বিশ্বকাপে রেকর্ড গড়ে জয় পাকিস্তানের

বগুড়া নিউজ ২৪ঃ ভারত ম্যাচের রিপ্লে দেখিয়ে দুর্দান্ত জয় তুলে নিয়েছে পাকিস্তান। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভারতের মতো ২ রানে ৩ উইকেট পড়েনি পাকিস্তানের। তবে শ্রীলঙ্কার ৩৪৪ রান তাড়া করতে নেমে ৩৭ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোও সহজ নয়। জোড়া সেঞ্চুরিতে সেটাই করেছে পাকিস্তান।

বিশ্বকাপ ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে ৬ উইকেটে জয়ের রেকর্ড গড়েছে।

এর আগে ম্যাচে টসে জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় শ্রীলঙ্কা। শুরুতে ওপেনার কুশল পেরেরার উইকেট হারালেও পরে পাথুম নিসাঙ্কা এবং কুশল মেন্ডিসের ব্যাটে চড়ে আগাতে থাকে লঙ্কানদের ইনিংস। নিসাঙ্কা ফিফটি হাঁকিয়ে সাজঘরে ফিরে গেলেও কুশলকে ফেরানো যায়নি। তার মারমুখি ব্যাটিংয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ছিলেন পাক বোলাররা।

আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে দারুণ এক সেঞ্চুরি হাঁকান কুশল। পরে তার সাথে যোগ দেন সাদিরা সামারাবিক্রমাও। দুজনে মিলে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন দলের ইনিংস। ৭৭ বলে ১২২ রানের অনবদ্য এক ইনিংস খেলে আউট হন কুশল। পরে লঙ্কানদের ইনিংসকে টেনেছেন সাদিরা। সময়ের সাথে সাথে ব্যাটের ধার বাড়িয়েছেন তিনি, রান তুলেছেন দ্রুত গতিতে। শেষে সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন তিনিও। ইনিংসের একদম শেষ দিকে আউট হওয়ার আগে ৮৯ বলে ১০৮ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস খেলেন সাদিরা। নির্ধারিত ৫০ ওভারের খেলা শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৪৪ রানের পাহাড়সম সংগ্রহ দাঁড় করাতে সক্ষম হয় শ্রীলঙ্কা।

পাকিস্তানের হয়ে ৪ উইকেট শিকার করেন হাসান আলী। এছাড়া ২ উইকেট নেন হারিস রউফ। ১টি করে উইকেট নেন শাদাব খান, শাহীন শাহ আফ্রিদি এবং মোহাম্মদ নওয়াজ।

জবাব দিতে নেমে শুরুতে কিছুটা হোঁচট খায় পাকিস্তান। ৩৭ রানের মধ্যে সাজঘরে ফিরে যান ওপেনার ইমাম উল হক এবং তিনে নামা বাবর আজম। ১২ বলে ১২ রান করেন ইমাম। অন্যদিকে ১৫ বলে ১০ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে যান বাবর। বড় রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই চাপে পড়ে যায় পাকিস্তান।

সেই খাদের কিনারা থেকে দলকে উদ্ধার করার অভিযানে নামেন টিকে থাকা ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিক এবং মোহাম্মদ রিজওয়ান। সাবলীল ব্যাটিংয়ে প্রতিরোধ গড়তে থাকেন দুজন। একটু একটু করে সামাল দিতে থাকেন শুরুর খারাপ পরিস্থিতি।

শফিক এবং রিজওয়ানের ব্যাটে চড়ে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে পাকিস্তান। পরিস্থিতি বুঝে সময়ের সাথে সাথে রানের গতি বাড়াতে থাকেন শফিক এবং রিজওয়ান। অল্প সময়ের ব্যবধানে দুজনেই ছুঁয়েছেন ফিফটি। দুজনের জুটি ছাড়িয়ে যায় ১০০ রানের কোটাও। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ক্রমেই মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন রিজওয়ান এবং শফিক। তাদের ব্যাটে ভর করে জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে পাকিস্তান।

অসাধারণ ব্যাটিংয়ে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারটাও ছুঁয়ে ফেলেন শফিক। দারুণ এক সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ১০৩ বলে ১১৩ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস খেলেন শফিক। আউট হন দলের ২১৩ রানের মাথায়। শফিক এবং রিজওয়ানের জুটি থেকে রান আসে ১৭৬।

শফিকের আউটের পর দলকে জেতানোর দায়িত্ব নেন রিজওয়ান। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে দলকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে যেতে থাকেন তিনি। হাঁকান অসাধারণ এক সেঞ্চুরিও। আরেক প্রান্তে সাউদ শাকিলও থিতু হয়ে যান। দুজনে মিলে পাকিস্তানকে জয়ের খুবই কাছে নিয়ে যেতে থাকেন।

দলীয় ৩০৮ রানের মাথায় থামেন শাকিল। ৩০ বলে ৩১ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। পরে ইফতিখার আহমেদকে সাথে নিয়ে বাকি কাজটা সেরেছেন রিজওয়ান। ১০ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটের রেকর্ডগড়া জয়ের দেখা পায় পাকিস্তান। ১২১ বলে ১৩১ রানের অনবদ্য এক ইনিংস খেলে শেষপর্যন্ত টিকে ছিলেন রিজওয়ান। অন্যদিকে ১০ বলে ২২ রানের ক্যামিও খেলে অপরাজিত ছিলেন ইফতিখার। দুর্দান্ত এক জয়ের দেখা পায় পাকিস্তান। বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করার রেকর্ড গড়ে জিতেছে বাবর আজমের দল।

শ্রীলঙ্কার হয়ে ২ উইকেট শিকার করেন দিলশান মাদুশাঙ্কা। এছাড়া ১টি করে উইকেট নেন মাথিশা পাথিরানা এবং মাহিশ থিকশানা।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ