শপথ নিয়েই ভারতকে সৈন্য প্রত্যাহারের আহ্বান জানালেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট

শপথ গ্রহণের একদিন পরেই মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনাদের প্রত্যাহার করে নিতে আনুষ্ঠানিকভাবে আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জু। খবরে এনডিটিভি।

শনিবার (১৮ নভেম্বর) তার অফিস থেকে এ কথা জানানো হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো জানিয়েছে, এ নিয়ে দুই দেশের সরকারের মধ্যে সমাধান প্রক্রিয়ার আলোচনা চলছে।

ঘোষণায় বলা হয়েছে, দিনের শুরুতে ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজুর সঙ্গে প্রেসিডেন্টের অফিসে সাক্ষাৎ হয় মুইজ্জুর। এ সময় তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতকে মালদ্বীপ থেকে তার সেনাদের প্রত্যাহার করে নেয়ার অনুরোধ জানান। প্রেসিডেন্টের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মালদ্বীপ গিয়েছিলেন কিরেন রিজিজু।

উল্লেখ্য, মালদ্বীপে ভারতের প্রায় ৭০ জন সেনা সদস্য, রাডার এবং নজরদারি বিমান আছে। দেশটির এক্সক্লুসিভ অর্থনৈতিক জোনে টহলে সহায়তা করে ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ।

ভারত সরকারের সূত্র বলেছে, মন্ত্রী রিজিজু সাক্ষাৎ করেন মুইজ্জুর সঙ্গে। এ সময় মালদ্বীপে থাকা ভারতীয় সেনা সদস্যদের বিষয় উত্থাপন করেন প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু। চিকিৎসায় এবং মাদক পাচারবিরোধী কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত হয় বিমানগুলো।

মালদ্বীপের নাগরিকদের চিকিৎসার জন্য স্থানান্তরে ভারতীয় হেলিকপ্টার ও বিমানের অবদানের কথা স্বীকার করেন প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু। পর্যটকরা যখন প্রত্যন্ত দ্বীপে অবস্থান করেন তখন এসব ব্যবস্থা তাদের আস্থার কেন্দ্রে থাকে।

বিদেশি সেনাদেরকে দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপ থেকে প্রত্যাহার ছিল নতুন প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুর নির্বাচনী অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি। শুক্রবার শপথ নেয়ার পর জাতির উদ্দেশে দেয়া প্রথম ভাষণে তিনি সেকথারই পুনরাবৃত্তি করেছেন। ভারতের নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, মালদ্বীপে দেশটির কোনো বিদেশি সেনা সদস্য থাকবে না। যখন আমাদের নিজেদের নিরাপত্তার বিষয় আসে, তখন আমিই এর রেড লাইন বা চূড়ান্ত সীমারেখা নির্ধারণ করব। অন্য দেশগুলোর রেড লাইনের প্রতিও মালদ্বীপের শ্রদ্ধা থাকবে।

প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুকে তীব্র চীনপন্থি হিসেবে দেখা হয়। এ সপ্তাহের শুরুর দিকে বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিনি বলেছেন, ভারতের সেনাদের স্থানে চীনা সেনা এনে আঞ্চলিক ভারসাম্য নষ্ট করার মানসিকতা তার নেই। ভূরাজনৈতিক বিরোধে জড়িয়ে পড়ার ক্ষেত্রে মালদ্বীপ খুব ছোট্ট একটি দেশ। এ নিয়ে মালদ্বীপের পররাষ্ট্রনীতিকে জড়িয়ে ফেলতে আমার খুব আগ্রহ নেই।

তবে ভারতীয় সেনা প্রত্যাহার নিয়ে যেদিন মালদ্বীপের ঘোষণা এসেছে সেদিনই প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বিশেষ দূত শেন ইকিন। মুইজ্জুর অফিস থেকে দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মিস ইকিন প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুর সফল অভিষেকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। আস্থা প্রকাশ করেছেন যে, তার প্রেসিডেন্সির মেয়াদে দুই দেশের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে।

এতে আরও বলা হয়, সাক্ষাতে চীন সরকারকে বছরের পর বছর মালদ্বীপের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু। তিনি আরও বলেছেন, এদিনটি দুই দেশের মধ্যে অভিন্ন ঐতিহাসিক বন্ধুত্বের নতুন একটি অধ্যায়ের সূচনা হলো। পারস্পরিক স্বার্থের ক্ষেত্রগুলোতে অব্যাহত সহযোগিতার আস্থা প্রকাশ করেন তিনি। এর মধ্যে আছে আঞ্চলিক সহযোগিতা, অর্থনৈতিক সহযোগিতা, জনগণের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ