সৌন্দর্য বাড়াতে ‘বেদানা’

বগুড়া নিউজ ২৪ঃ বেদানা খাদ্যগুণে পরিপূর্ণ একটি ফল। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, প্রোটিন, ভিটামিন- সি, ভিটামিন- কে, ফলেট ও পটাসিয়াম। যার ফলে বেদানা আমাদের নানারকম রোগের হাত থেকে রক্ষা করে। তবে এখানেই শেষ নয়, ডায়েটের খাদ্য লিষ্টে বেদানার রস রাখলে আরও নানাবিধ উপকার মেলে। আরও কি কি উপকার মেলে বেদানায়, চলুন জেনে নেওয়া যাক সেগুলো-

ব্রেন ডিজিজ থেকে দূরে থাকা সম্ভব হয়

একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, বেদানায় উপস্থিত নানাবিধ উপকারি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখায় যে ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। বিশেষত ব্রেন সেলের ক্ষমতা এতটা বেড়ে যায় যে অ্যালঝেইমার্সের মতো মস্তিষ্কঘটিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় থাকে না বললেই চলে।

ভিটামিনের ঘাটতি দূর হয়

শরীরকে সচল এবং সুস্থ রাখতে যে যে ভিটামিনগুলোর প্রয়োজন পরে প্রতিদিন, তার প্রায় সবকটিরই সন্ধান মেলে বেদানায়, যেমন ধরুন-ভিটামিন সি, ই, কে, সেই সঙ্গে ফলেট, পটাসিয়াম এবং আরও কত কী! তাই দীর্ঘদিন যদি সুস্থভাবে বাঁচতে এই ফলটির গুরুত্ব অপরিসীম!

নানাবিধ পেটের রোগের প্রকোপ কমে

বেদানার ভিতরে থাকা একাধিক উপকারি উপাদান স্টমাকের কর্মক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে হজম ক্ষমতার উন্নতিতেও সাহায্য করে। প্রসঙ্গত, বেদানার পাতা দিয়ে বানানো চা খেলেও এক্ষেত্রে দারুন উপকারি পাওয়া যায়।

হার্টের ক্ষমতা বাড়ে

রোজের ডায়েটে এই ফলটিকে রাখলে সারা শরীরে রক্তের প্রবাহ মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়তে থাকে। সেই সঙ্গে কমে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও। বেদানার শরীরে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও নানাভাবে হার্টের খেয়াল রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

চুল পড়ার হার কমে

প্রতিদিন বেদানার রস খেলে হেয়ার ফলের মাত্রা কমবে, সেই সঙ্গে চুলের সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পাবে চোখে পরার মতো। বেদানায় ফ্লেবোনয়েড নামক একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা রক্তে উপস্থিত ক্যান্সার সৃষ্টিকারি টক্সিক উপাদান শরীর থেকে বের করে দেয়। ফলে কোনওভাবেই দেহের ভিতরে ক্যান্সার সেল জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা থাকে না। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, প্রস্টেট এবং ব্রেস্ট ক্যান্সারকে দূরে রাখতেও এই ফলটি নানাভাবে সাহায্য করে থাকে।

ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়

প্রতিদিনের ডায়েটে বেদানাকে জায়গা করে দিলে ত্বকের ভিতরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে বলি রেখা অদৃশ্য হতে থাকে। সেই সঙ্গে ডার্ক স্পট এবং ডার্ক সার্কেলেও গায়েব হয়ে যায়। ফলে সৌন্দর্য বাড়ে চোখে পরার মতো।

অ্যানিমিয়ার মতো রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। আমাদের দেশে প্রতি বছর লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে অ্যানিমিয়ার প্রকোপ। এমন পরিস্থিতিতে বেদানা খাওয়ারও প্রয়োজন বেড়েছে অনেক মাত্রায়। কারণ এই ফলটির শরীরে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় আয়রন, যা লোহিত রক্ত কণিকার উৎপাদন বাড়িয়ে দিয়ে রক্তাল্পতার মতো সমস্যা দূর করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

ডায়াবেটিস থেকে দূরে রাখে

যদি ডায়াবেটিস থাকে তাহলে বেদানা খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন ডায়াবেটিস আপনার শরীরে বাসা বাঁধতে পারবে না। কারণ এই ফলটি খাওয়া মাত্র শরীরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে রক্তে সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। ফলে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের মতো রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে চলে আসে

একাধিক গবেষণায় এ কথা প্রমাণিত হয়েছে যে, নিয়মিত কাঁচা বেদানা অথবা বেদানার রস খাওয়া শুরু করলে ব্লাড ভেসেলে সৃষ্টি হওয়া প্রদাহ কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে সারা শরীরে রক্তের প্রবাহ এতটা বেড়ে যায় যে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে সময় লাগে না। তাই যাদের পরিবারে এই মরণরোগের ইতিহাস রয়েছে, তারা যদি দীর্ঘকাল সুস্থ থাকতে চান, তাহলে এই ফলটিকে সঙ্গী বানাতে ভুলবেন না যেন!

জয়েন্টের সচলতা বৃদ্ধি পায়

শরীরে যখন ক্যালসিয়ামের মাত্রা কমতে শুরু করে তখন এমন কিছু ক্ষতিকর এনজাইমের ক্ষরণ বেড়ে যায় যে জয়েন্টের সচলতা কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে হাড় এত মাত্রায় দুর্বল হয়ে পরে যে অস্টিওআর্থ্রাইটিস মতো রোগ মাথা চাড়াদিয়ে ওঠে। এক্ষেত্রেও কিন্তু বেদানা নানাভাবে কাজে আসে।

দাঁত শক্তপোক্ত হয়

অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ভাইরাল প্রপাটিজে পরিপূর্ণ এই ফলটি খাওয়া মাত্র মুখ গহ্বরের ভিতরে উপস্থিত ক্ষতিকর জীবাণুরা সব মারা পরে। ফলে ক্যাভিটির মতো সমস্যা হওয়ার আশঙ্কাও কমে।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ