পাকিস্তানের বিপক্ষে অল্পতেই গুটিয়ে গেল বাংলাদেশ

বগুড়া নিউজ ২৪ঃ পাকিস্তানি পেসারদের আগুনে বোলিংয়ে প্রথম পাওয়ার প্লেতেই টপ-অর্ডারের ৪ ব্যাটারকে হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে টাইগারদের টেনে নিয়ে যান সাকিব আল হাসান-মুশফিকুর রহিমের জুটি। কিন্তু এই দুই অভিজ্ঞ ব্যাটারের শতরানের জুটির পর আর কেউই সুবিধা করতে পারেননি। ফলে অল্পতেই গুটিয়ে গেল সাকিব বাহিনী।

বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে এশিয়া কাপের সুপার ফোরে নিজেদের প্রথম ম্যাচে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। ব্যাটিং করতে নেমে সাকিব ও মুশফিকের ফিফটিতে ৩৮ ওভার ৪ বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৯৩ রান সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ। ফলে জয়ের জন্য পাকিস্তানের দরকার মাত্র ১৯৪ রান।

ইনিংসের শুরুতেই গোল্ডেন ডাক মেরে বিদায় নেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকানো জয়ের নায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ। দ্বিতীয় ওভারে নাসিম শাহর গুড লেন্থের বলে লেগ সাইডে ঘুরানোর চেষ্টা করতে গিয়েই বিপদ ডেকে আনেন মিরাজ। মিড অনে দাঁড়িয়ে থাকা ফিল্ডার ফখর জামানের হাতে ক্যাচ দিয়ে রানের খাতা খুলার আগেই বিদায় হন তিনি।

এরপর ব্যাটিংয়ে এসেই বাউন্ডারি মেরে বেশ দারুণ শুরু করেছিলেন নাজমুল হোসেন শান্তর হ্যামস্ট্রিং ইনজুরিতে স্কোয়াডে ফেরা লিটন দাস। পাকিস্তানি পেসারদের ওপর আক্রমণাত্বক ভঙ্গিতে খেলে বেশ কয়েকটি বাউন্ডারি মারেন তিনি। কিন্তু শাহিন আফ্রিদি বলে উইকেটের পেছনে মোহাম্মদ রিজওয়ানের ক্যাচ দিয়ে দেন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৩ বলে ১৬ রান।

জোড়া উইকেট হারালেও একপ্রান্তে অবিচল দাঁড়িয়ে ছিলেন ওপেনার নাঈম। কিন্তু সেট হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি বাঁহাতি এই ব্যাটার। রউফের বলে পুল করতে গিয়ে বল সোজা উপরে ওঠে যায়, তাতে বোলার নিজেই তালুবন্দি করেন। সাজঘরে ফেরার আগে ২৫ বলে ২০ রান এসেছে এই ওপেনারের ব্যাট থেকে।

এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে ব্যর্থ হন এশিয়া কাপের আগে ফর্মের তুঙ্গে থাকা তৌহিদ হৃদয়ও। গ্রুপ পর্বের দুই ম্যাচে ব্যর্থ ডানহাতি এই ব্যাটার হারিস রউফের বলে বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে মাত্র ২ রান করেন। ফলে দলীয় অর্ধশতকের আগেই ৪ ব্যাটারকে হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় বাংলাদেশ।

এরপর বিপর্যয়ে থাকা দলের হাল ধরেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসান। তারা দুজনে মিলে বিপদ কাটিয়ে দলের সংগ্রহ এগিয়ে নিয়ে যান। পঞ্চম উইকেটে তারা দুজনে শতরানের জুটি গড়ে অল্পতেই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা কাটিয়ে ওঠে টাইগাররা। এর মাঝে ক্যারিয়ারের ৫৪তম ফিফটি তুলে নেন সাকিব।

তবে ফিফটির পরেই আউট হয়ে যান টাইগার ক্যাপ্টেন সাকিব। ৩০তম ওভারের প্রথম বলে ফাহিম আশরাফকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সীমানার কাছে ফখর জামানের হাতে ধরা পড়েন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৫৭ বলে ৭টি চারের মারে ৫৩ রান।

সাকিবের বিদায়ের পর পরই হাফ সেঞ্চুরির দেখা পান মুশফিকও। ৩০তম ওভারের তৃতীয় বলটি লেগ স্টাম্পের ওপর করেছিলেন ফাহিম। সেটি ফাইন লেগের দিকে ঘুরিয়ে ২ রান নিয়ে ক্যারিয়ারের ৪৬তম হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন মুশফিক। এই মাইলফলক ছুঁতে ৭১ বল খেলেছেন এই উইকেটকিপার ব্যাটার।

ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন দিয়ে সাত নম্বরে পাঠানো হয়েছিল শামীম হোসেনকে। সেটার প্রমাণও দিলেন উইকেটে এসেই। ৩৪তম ওভারে আফ্রিদিকে ছক্কা হাঁকিয়ে ভালোই শুরু করেছিলেন। কিন্তু পরের ওভারেই রীতিমতো নিজেকে বিসর্জন দিলেন এই ব্যাটার। ইফতিখারকে টেনে লেগ সাইডে মারতে গিয়ে টপ এজড হয়ে ধরা পড়েন। তাতে ২৩ বলে ১৬ রানে থামেন তিনি।

৩৮তম ওভারে রউফের টানা দুই বলে সাজঘরে ফেরেন মুশফিক ও তাসকিন আহমেদ। ফলে শেষ ৩ রান তুলতেই লেজের সারির ৪ ব্যাটারকে হারায় বাংলাদেশ। তাতে ১৮৯ রানে ৬ উইকেট থেকে ১৯৩ রান তুলতেই অলআউট হয় বাংলাদেশ।

বোলিংয়ে পাকিস্তানের হয়ে ১৯ রানে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট শিকার করেন হারিস রউফ। তাছাড়া আফ্রিদির ঝুলিতে গেছে ৩ উইকেট। নাসিম শাহ, ফাহিম আশরাফ ও ইফতিখার আহমেদ একটি করে উইকেট পান।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০