বগুড়া নিউজ ২৪: ইরানের কুদস বাহিনীর প্রধান জেনারেল ইসমাইল কায়ানি বলেছেন, হামাসকে সহায়তা দিতে যা যা করা দরকার তাই করবে ইরান। তিনি দাবি করছেন, গাজায় একটি অবিস্মরণীয় বিজয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে হামাস। গাজাভিত্তিক হামাসের সশস্ত্র শাখা ইজ্জুদ্দিন আল-কাসাম ব্রিগেডের প্রধানের কাছে লেখা এক চিঠিতে এই প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন তিনি।
শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) রুশ সংবাদমাধ্যম আরটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জেনারেল কায়ানি বলেছেন, তেহরান ও এর মিত্ররা গাজা ও এর বীর জনগণের ওপর বর্বর শত্রুদের ও তাদের পৃষ্ঠপোষকদের বিজয়ী হতে দেবে না। তিনি আরও বলেন, ‘এই ঐতিহাসিক লড়াইয়ে আমাদের যা করা প্রয়োজন তাই করব।’
ইরানি এই জেনারেল বলেন, ‘হামাস প্রমাণ করেছে যে, তারা সাংগঠনিক সক্ষমতা বজায় রেখে নতুন উদ্যোগ ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে গাজায় প্রতিপক্ষকে আটকে দিতে সক্ষম।’
ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা ইরনা গতকাল বৃহস্পতিবার এই চিঠি প্রকাশ করে। জেনারেল কায়ানির এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এলো, যার ঠিক এক দিন আগে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল—গাজা যুদ্ধে ইরান সরাসরি জড়াবে না। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আল খামেনি হামাসকে সরাসরি বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তবে তিনি হামাসের ওপর ইরানের নৈতিক ও রাজনৈতিক সমর্থন রয়েছে বলে দৃঢ়ভাবে উল্লেখ করেন।
তবে গতকাল বৃহস্পতিবার হামাসের শীর্ষস্থানীয় নেতা ওসামা হামাদান রয়টার্সের এই প্রতিবেদনকে উড়িয়ে দেন। তিনি ইরানি সংবাদ সংস্থা ইরনাকে বলেন, ‘তথ্য প্রকাশ করার পরিবর্তে এই সংবাদ সংস্থাটি মূল্যহীন মিথ্যা প্রকাশ করছে।’ হামাদান আরও বলেন, এ ধরনের প্রতিবেদন মূলত হামাস ও এর মিত্রদের ইমেজ নষ্ট করার লক্ষ্যেই করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, পবিত্র আল-আকসা মসজিদের মর্যাদাহানি ও ফিলিস্তিনিদের ওপর অব্যাহত হত্যাযজ্ঞ, নির্যাতন ও নিপীড়নের জবাবে গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে আকস্মিক অভিযান চালায় ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাস।
ইসরাইলের দুর্ধর্ষ গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর চোখ ফাঁকি দিয়ে গাজা সীমান্ত পেরিয়ে স্থল, সমুদ্র ও আকাশ-তিন দিক দিয়ে চালানো হয় এই হামলা। যাতে তিন শতাধিক ইসরাইলি সেনাসহ ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয়। সেই সঙ্গে দুই শতাধিক ইসরাইলি নাগরিককে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় হামাস।
এরপর থেকেই গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজা উপত্যকায় এক মাসের বেশি সময় ধরে নির্বিচার হামলা চালিয়ে এ পর্যন্ত সাড়ে ১১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে চরমপন্থি ইসরায়েল। ইহুদিবাদি দেশটির হাতে এ পর্যন্ত ৪৭০০ শিশু প্রাণ হারিয়েছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, নিহতের এই সংখ্যা নির্ভরযোগ্য।