বিএনপি শেখ হাসিনাকে হত্যার মিশনে নেমেছে : ওবায়দুল কাদের

বগুড়া নিউজ ২৪ঃ বিএনপি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছে অভিযোগ তুলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘তাদের এক দফা শেখ হাসিনাকে হত্যা করা। শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তাই আজকে তার একমাত্র শত্রু।’ মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে কাদের এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রাজশাহী জেলা শাখা বিএনপির আহবায়ক আবু সাঈদ চাঁদের ‘হত্যার হুমকির’ প্রতিবাদে এ বিক্ষোভ সমাবেশ করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ।

কাদের বলেন, ‘দেশে ঝড় বয়ে গেছে, সারাদেশ গর্জন করে উঠেছে। শেখ হাসিনাকে কটূক্তি, হত্যার হুমকি দেয়ায় বাংলাদেশের মানুষ অবাক হলো। প্রকাশ্য দিবালোকে রাজশাহীর পুঠিয়ায় জেলা আহ্বায়ক যে বক্তব্য, হত্যার হুমকি দেয়ার দুইদিন চলে গেল, মির্জা ফখরুল একটা কথাও বললেন না, বিএনপির কোনো সিনিয়র নেতা একটা কথাও বললেন না। সবাই নীরব হয়ে আছেন। তাই আজকে প্রশ্ন জাগে, এটা তার (চাঁদ) এক দফা নয়, এটা বিএনপির এক দফা।’ শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তাই তার একমাত্র শত্রু উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সেজন্যই বিএনপি ১৪ বছর পরে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। কিন্তু জনগণের সাড়া না পেয়ে তারা এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছে জনপ্রিয়তার শীর্ষে যে নেত্রী তাকে স্তব্ধ করে দিতে হবে, এই ষড়যন্ত্র নিয়ে তারা আজকে মাঠে নেমেছে।’ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে কাদের বলেন, ‘ফখরুল সাহেব, আমাদের পার্টির কোনো জেলার নেতা যদি খালেদা জিয়াকে হত্যা করার হুমকি দিত, তাহলে আপনারা কী করতেন? কী জবাব দিতেন, আমি জানতে চাই!’ তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে হত্যা করে আপনারা বাংলাদেশকে আপনাদের সেই ষড়যন্ত্রের, জঙ্গিবাদ-সাম্প্রদায়িকতার লীলাভূমিতে পরিণত করবেন, অস্ত্রপাচার-লুটপাট, গণতন্ত্রের হত্যার জন্য এই শ্যামল বাংলাদেশকে আফগানিস্তান-পাকিস্তান বানানোর যে দুঃস্বপ্ন আপনারা দেখছেন, তার পথের বাধা শেখ হাসিনা, তাকে হত্যা করে আপনারা স্বপ্নের আফগানিস্তান বাস্তবায়ন করতে চান।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘হত্যার হুমকির’ প্রতিবাদে দেশব্যাপী আন্দোলনের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গত চব্বিশ ঘণ্টায় সারাদেশের মানুষ বুঝিয়েছে ১৯৭৫ আর ২০২৩ এক নয়। বিএনপির উপলব্ধি করা উচিত, রাজশাহীর এক নেতা হুমকি দেয়ায় সারাদেশ গর্জন করে উঠেছে। শেখ হাসিনার ওপর হামলা করলে আওয়ামী লীগ কর্মীরা চুপ করে বসে থাকবে না।’ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে দলটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সামনে নির্বাচন। তারা নির্বাচন চায় না। তারা চায় সংঘাত, অস্থিরতা, অশান্তি, রক্তপাত। আমরা চাই নির্বাচন-বাংলাদেশের জনকণ্ঠকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে। আমরা নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই।’ ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘আমরা কারও সঙ্গে সংঘাত-পাল্টা সংঘাতে যাব না। আমরা রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করবো এই অপশক্তিকে। এই অপশক্তিকে বাংলার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলতে হবে। আমরা ভুল থেকে শিক্ষা নেব- এই আশ্বাস জনগণকে দিতে হবে।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার বিষয়ে কাদের বলেন, ‘কাতারের উদ্দেশে রওনা দেয়ার আগে নেত্রী বলে গেছেন- কোনো সংঘাতে যাওয়া যাবে না। আমরা সংঘাতে যাব না, কিন্তু সংঘাত কেউ করতে আসলে আমরা চুপ করে বসে থাকব? আমাদের ওপর যদি কেউ হামলা চালায়, তাহলে আমরা হামলা চালাব না! হামলা করলে তার সমুচিত জবাব কীভাবে দিতে হয় তা আওয়ামী লীগ জানে।’

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘কথায় কথায় আপনারা মাথা গরম করবেন না। ঠাণ্ডা মাথায় এই অপশক্তিকে বাংলাদেশের জনগণ রাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন করবে। যদি কেউ নির্বাচন প্রতিরোধ করতে আসে, আমরা সর্বশক্তি দিয়ে, জনগণকে নিয়ে প্রতিরোধ করব।’ বাংলাদেশের নির্বাচনের দিকে সারা বিশ্ব তাকিয়ে আছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমি সরকারি দলের সেক্রেটারি বলছি, দুই দিন পর সিটি করপোরেশন নির্বাচন, এই নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে। এই নির্বাচনে সরকারি দল নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করবে না। গাজীপুর সিটি নির্বাচনসহ সব সিটি নির্বাচন এবং আগামীতে জাতীয় নির্বাচন ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার (অবাধ ও সুষ্ঠু) হবে। আমরা বিদেশিদের অনুরোধ করব, আপনারা আসুন এবং দেখুন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কীভাবে ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন হবে।’ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, ‘আপনি একা নন, বাংলাদেশের জনগণ আপনার সঙ্গে আছে, সমগ্র দেশের আওয়ামী লীগের শত শত কর্মী বিপদে-আপদে শত দুর্যোগে আপনার সঙ্গে আছে।’ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির প্রমুখ।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ