বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর গৌরবের ৫৫ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী

“সংস্কৃতির সংগ্রামে দ্রোহের দীপ্তি – মুক্তির লড়াইয়ে অজেয় শক্তি ” শ্লোগান কে ধারণ করে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী’ বগুড়া জেলা সংসদ  ৫৫ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন করে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন উদীচী বগুড়া জেলা সংসদে’র সভাপতি বীর-মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদুস সোবহান মিন্নু এবং সঞ্চালনা করেন উদীচী বগুড়া জেলা সংসদে’র সাধারণ সম্পাদক শাহীদুর রহমান বিপ্লব।
জাতীয় সঙ্গীত এবং দলীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর সাধারণ সভা শুরু হয়। সাধারণ সম্পাদক রিপোর্ট পাঠ করেন সঙ্গীত বিভাগের সম্পাদক কামরুন মুনিরা ডালিয়া, সাধারণ সভায় শোক প্রস্তাব পেশ করেন উদীচী বগুড়ার সহ-সাধারণ সম্পাদক আরিফুল হক খান রনিক, অর্থ রিপোর্ট  পেশ করেন উদীচী বগুড়া’র কোষাধ্যক্ষ সুজন সরকার।
উক্ত সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি বগুড়া জেলা কমিটি’র সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জিন্নাতুল ইসলাম, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী কেন্দ্রীয় সংসদে’র কোষাধ্যক্ষ বিমল মজুমদার, সিপিবি বগুড়া’র সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ফরিদ, উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সঙ্গীত বিভাগের সম্পাদক সুরাইয়া পারভিন প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন পর্ষদ এর আহ্বায়ক এ্যাডভোকেট লুৎফর রহমান।
সভায় বক্তারা বলেন, “নিপীড়িত মানুষের গান গাইবার অঙ্গীকার নিয়ে, মানুষের মুক্তির জন্য, ন্যায় ও অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সোচ্চার হওয়ার লক্ষ্যে একটি অসাম্প্রদায়িক, শোষণমুক্ত, বৈষম্যহীন, সাম্যবাদী সমাজ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে ১৯৬৮ সালের ২৯ অক্টোবর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। এ দেশের বয়সের চেয়েও পুরনো এবং এখনো সক্রিয় এমন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন হাতে গোনা, যার মধ্যে অন্যতম উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।  ‘উদীচী’ শব্দের অর্থ উত্তর দিক। প্রতিষ্ঠাতা সাহিত্যিক, সাংবাদিক সত্যেন সেনের স্বপ্ন ছিল, সব সময় উত্তরের আকাশে থাকা ধ্রুবতারার মতোই অবিচল থেকে জাতিকে পথ দেখিয়ে যাবে এই সংগঠন। দেশ ও সমাজের নানা উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে অর্ধশতকের বেশি সময় ধরে সেই চেষ্টা চালিয়ে গেছে উদীচী। উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, একাত্তরের অসহযোগ আন্দোলন তথা মুক্তিযুদ্ধ ও নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা ছিল উদীচীর। জাতীয় জীবনে অবদানের জন্য সংগঠন হিসেবে পেয়েছে একুশে পদক। “
বক্তারা আরো বলেন, ‘কৃষক, শ্রমিক, মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার নিয়ে উদীচীর জন্ম হয়েছিল। এখন যখন আমরা উদীচীর ৫৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করছি তখন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও চরম রাজনৈতিক দুঃশাসনের কবলে মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে। কথা বলা থেকে শুরু করে মানুষের প্রতিটি অধিকার বিঘ্নিত হচ্ছে। জন্মলগ্ন থেকেই সমাজ জীবনে এ সমস্ত দুঃশাসন থেকে মুক্তি পেতে লড়াই-সংগ্রাম করে আসছে উদীচী। বারবার মৌলবাদী অপশক্তির হামলায় রক্তাক্ত হয়েও সেই লড়াই থেকে সরে আসেননি উদীচীর শিল্পীরা, বরং নতুন উদ্যমে আরো নতুন সাহস সঞ্চার করে এগিয়ে গেছেন অভীষ্ট লক্ষ্যের দিকে। উদীচীর শিল্পীদের কন্ঠে বারবার ধ্বনিত হয়েছে সেই লড়াইয়ের গান। আগামীতেও রাজপথে- গ্রামেগঞ্জে বারবার ধ্বনিত হবে আপোষহীন সংগ্রামের গান, লড়াইয়ের গান, যুদ্ধের গান।অন্ধকারের মাঝে উদীচী আলো হাতে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে যাবে।’-
Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ