ভারত-শ্রীলঙ্কার লড়াই দেখে যেকোনো ক্রিকেটভক্তের মাথায় দুটো বিষয় আসতে পারে! হয় এটি কোনো ম্যাচের হাইলাইটস কিংবা বিশ্বকাপ নয়– টিভি পর্দায় চলছে এশিয়া কাপের ফাইনাল! ঠিক তাই, কিছুদিন আগে ঘরের মাঠে হওয়া ফাইনালে মাত্র ৫০ রানে অলআউটের লজ্জায় ডুবে লঙ্কানরা। এবার বিশ্বকাপ মঞ্চেও তারা একই গণ্ডিতেই আটকে গেছে। একেবারে অবিশ্বাস্য! ভারতের দেওয়া পাহাড়সমান ৩৫৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বিশ্বকাপের ইতিহাসে তৃতীয় সর্বনিম্ন রানের লজ্জার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ১৯৯৬ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। ভারতীয় পেসারদের বোলিং তোপে ২০তম ওভারে মাত্র ৫৫ রানেই গুটিয়ে যায় লঙ্কানরা। ফলে ৩০২ রানের বিশাল ব্যবধানে লজ্জার হারের রেকর্ড গড়ল কুশল মেন্ডিসের দল। যা বিশ্বকাপের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যবধানে হারের রেকর্ড। টানা সাত জয়ে প্রথম দল হিসেবে শেষ চার নিশ্চিত করেছে টিম ইন্ডিয়া।
বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইনিংসের প্রথম বলেই উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। জাস্প্রিত বুমরার করা প্রথম বলেই লেগ বি ফোরের ফাঁদে পড়েন পাথুম নিসাঙ্কা। এরপর যেন রীতিমত উইকেট পরার হিড়িক পড়ে লঙ্কানদের। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে মাত্র ৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় ম্যাথিউসরা।
মোহাম্মদ সিরাজের বোলিং নৈপুণ্যে কিছুদিন আগে এশিয়া কাপের ফাইনালে মাত্র ৫০ রানে অলআউট হয়েছিল শ্রীলঙ্কা। আজও সেই স্মৃতি পুনরায় লঙ্কানদের মনে করিয়ে দেয় মোহাম্মদ শামি। এই ডানহাতি পেসারের বিধ্বংসী বোলিং তোপে মাত্র ৫৫ রানেই অলআউট হয়ে যায় মেন্ডিসের দল। শামি নেন ৫ উইকেট। এর আগে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারে দিলশান মাদুশঙ্কার বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরেন ওপেনার রোহিত শর্মা। এরপর দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে দলের হাল ধরেন বিরাট কোহলি ও গুভমান গিল।
দুইজনেই দেখেশুনে মিডেল ওভারে খেলতে থাকেন। লঙ্কান বোলারদের উপর চড়াও হয়ে দুজনে নিজেদের অর্ধশতক তুলে নেন। ২৫তম ওভার শেষে এই দুই টপ অর্ডার ব্যাটারই তাদের শতকের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ৩০তম ওভারে ৮ রানের আক্ষেপ নিয়ে ব্যক্তিগত ৯২ রানে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরেন গিল। বিশ্বকাপে আজ নিজেদের সপ্তম ম্যাচ খেলতে নামার আগে ওয়ানডেতে কোহলির শতকের সংখ্যা ছিল ৪৮টি। ওয়াংখেড়েতে লঙ্কানদের বিপক্ষে অর্ধশতক হাঁকিয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বোচ্চ শতক হাঁকানোর রেকর্ডের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন কোহলি। তবে ধর্মাশালায় নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৯৫ রানে আউট হওয়া এই তারকার ভাগ্যে যেন আজও সহায় হয়নি। ব্যক্তিগত ৮৮ রান করে আক্ষেপকে সঙ্গী করে মাদুশঙ্কার বলে সাজঘরে ফিরেন কোহলি। গিলের পর শতক বঞ্চিত হন ভারতের এই সেরা ব্যাটার। শেষ দিকে আইয়ারের ৫৬ বলে ৮২ রানের বিধ্বংসী ইনিংসে বড় সংগ্রহের পথে এগিয়ে যায় ভারত। শেষ দিকে জাদেজার ২৪ বলে ৩৫ রানে ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩৫৭ রানের পুঁজি পায় ভারত। শ্রীলঙ্কার হয়ে ৫টি উইকেট নিয়ে এবারের আসরের সর্বোচ্চ (১৮) উইকেট শিকারি বনে গেছেন দিলশান মাদুশঙ্কা।