আসামি ইনোসেন্ট, অপরাধী হলে চোখ দেখেই বুঝতাম : হাইকোর্ট

বগুড়া নিউজ ২৪: কিশোরী অপহরণের একটি মামলায় অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে আট সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে।

বুধবার (২২ নভেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. বশির উল্লার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

জামিন মঞ্জুর করার সময় আদালত বলেন, আমরা এই ছেলের সঙ্গে ওয়ান টু ওয়ান কথা বলে জানতে পেরেছি, সে সত্যিকার কোনো দোষ করেনি। নথি দেখে এবং ছেলের সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পেরেছি, সে ইনোসেন্ট। সেরকম কিছু (অপরাধী) হলে আমরা চোখের দিকে তাকিয়েই বুঝতে পারতাম। অপরাধীদের কথা থাকে অন্যরকম।

কিশোরকে আদালত প্রশ্ন করেন, তোমার বাবা এলাকায় ঘুরে ঘুরে হাঁস-মুরগি বিক্রি করেন। তুমি ভালো ছেলে। লেখাপড়া করতে চাও? জবাবে শিক্ষার্থী বলে, হুম। তখন আদালত বলেন, তোমার সামনে অনেক সুযোগ। লেখাপড়া করে বড় হতে হবে। আশা করি তুমিও লেখাপড়া শিখবে। লেখাপড়া শিখে যদি বড় অফিসার হও, আর আমরা যদি বেঁচে থাকি, আশা করি তুমি আমাদের সঙ্গে দেখা করতে আসবে। আমরা তোমার জন্য দোয়া করি।

এদিন দীর্ঘসময় ধরে ওই শিক্ষার্থী, শিক্ষার্থীর বাবা ও চাচার বক্তব্য শোনেন আদালত। প্রাথমিকভাবে আদালতের কাছে মনে হয়েছিল, ওই কিশোর অপরাধী। পুরো শুনানিকালে তাকে দাঁড় করিয়ে রাখেন আদালত। হাইকোর্টের নির্দেশে বিচারিক আদালত থেকে মেয়ে সহপাঠীর জবানবন্দি আনা হয়।

জবানবন্দি পড়ে হাইকোর্ট জানান, কিশোর শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আছে বলে তাদের কাছে মনে হয়নি। যে ধরনের অভিযোগ করা হয়েছে, তা উদ্দেশ্যমূলক মনে হয়েছে। পরে পরীক্ষার্থী বিবেচনা করে ওই কিশোরকে ৮ সপ্তাহের আগাম জামিন দেন হাইকোর্ট।

আদালতে শিক্ষার্থীর পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম সোহেল ও অ্যাডভোকেট কাজী আমজাদ হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কে এম মাসুদ রুমী।

এর আগে, গত ১২ নভেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অষ্টম শ্রেণির ওই কিশোর ও তার সহপাঠীদের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন এক কিশোরীর মা।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ