রংপুর প্রতিনিধি: চাহিদা বাড়ায় রংপুর অঞ্চলে বাড়ছে সুপারির চাষ। রংপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের দেয়া তথ্য মতে, চলতি বছর রংপুর জেলায় মোট ২শ’ ৫৬ হেক্টর জমিতে সুপারি চাষ হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে ১ হাজার ৫শ’ ৯০ মেট্রিক টন সুপারি। ২০২১ সালে উৎপাদন হয়েছিলো ১ হাজার ৪শ’ মেট্রিকটন সুপারি।
কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, রংপুর সদর, মিঠাপুকুর, পীরগাছা, পীরগঞ্জ, তারাগঞ্জ ও বদরগঞ্জ এলাকায় প্রচুর সুপারি চাষ হয়। পাশাপাশি কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও নীলফামারী জেলায়ও প্রচুর পরিমাণে সুপারির চাষ হয়ে থাকে।
সুপারি গাছে তেমন কোনো যত্ন নেয়ার প্রয়োজন হয় না। এর কোনো ডালপালাও থাকে না। সোজা লম্বা হয়ে থাকে। রংপুরের পৌর বাজার ও লালবাগ বাজারসহ জেলার প্রতিটি উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সুপারির বাজার গড়ে উঠেছে। এ অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া সুপারি চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় ফলনও বাড়ছে।
প্রায় প্রতিটি বাড়ির আঙিনা, ঝোপঝাড়, পুকুরপাড়, রাস্তার ধার সব জায়গায় সুপারি গাছ দেখা যায়। একবার লাগালে দীর্ঘদিন ফল দিয়ে থাকে এ গাছ। আর ব্যবসায়ীরা এ সুপারি কিনে তা মাটিতে পুঁতে রাখেন বা পানিতে ভিজিয়ে রাখেন। পরে পচানো ওই সুপারি বিক্রি করেন প্রায় দেড়গুণ দামে। এর নাম হচ্ছে ‘মজা সুপারি।
কৃষকরা জানান, চৈত্র, বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ- এ তিন মাসে গাছে সুপারি পাকতে শুরু করে। অপরদিকে সুপারি গাছে নতুন করে ফুল ও ফল আসা শুরু হয়। বসতবাড়ির আশপাশে এবং উঁচু জমিতে চারা লাগানোর আড়াই থেকে তিন বছরের মধ্যেই ফল দিতে শুরু করে সুপারির গাছ।
বছরে এক-দু’বার গোবর সার আর পানির সেচ দেয়া ছাড়া আর তেমন কোনো বাড়তি পরিচর্যা করা লাগে না। অনেক ব্যবসায়ী বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে সুপারি কিনে তা মাটিতে পুঁতে রাখেন বা পানিতে ভিজিয়ে রাখেন। পরে পানিতে পচানো ওই সুপারি শ্রাবণ-ভাদ্র মাসে বিক্রি করেন দেড়গুণ দামে।
রংপুরের পীরগাছা উপজেলার পারুল ইউনিয়নের সফর উদ্দিন খান জানান, আমার জমির আইল, বাড়ির আশপাশে প্রায় শতাধিক সুপারি গাছ আছে।
প্রতি বছরই গাছে প্রচুর পরিমাণে সুপারি ধরে। খাওয়ার জন্য রেখে পাইকারদের কাছে বিক্রি করে দেই। আয় হয় বেশ ভালো। সুপারি গাছ একবার লাগালে ১০-১৫ বছর ফল পাওয়া যায়। চাহিদা ভালো থাকায় সুপারি অধিক লাভে দ্রুত বিক্রি হয়। ছায়াযুক্ত জায়গাতেও সুপারি গাছ বড় হয়।
রংপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ওবায়দুর রহমান মণ্ডল জানান, রংপুরের আবহাওয়া ও মাটি সুপারি চাষের জন্য বেশ উপযোগী। এছাড়াও সুপারি চাষাবাদে অনেক শিক্ষিত মানুষও এগিয়ে আসছে এবং যথাসময়ে গাছের পরিচর্যা করছেন। এতেও উৎপাদন বাড়ছে। আশা করি ফলন আরও ভালো হবে।