বাড়ছে হামাসের জনপ্রিয়তা, দুশ্চিন্তায় ইসরায়েল!

বগুড়া নিউজ ২৪ঃ বহু বছর ধরে ফিলিস্তিনিদের ওপর চালানো গণহত্যা, নির্যাতন ও দেশ দখলের প্রতিবাদে গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের অভ্যন্তরে নজিরবিহীন হামলা চালায় প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাস। ওই দিন হামাস যোদ্ধাদের হামলায় প্রাণ হারায় এক হাজার ২০০ ইসরায়েলি ও বিভিন্ন দেশের নাগরিক। এছাড়াও আরো ২৪০ জনের বেশি ব্যক্তিকে ইসরায়েল থেকে বন্দি করে গাজায় নিয়ে আসেন হামাস যোদ্ধারা। হামাসের এই কর্মকাণ্ডে হতভম্ব হয়ে যায় ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ।

তবে যুদ্ধ ঘোষণা করে ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় নির্বিচারে বোমা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এরপর ২৮ অক্টোবর শুরু করে স্থলঅভিযান। ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংস হামলায় গাজায় ১৪ হাজার ৮০০’রও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়। এর মধ্যে ১০ হাজারের বেশি নারী ও শিশু। এছাড়াও ৩০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে।

যুদ্ধের এই পর্যায়ে চারদিনের বিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল ও হামাস। শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে এই যুদ্ধবিরতি শুরু হয়।

চুক্তির শর্তানুযায়ী, যুদ্ধবিরতির সময় গাজায় কোনো হামলা এবং কাউকে গ্রেফতার করবে না ইসরায়েলি বাহিনী। প্রতিদিন গাজায় ঢুকতে দেবে ২০০ ত্রাণবাহী ট্রাক। এর মধ্যে থাকবে চারটি গ্যাসের ট্রাক ও এক লাখ ৩০ হাজার লিটার জ্বালানি তেল। চিকিৎসা সরঞ্জামাদিও থাকবে এর আওতায়।

শুধু তাই নয়, ৫০ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস। আর ইসরায়েল কারাগার থেকে মুক্তি দেবে ১৫০ ফিলিস্তিনিকে। আর এই বিষয়টিতেই বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে ইসরায়েল। কারণ ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি মানেই হামাসের জনপ্রিয়তা আরো বেড়ে যাওয়া।

বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলেছেন গাল্ফ স্টাডিজ সেন্টারের পরিচালক এবং কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের সমসাময়িক মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতির অধ্যাপক বিশ্লেষক মাহজুব জাভেইরি।

তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির ঘটনায় হামাসের জনপ্রিয়তার বেড়েই চলেছে। আর এটি ইসরায়েলের জন্য সংকট ও চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সংবাদমাধ্যম ‘আল-জাজিরা’র সাথে সাক্ষাৎকারে জাভেইরি আরো বলেন, যে মুহুর্তে ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলি কারাগার থেকে বেরিয়েছে, যারা তাদের মুক্তির জন্য আলোচনা করেছে তারা প্রকৃতপক্ষে [গাজায়] ‘ক্ষমতায়’র অধিকারী হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, ফিলিস্তিনিদের মুক্তির কারণেই হামাস বারবার ক্ষমতায় এসেছে। [গাজায় বন্দি প্রাক্তন ইসরায়েলি সৈনিক] গিলাদ শালিতের বিনিময়ে এক হাজার ১০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। আর এই এক হাজার ১০০ পরিবার বিশ্বাস করে- এর পিছনে প্রধান ভূমিকা পালন করেছে হামাস।

তিনি উল্লেখ করেন, শুক্রবার যখন ফিলিস্তিনিদের কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয় তখন অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিরা ‘হামাসের পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছিলেন’।

মাহজুব জাভেইরি বলেন, এই বন্দি বিনিময়ের কারণে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ) কোনও সুবিধা পাবে না।

তিনি বলেন, আরো ইসরায়েলি জিম্মির বিনিময়ে আরও ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তির বিষয়টি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের জন্য মেনে নেওয়া কঠিন হবে। যাইহোক, তাদের কাছে আর কোনও বিকল্পও নেই। কারণ দিন শেষে টেবিলে এটিই একমাত্র কার্ড।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ