। আপনারা গণকর্মচারী হিসেবে সরকার ও রাজনৈতিক দলের মধ্যে পার্থক্য ‍বুঝতে হবে। কর্মে কখনো নিজেদের দলীয় কর্মী ভাববেন না বা মনে করবেন না।

তিনি বলেন, বৈঠকে ডিসি এসপিরা কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) বিষয়ে প্রচুর ‘ভোটার এডুকেশন’ দরকার। অনেকে প্রযুক্তি ভয় পান। এ কারণে অনেকে ইভিএম নিয়ে ব্যাপক প্রচার চালানোর পরামর্শ দিয়েছেন। বেশি সংখ্যক আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েনের স্বার্থে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা কমিয়ে বুথ (ভোটকক্ষ) বাড়িয়ে দেওয়ার বিষয়ে তাঁদের পক্ষ থেকে প্রস্তাব এসেছে। ইসি এটি পর্যালোচনা করে দেখবে। সিইসি বলেন, সংসদ নির্বাচন নিয়ে পক্ষ-বিপক্ষ অবস্থানের কারণে বিভাজন রয়েছে। ইসি আশা করে রাজনৈতিক নেতৃত্ব তাঁদের সদিচ্ছা, প্রজ্ঞা দিয়ে রাজনৈতিক সমস্যাগুলোর সমাধান করবেন। এটি কমিশনের কাজ নয়। রাজনৈতিক বিষয়ে ইসি অনুপ্রবেশ করতে পারে না। রাজনৈতিক সমস্যা রাজনীতিকদের সমাধান করতে হবে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, জেলা ও পুলিশ প্রশাসন নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে চেষ্টা করে। সংসদীয় ব্যবস্থা এমন যে সরকার ও দল আলাদা করা অনেক সময় কষ্টকর। অনেক সময় অলক্ষে প্রভাব চলে আসতে পারে। তবে নির্বাচন কমিশন এবার শক্ত অবস্থানে থাকবে। আচরণ বিধি মেনে গণকর্মচারী হিসেবে অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে হবে।

বৈঠকে চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী বছরের শেষে অথবা ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান সিইসি।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ