শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি: বগুড়ার শাজাহানপুরে সিগারেট বাকী না দেয়ায় এক মুদি দোকানীকে মারপিট, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
বুধবার আব্দুল কাদের (৪২) নামে এক ব্যক্তি এই অভিযোগ দায়ের করেন। আব্দুল কাদের উপজেলার মাঝিড়া ইউনিয়নের সাজাপুর আকন্দপাড়ার আবু সাইদের ছেলে।
জানা যায়, মুদি দোকানী আব্দুল কাদের মাঝিড়া ডোমনপুকুর নতুনপাড়া এলাকায় দোকান ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মুদি দোকানের ব্যবসা চালিয়ে আসছেন। মাঝে মধ্যে আব্দুল কাদেরের স্ত্রীও দোকানে বসেন। গত মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) সন্ধ্যার দিকে আব্দুল কাদেরের স্ত্রী দোকানে বসে ছিলেন। সেসময় ডোমনপুকুর দেওয়ানপাড়ার মোহাম্মাদ আলীর দুই ছেলে মোঃ সোহান (১৯) এবং মোঃ সাগর (১৮) দোকানে এসে সিগারেট বাকী চায়। কিন্তু তার স্ত্রী সিগারেট বাকী না দিয়ে ছোট ছেলে হিসেবে সিগারেটের বদঅভ্যাস ত্যাগ করার জন্য তাদেরকে বলে। এনিয়ে তারা উত্তেজিত হয়ে আব্দুল কাদেরের স্ত্রীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে হুমকি ধামকি দিয়ে চলে যায়। একই দিন রাত ৮টার দিকে আব্দুল কাদের দোকানে বসে ছিলেন। এসময় সোহান ও সাগর এলাকার বখাটে ছেলে ডোমনপুকুর নতুনপাড়ার আবু সাইদের ছেলে মোঃ সাকিব (২১) সহ বেশ কয়েকজন ছেলেপেলেকে ডেকে নিয়ে আসে। বখাটে সাকিব উত্তেজিত হয়ে আব্দুল কাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। একপর্যায়ে দোকানী আব্দুল কাদেরের কলার চেপে ধরে এলোপাথারী মারপিট করে এবং দোকানের ভিতরে ঢুকে মালামাল তছনছ ও ভাংচুর করে ক্যাশ থেকে ১০ হাজার টাকা লুটপাট করে নিয়ে যায়। মারপিটে আহত হয়ে আব্দুল কাদের বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
আব্দুল কাদের জানান, অভিযুক্তরা এলাকায় বিভিন্ন ধরনের অপারধমূলক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। ইভটিজিং, চুরি, ছিনতাই সহ এমন কোন কাজ নাই যে তারা করে না। বিনা কারনে এরা প্রায়ই কাউকে না কাউকে মারধর করে। এরা কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। কিছুদিন আগে গভীর রাতে মাঝিড়া পাড়ায় এক নির্মাণাধিন বিল্ডিং বাড়ি থেকে রড চুরির সময় স্থানীয়দের হাতে ধরা খায় সাকিব। পরে পুলিশ এসে সাকিবকে আটক করে আদালতে পাঠিয়ে দেন। ১ মাস আগে সাকিব জামিনে এসে আবারো এলাকায় অপরাধমূলক কর্মকান্ড শুরু করেছে। সিগারেট বাকী না দেয়ায় তুচ্ছ ঘটনায় যারা মারপিট, লুটপাট করতে পারে তারা যেকোন সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটাতে পারে। এবিষয়ে সাকিবের বাবা আবু সাইদের সাথে কথা বললে তিনি বলেন তার ছেলের কোন ধার ধারেন না। যা খুশি করেন। এমতাবস্থায় পরিবারসহ নিজের জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানান দোকানী আব্দুল কাদের।
এবিষয়ে মোঃ সাকিবের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার বাবা আবু সাইদের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তার ছেলে সাকিব নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে গেছে। বিভিন্ন ভাবে শাসন করেও তাকে ভাল করা যাচ্ছে না। তার ছেলের জন্য পরিবারের সবাই অশান্তিতে আছেন।
অভিযোগ তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার এসআই ইউসুব আলী জানান, অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দোকানের মালামাল তছনছের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।