বগুড়া নিউজ ২৪ঃ বাংলাদেশ কৃষক সমিতির চতুর্দশ জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেশী-বিদেশী কৃষক নেতারা বলেছেন, বিগত ৫১ বছরে কৃষকের ভাগ্য উন্নয়নে কোনো সরকার কার্যকর কিছু করেনি। তারা কৃষককে শুধু আশ্বাস দিয়েছে। দেশের কৃষক ও কৃষি বাঁচাতে হলে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। আমরা গ্রাম থেকে এ আন্দোলন রাজধানীতে নিতে চাই। কৃষকবান্ধব সরকার প্রতিষ্ঠা করতে না পারলে কখনো কৃষকের ভাগ্য পরিবর্তন হবে না। তাই নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন হতে হবে।
বৃহস্পতিবার বগুড়া শহরের আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। কৃষি এবং কৃষকের সংকট নিরসনে বাংলাদেশ কৃষক সমিতির ১০ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বাগদা ফার্ম আন্দোলনের নেতা বিমল কিসকু।
বাংলাদেশ কৃষক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি অ্যাডভোকেট এস এম এ সবুরের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সভাপতি কমরেড মোঃ শাহ আলম, সাবেক সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম নেতা কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, ক্ষেতমজুর সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন রেজা, সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির চেয়ারম্যান কমরেড নিমাই গাংগুলি, সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক আবিদ হোসেন, সিপিবি বগুড়া জেলা শাখার সভাপতি কমরেড আমিনুল ফরিদ, কৃষক সমিতি বগুড়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হাসান আলী শেখ।
সম্মেলনে বিদেশী অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ভারতের সিপিআইয়ের সদস্য, সারা ভারত কৃষক সভার জাতীয় পরিষদ সদস্য ও পশ্চিমবঙ্গ কৃষক শাখার সম্পাদক তড়িৎ কুমার চক্রবর্তী, এম.এল.পি.ডি প্রতিনিধি ফার্মাস অর্গানাইজেশন জার্মানির গার্ড জিটনার, নেপালের অল নেপাল পিপলস ফেডারেশন (এপিএফএ)-এর সভাপতি ভৈরব রাজ রীগমি, ইনচার্জ পিজেন্টস উইমেন সংগঠনে (এপিএফএ) সাবিত্রা ডাখাল রিগমী। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিপিবির সাবেক সভাপতি কমরেড মনজুরুল আহসান খান।
সম্মেলনে কমরেড মো: শাহ আলম বলেন, দেশ দুভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। সেই সাথে দেশের অর্থনীতিও দুভাগ হয়ে পড়ছে। এর একভাগে ৯৫ ও অপর ভাগে ৫ ভাগ। সেই ৫ ভাগে রয়েছেন কৃষক।
কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, কৃষকবান্ধব সরকার গড়তে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন হতে হবে।
কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন বলেন, কৃষি ও কৃষককে বাঁচাতে হলে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
সম্মেলনে কৃষকদের স্বার্থে ১০ দফা বাস্তবায়নে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য কৃষকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। শুক্রবার শহীদ টিটু পৌর মিলনায়তনে কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে।
বক্তৃতা পর্ব শেষে লাল কাপড়ে কৃষকের প্রতীক কাস্তে এবং লাঙ্গল খচিত হাজার হাজার পতাকা, কৃষকের দাবি সম্বলিত শত ফেস্টুন-প্ল্যাকার্ড, ব্যানার, কৃষকের মাথাল, কোদাল, কাস্তে, লাঙ্গল, নৃগোষ্ঠী কৃষকদের লোকজ সাজসজ্জা সম্বলিত বিভিন্ন উপকরণে সজ্জিত হয়ে কয়েক হাজার কৃষকের একটি র্যালী বগুড়া শহরের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে। সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পূর্বে এবং র্যালী শেষে খুলনা, যশোর ও অন্যান্য জেলার উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর শিল্পীবৃন্দ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন।