কঠোর কর্মসূচিতে যাচ্ছে হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশ

বগুড়া নিউজ ২৪: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নেড়েচেড়ে বসেছে দেশের কওমী মাদ্রাসা ভিত্তিক অরাজনৈতিক সংগঠন বলে দাবীদার হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ নামে সংগঠনটি। গত একমাস আগে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ সম্মেলনে সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের বেধে দেয়া আল্টিমেটাম অনুয়ায়ী কারাবন্দী নেতাকর্মীর মুক্তি ও ২০১৩ সাল থেকে অদ্যাবধি তাদের নেতাকর্মীদের নামে দায়েরকৃত সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার না করায় নির্বাচনের আগে সংগঠনের শীর্ষ নেতারা কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

শনিবার (২ ডিসেম্বর) সংগঠনটির প্রচার সম্পাদক মুফতি কিফায়াতুল্লাহ আজহারী গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে উক্ত কর্মসূচির বিষয়টি জানান হেফাজতের কেন্দ্রীয় মহাসচিব আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমান। উক্ত বিবৃতিতে সংগঠনটির আলোচিত নেতা মাওলানা মামুনুল হক ও মুফতি মুনির হুসাইন কাসেমীসহ হেফাজতের কারাবন্দী সকল আলেম-উলামা’র মুক্তির দাবি জানানো হয়। নয়তো এহেন পরিস্থিতিতে অনতিবিলম্বে হেফাজত আমির আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর সাথে পরামর্শক্রমে হেফাজতের নীতিনির্ধারণী ফোরামের সাথে আলোচনা করতঃ তারা কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২৫ অক্টোবর ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর উদ্যোগে আয়োজিত জাতীয় ওলামা মাশায়েখ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। সেই সম্মেলন থেকে ঘোষিত দাবী সমূহের অন্যতম দুটি দাবী ছিল-মাওলানা মামুনুল হক, মুফতী মুনির হুসাইন কাসেমীসহ হেফাজতের কারাবন্দী সকল আলেম-উলামা’র মুক্তি এবং ২০১৩ সাল থেকে অদ্যাবধি হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের নামে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা। এসব দাবীর পরিপ্রেক্ষিতে এই সময়ের মধ্যে মুফতি মুনির হুসাইন কাসেমী ও মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।

এদিকে, সম্মেলন থেকে এই সব দাবী বাস্তবায়ন করার জন্য ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সরকারকে আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছিলো। ইতিমধ্যে বেধে দেওয়া সেই সময় শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হল মাওলানা মামুনুল হকসহ বাকি যে সমস্ত আলেম কারাবন্দী হয়ে আছেন এবং হেফাজতে ইসলামের নেতা কর্মীদের নামে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের, ব্যাপারে এখনো কোনো বাস্তব উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। যার ফলে হেফাজতের নেতাকর্মী ও সারাদেশের উলামায়ে কেরাম ও আপামর তৌহিদী জনতার মাঝে চরম ক্ষোভ ও অসন্তুষ্টি দেখা দিয়েছে বলে ওই বিবৃতিতে প্রকাশ করা হয়।
বিবৃতিতে হেফাজত মহাসচিব আরও বলেন, এহেন পরিস্থিতিতে করণীয় প্রদক্ষেপ নির্ধারণ করার জন্য হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর মহাসচিব আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমান হেফাজতের নীতিনির্ধারণী ফোরামের সাথে আলোচনা করতঃ আমিরে হেফাজত আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।

এ ব্যাপারে জানতে সংগঠনটির মহাসচিব আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমান এর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেন নি। পরবর্তীতে হেফাজত আমিরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনিও এ প্রতিবেদককের সাথে এ প্রসঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। তখন তাঁর (আমির) ব্যক্তিগত সহকারী মাওলানা আবদুল খালেক জানান, শনিবার গণমাধ্যমে প্রেরিত বিবৃতিটি হেফাজত মহাসচিবের। তাচাড়া কর্মসূচির ব্যাপারে হেফাজত আমিরের সাথে এই বিষয়ে সংগঠনের মহাসচিব তেমন কোন আলাপ-আলোচনা করেননি। এছাড়া বিবৃতিতে স্পষ্ট লেখায় আছে,আমিরে হেফাজত আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।

তবে কারাবন্দীদের মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার হয়নি বলে দেশে বর্তমান উত্তপ্ত রাজনৈতিক মাঠে তাপ ছড়াতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই আসছে হেফাজতে ইসলামের কঠোর কর্মসূচি-এর সত্যতা জানতে চাইলে সংগঠনটির যুগ্ন মহাসচিব মাওলানা মীর ইদরিস জানান, আমাদের আর কিছুই করার নেই। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে যা করতে হয়, হেফাজত তা করবে। তাছাড়া হেফাজতের কিছু কিছু নেতাকর্মীদের মুক্তি মিললেও হাজিরার নামে চরম হয়রানি। এতে করে হেফাজতে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তাই, সরকারের উচিত অনতিবিলম্বে ২০১৩ সাল থেকে অদ্যাবধি হেফাজত নেতাকর্মীদের নামে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ