নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: নাগেশ্বরীতে শরতে কাশফুলের শুভ্রতায় প্রকৃতি সেজেছে এক অনন্য সাজে। প্রতিদিন স্নিগ্ধ বিকেলে সব বয়সী সৌন্দর্য্য পিপাসুদের ভীর তাই দুধকুমারের বিস্তৃর্ণ চরাঞ্চলে।
উপজেলার বামনডাঙ্গায় দুধকুমারের তীরে কয়েকদিন আগের সেই বিস্তৃর্ণ বালুচর এখন ঢেকে গেছে কাঁশবনে। মৃদু বাতাসে শরতের স্নিগ্ধ বিকেলে শুভ্রতায় দোল খাচ্ছে কাঁশফুল। চোখ যতদুরে যায় ততদুর পর্যন্ত শুধু কাঁশবন আর কাঁশফুল। বিমোহিত ও আচ্ছন্ন হয়ে যায় মানুষ দিগন্তছোঁয়া কাঁশফুলের এ মনভুলানো সৌন্দর্য্য।
কোন গন্ধ নেই, সাজানো যায় না ফুলদানিতেও। ইচ্ছে করলেও মালা গাঁথা যায় না, পড়া যায় না খোপায়। তারপরেও অপরুপ সৌন্দর্যে অনাবিল আকর্ষণে কাছে টানে কাঁশফুল। মন জয় করে। আচ্ছন্ন করে রাখে মানুষকে।
তাই সৌন্দর্য্য উপভোগে ভীড় বাড়ে দুধকুমারের বিস্তৃর্ণ চারাঞ্চলের কাঁশবনে। সুর্যের আলো মিলিয়ে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার আগ পর্যন্ত সৌন্দর্য্য পিপাসুদের ভীর থাকে এখানে। কেউ শুভ্রতাকে ছুয়ে দেখে, কেউ অবাক বিষ্ময়ে তাকিয়ে থাকে। কেউ কেউ এ স্মৃতি ধরে রাখতে ফটোসেশন করে। প্রতিদিন এ চিত্র লেগেই আছে।
এদিনও সেখানেই দেখা একদল শিশু-কিশোরের। অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী বামনডাঙ্গার তেলিয়ানীকুটির মিলন, কলেজ শিক্ষার্থী মিন্টু, আব্দুল্লাহ, স্বপন, স্কুল শিক্ষার্থী পৌরসভার বলদিটারীর বাবু, আইনুল, সানোয়ার, নেওয়াশীর মমিনুল, সাখাওয়াত, জুয়েলসহ অনেকেই গেছে কাঁশফুলের সৌন্দর্য্য উপভোগে।
কেউ কেউ দৌড়ে ঢুকে পড়ছে কাঁশবনে। যেন তারা কাঁশফুলের অভয়ারণ্যে মিশে একাকার হয়ে যেতে চায। অন্তরে প্রকৃতির সতেজতা ফেরাতে শ্বেত রঙ্গে কাঁশফুল ছুয়ে ছুয়ে এগিয়ে যাচ্ছে কেউ কেউ। যেতেই মন চাচ্ছে না কোনভাবে।
পরিবর্তনের পালাবদলে শরৎ আসে ষড়ঋতুর বাংলাদেশে। বর্ষার পরেই এর আগমন। নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা ও কাঁশফুলের শুভ্রতা নিয়েই হাজির হয ঋতুর রানী শরৎ। সে সময় বড্ড অবহেলায় কাঁশফুল ফোটে নদীর ধার অথবা তীরবর্তী বিস্তৃর্ণ বালুচরে।
কালের বিবর্তনে গ্রামীণ দৃশ্যপট থেকে হারিয়ে যাচ্ছে শরতের কাশফুল। আগে ঘরের ছাউনি, বেড়ায় কাঁশ এর ব্যবহার হলে চাহিদা ছিল ব্যাপক। আধুনিকতার ছোয়ায় ইট, সিমেন্ট, টিনের ব্যাবহার জনপ্রিয়তা পাওয়ায় কাঁশ এর চাহিদা কমেছে।
তাই জমির মালিকরা কাঁশবন তুলে সেখানে অন্যান্য চাষাবাদ করে। ফলে কমতে কমতে এখন সামান্যই অবশিষ্ট আছে। যতটুকু আছে ততটুকুতেই সৌন্দর্য্য ছড়াচ্ছে কাঁশফুল।