হেলিকপ্টারে বউ নিয়ে গেলেন হরিজন সম্প্রদায়ের অপু

কুড়িগ্রাম থেকে হেলিকপ্টারে চড়ে নববধূকে নিয়ে নিজ বাড়িতে নিয়ে গেলেন নেত্রকোণার হরিজন সম্প্রদায়ের ছেলে অপু বাঁশফোর। অপু পেশায় একজন ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী। মৃত বাবা দিলিপ বাঁশফোরের স্বপ্ন পূরণ করতে এ আয়োজন করেছেন তিনি। কনে সানিতা রানীর বাড়ি কুড়িগ্রাম পৌর শহরের বস্তিপাড়া গ্রামের হরিজন ভুট্ট বাঁশফোরের মেয়ে।

বুধবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে কুড়িগ্রাম জেলা স্টেডিয়ামে হেলিকপ্টারটি অবতরণ করে। হেলিকপ্টারটি দেখতে ভিড় জমে হাজারো মানুষের।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বর অপু বাঁশফোরের বাড়ি নেত্রকোণা সদরে। কনে সানিতা রানীর বাড়ি কুড়িগ্রাম পৌর শহরের বস্তিপাড়ায়। অপু বাঁশফোরের নিকটাত্মীয় কুড়িগ্রামে বসবাস করায় পারিবারিকভাবে আলোচনার মাধ্যমে তাদের বিয়ে হয়।

সানিতা রানীর বাবা ভুট্ট বাঁশফোর বলেন, আমরা গরিব মানুষ। বর পক্ষ আমাদের মেয়েকে পছন্দ করেছে। দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে দেওয়া হলো। মেয়েকে হেলিকপ্টারে করে নিয়ে যাবে এ কথা কখনোই বিশ্বাস করতাম না। আজ হেলিকপ্টার এসে মেয়েকে যখন নিয়ে গেল বুকটা শান্তিতে ভরে গেল।

বর অপু বাঁশফোর বলেন, আমার বাবা দুই বছর আগে মারা যান। তার ইচ্ছা ছিল বড় আয়োজন করে আমার বিয়ে দেবেন। তিনি বারবার বলেছিলেন আমার বউমাকে যেন হেলিকপ্টারে করে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। তাই বাবার আত্মার শান্তি ও স্বপ্ন পূরণে ঘণ্টা প্রতি ৮০ হাজার টাকা খরচ করে হেলিকপ্টারে করে বউকে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছি।

হেলিকপ্টার দেখতে আসা মো. রহিম নামে একজন বলেন, আমি কখনো হেলিকপ্টারে বর যাত্রী যেতে দেখিনি। আজ স্টেডিয়ামে মানুষের ভিড়ে হেলিকপ্টার দেখলাম। দোয়া করি বর-বউ যেন ভালো থাকে।

রহিম উদ্দিন নামে একজন বলেন, হেলিকপ্টারে করে বিয়ে আমার জানা মতে কুড়িগ্রামে হয়নি। এইবারেই প্রথম হরিজন সম্প্রদায়ের এক মেয়ের বিয়ে হলো হেলিকপ্টারে করে।

নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সদর থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মাজেদ আলী বলেন, আমরা শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে ছিলাম। খুব সুন্দরভাবে হেলিকপ্টার অবতরণ করে। বরযাত্রী কনে নিয়ে চলে গেছে।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ