বগুড়ার শাঁওইলে জমে উঠেছে শীতবস্ত্র বেচাকেনা

আদমদিঘী প্রতিনিধি: বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শাঁওইল হাটবাজারে চাদর-কম্বল বেচাকেনা জমে উঠেছে। শীতের আগমনে প্রতি বছরের মতো এবারও তাঁতি পল্লীগুলোতে কারিগররা সপরিবারে এখন চাদর, কম্বল, গামছা, বেডশিট, মোজাসহ বিভিন্ন শীতবস্ত্র তৈরির কাজে রাতদিন ব্যস্ত সময় পার করছেন।

বৈদ্যুতিক যন্ত্রের বিদ্যুতের ছোঁয়ায় বদলে গেছে এখানকার তাঁত প্রতিষ্ঠান। হাত-পা চালিত যন্ত্রের পরিবর্তে ব্যবহৃত হচ্ছে আধুনিক যন্ত্র। শতশত পরিবার এই পেশার মাধ্যমে স্বাবলম্বী হয়েছে।

জানা গেছে, বাংলাদেশের তাঁত শিল্পে বিশেষ ভূমিকা রয়েছে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার শাঁওইল এলাকার। আদমদীঘি সদর হতে মাত্র সাত কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত বিখ্যাত এই শাঁওইল বাজারের চাদর-কম্বলের হাট। সপ্তাহে দুইদিন- বুধবার ও রোববার বসে এ হাট। এখানে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা এসে তাদের পছন্দের চাদর, কম্বল, গামছা, বেডশিট, মোজাসহ বিভিন্ন শীতবস্ত্র কিনে নিয়ে যান।

এখানকার শীতবস্ত্র খুব আকর্ষণীয় হয়ে থাকে। এজন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসহ ব্যক্তি পর্যায়ে সারাদেশে দুস্থদের মাঝে বিতরণের জন্য শীতবস্ত্র অধিকাংশ এখান থেকেই কিনে থাকে। এ শিল্পকে ঘিরে উপজেলার শাঁওইলসহ কেশরতা, বিনাহালী, মঙ্গলপুর, মুরইল, দেলুঞ্জ, ছাতনী-ঢেকড়া এলাকায় প্রায় ৭৬টি গ্রামের বিশাল এলাকা জুড়ে তাঁত শিল্প গড়ে উঠেছে।

উত্তরবঙ্গের বৃহৎ এই তাঁতি গোষ্ঠীর লোকজন আজও ধরে রেখেছেন তাদের বাপ-দাদার পেশা। এখনকার তাঁত শিল্পে শতশত বেকার নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। অনেকেই এখন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ গ্রহণ করে বাড়িতে বৈদ্যুতিক মেশিন স্থাপন করছেন। তৈরি করছেন শীতবস্ত্র। এছাড়া গ্রামগঞ্জের অনেক বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা ও গরিব নারী নিজ বাড়িতে শাঁওইলের তাঁত শিল্পের উলের সুতা কাঠের লাটায়ে তোলার কাজ করেন। এ কাজের মাধ্যমে তার জীবিকা নির্বাহ করেন।

শাঁওইল বাজারের তাঁত শিল্প ব্যবসায়ী নুর ইসলাম ও মীর কাশেম জানান, এখানকার তৈরি শীতবস্ত্র আকর্ষণীয় ও উন্নতমানের হওয়ায় চাহিদা বেড়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এসে শীতবস্ত্র কিনে নিয়ে যান। বিদেশেও রফতানি হচ্ছে এখানকার শীতবস্ত্র।

শাঁওইল হাট ও বাজার সমিতির সভাপতি আতোয়ার হোসেন জানান, ঐতিহ্যবাহী শাঁওইল বাজারে তাঁত শিল্পকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে বিশাল কর্মক্ষেত্র। এই বাজারে সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতায় একটি বহুতল ভবন নির্মাণের দাবি জানান।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ