পতেঙ্গা সৈকত বন্ধ ঘোষণা, যান চলাচলে বিশেষ নির্দেশনা

চট্রগ্রাম প্রতিনিধিঃ চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে নির্মিত ‘শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’ উদ্বোধন হচ্ছে ২৮ অক্টোবর। এদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মেগা এ প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। তার আগমন উপলক্ষ্যে ২৭ অক্টোবর থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)।

একই সঙ্গে ফৌজদারহাট-পতেঙ্গা আউটার রিং রোডে ২৮ অক্টোবর ভোর ৫টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত যানচলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে। এ সময়ে সড়কটিতে চলাচলকারী গাড়িগুলোকে বিকল্প সিটি গেইট-একে খান-সাগরিকা রোড-ক্রসিং-বড়পুল-নিমতলা হয়ে চলাচল করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া, একই সময়ে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগামী লোকজনকে সিমেন্ট ক্রসিং থেকে বোট ক্লাব হয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার স্পিনা রানী প্রামাণিক ঢাকা পোস্টকে জানান, ২৮ অক্টোবর ভোর ৫টা থেকে সিমেন্ট ক্রসিং থেকে কাঠগড় হয়ে কোনো যানবাহন সি বিচ বা এয়ারপোর্টে যেতে পারবে না। আবার এয়ারপোর্ট মোড় থেকে কোনো গাড়ি বাটারফ্লাই পার্ক হয়ে টানেল ও সি বিচ এলাকায় যাওয়া যাবে না।

ফৌজদারহাট-পতেঙ্গা আউটার রিং রোডে ২৮ অক্টোবর ভোর ৫টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত যানচলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে। এ সময়ে সড়কটিতে চলাচলকারী গাড়িগুলোকে বিকল্প সিটি গেইট-একে খান-সাগরিকা রোড ক্রসিং-বড়পুল-নিমতলা হয়ে চলাচল করতে বলা হয়েছে। একই সময়ে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগামী লোকজনকে সিমেন্ট ক্রসিং থেকে বোট ক্লাব হয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে

এদিকে, টানেল উদ্বোধন ও প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষ্যে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঝে এক ধরনের উৎসব বিরাজ করছে। নেতারা এ দিন প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় সর্বোচ্চ উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চান। এ কারণে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি ও প্রচারণা।

জানা গেছে, কর্ণফুলী নদীর দুই তীর সংযুক্ত করে চীনের সাংহাই শহরের আদলে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ গড়ে তোলার লক্ষ্যে টানেলটি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিন পিং টানেল প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম টানেল টিউবের বোরিং কাজের উদ্বোধন করেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, টানেল দিয়ে মাত্র তিন থেকে সাড়ে তিন মিনিটের মধ্যে পতেঙ্গা থেকে আনোয়ারা এবং একইভাবে আনোয়ারা থেকে পতেঙ্গায় পৌঁছানো যাবে। গর্বের এ প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে চট্টগ্রামের সঙ্গে কক্সবাজারের যোগাযোগ সহজ হবে। দক্ষিণ চট্টগ্রামে গড়ে উঠবে নতুন নতুন শিল্পকারখানা।

নির্মাণের আগে করা সমীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী, টানেল চালুর পর এর ভেতর দিয়ে বছরে ৬৩ লাখ গাড়ি চলাচল করতে পারবে। সেই হিসাবে দিনে চলতে পারবে ১৭ হাজার ২৬০টি গাড়ি। ২০২৫ সাল নাগাদ টানেল দিয়ে গড়ে প্রতিদিন ২৮ হাজার ৩০৫টি যানবাহন চলাচল করবে। যার মধ্যে অর্ধেক থাকবে পণ্যবাহী পরিবহন। ২০৩০ সাল নাগাদ প্রতিদিন গড়ে ৩৭ হাজার ৯৪৬টি এবং ২০৬৭ সাল নাগাদ এক লাখ ৬২ হাজার যানবাহন চলাচলের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা আছে।

টানেল নির্মাণে মোট ব্যয় ধরা হয় ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে চার হাজার ৪৬১ কোটি টাকা। বাকি পাঁচ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা দিচ্ছে চীন সরকার। চীনের এক্সিম ব্যাংক ২ শতাংশ হারে ২০ বছর মেয়াদি এ ঋণ দিয়েছে। চীনের কমিউনিকেশন ও কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড (সিসিসিসি) টানেল নির্মাণের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ