মুরগি পালন ছেড়ে দিচ্ছেন রংপুরের প্রান্তিক খামারিরা

রংপুর জেলা প্রতিনিধি:  রংপুরে প্রান্তিক পর্যায়ে মুরগি খামারির সংখ্যা দিন দিন কমে আসছে। খাবার ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি, বিরূপ আবহাওয়াসহ নানা কারণে লোকসানের মুখে পড়ে মুরগি পালন ছেড়ে দিচ্ছেন খামারিরা। বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে বিকল্প পেশায় ঝুঁকছেন অনেকে।

জানা গেছে, ৯০ দশকের শেষ দিকে রংপুরে ছোট আকারে শুরু হয় মুরগি পালন। এরপর ২০০৪-০৫ সালের দিকে ব্যাপক হারে খামারভিত্তিক মুরগি পালন শুরু হয়।  ২০০৭ সালে মহামারি হিসেবে দেখা দেয় অ্যাভিয়াম ফ্লু। যার প্রভাব পড়ে পোলট্রি শিল্পে। ধীরে ধীরে কমতে থাকে খামার। ২০১৯ সাল থেকে পোলট্রি খাদ্যের ধারাবাহিক মূল্যবৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় এ শিল্পে নেমে আসে বিপর্যয়।

রংপুর জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রমতে, জেলায় নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত লেয়ার মুরগির খামারের সংখ্যা ৬৫৩। তবে জেলা পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন সূত্রমতে, বর্তমানে প্রান্তিক পর্যায়ে প্রায় ৫০টি লেয়ার মুরগির খামার চালু রয়েছে। নগরীর নজিরের হাট এলাকার খামারি ফিরোজ মিয়া জানান, এক বছর আগে খামার পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। সেইসময় খামারে মুরগির সংখ্যা ছিল প্রায় সাড়ে তিন হাজার। মুরগির খাবারসহ বিভিন্ন উপকরণের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বাধ্য হয়েছেন আপাতত খামার বন্ধ করতে।

রংপুর জেলা পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আরমানুর রহমান লিংকন জানান, ১৯৯৬ সাল থেকে মুরগির ডিম উৎপাদন করছেন। বর্তমানে মুরগির খাবারের দাম প্রকারভেদে শতকরা ৪৫ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে। এক বছর আগে ৫০ কেজির খাবারের বস্তার দাম ছিল দুই হাজার থেকে দুই হাজার ২০০ টাকা। বর্তমানে সেটি বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে তিন হাজার ২০০ থেকে তিন হাজার ৪০০ টাকা। প্রান্তিক খামারিদের এখন একটি ডিম উৎপাদন করতে খরচ হচ্ছে ১০ টাকা ২০ পয়সা। তবে করপোরেট কোম্পানিগুলো একসঙ্গে অনেক ডিম উৎপাদন করায় তাদের খরচ তুলনামূলক কম।

রংপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এনামুল হক বলেন, জেলায় নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত লেয়ার মুরগির খামারের সংখ্যা হচ্ছে ৬৫৩টি। তালিকাভুক্ত হলেও খামারগুলো নিয়মিত চালু থাকে না।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ