আসন সমঝোতা: আওয়ামী লীগ-জাপায় টানাপোড়েন

বগুড়া নিউজ ২৪: জাতীয় পার্টি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আলাদাভাবে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু এককভাবে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিলেও তারা আওয়ামী লীগের সাথে আসন সমঝোতা চায়। যদিও প্রকাশ্যে জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেছেন যে, জাতীয় পার্টি এখন সাবালক হয়েছে, জাতীয় পার্টি নিজের শক্তিতে নির্বাচন করবে। কিন্তু মুখে যাই বলুক না কেন, জাতীয় পার্টি সরকারের সঙ্গে আসন নিয়ে সমঝোতা করতে চাইছে। অন্তত ৩০টি আসন আওয়ামী লীগ ছেড়ে দিক এটি জাতীয় পার্টি চায়। আর এই চাওয়ার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে যে সমস্ত আসনে সমঝোতা হবে সেই সমস্ত আসনগুলোতে নৌকা প্রতীকের কোন প্রার্থী থাকবে না। কিন্তু আওয়ামী লীগ নৌকা প্রতীকের প্রার্থী না রাখার বিষয়টিকে সহজ ভাবে নিতে পারছেন না। প্রথম দিকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল যে, ২০টি আসনে তারা নৌকা প্রতীকে সরিয়ে দেবে। কিন্তু এখন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, জাতীয় পার্টি তার লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করুক, আওয়ামী লীগও তার নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করুক। উন্মুক্ত নির্বাচনে যে জনপ্রিয় সেই জিতবে। কিন্তু আওয়ামী লীগের এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত নয় জাতীয় পার্টির। বরং তারা নির্বাচনে জয়ের গ্যারান্টি চাচ্ছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের গ্যারান্টি দিতে পারছে না।

গত তিনটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টি মহাজোটের ব্যানারে নির্বাচন করেছে এবং সেই সমস্ত নির্বাচনগুলোতে আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে তাদের আসনগুলো ছেড়ে দিয়েছে। সেই আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ছিল না। কিন্তু এবার আমি ২৯৮টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। অন্যদিকে জাতীয় পার্টি দিয়েছে ২৮৭টি আসনে। তবে জাতীয় পার্টির নেতা সেলিম ওসমানের জন্য নারায়ণগঞ্জের একটি আসন আওয়ামী লীগ ছেড়ে দিয়েছে। একই ভাবে জাতীয় পার্টি মনে করে যে সমস্ত আসনগুলোতে জাতীয় পার্টির ভালো প্রার্থী রয়েছে, জনপ্রিয় প্রার্থী রয়েছে সেই সমস্ত আসনগুলোতে যেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী না দেয়। কিন্তু আওয়ামী লীগের এবারের কৌশল হল অনেক বেশি প্রার্থী থাকবে এবং অনেক বেশি ভোটার উপস্থিতি থাকবে। সে কারণে আওয়ামী লীগ উন্মুক্ত নির্বাচন করতে চায়। জাতীয় পার্টি নয়, কারো সাথেই আসন সমঝোতা করতে রাজি নয়।

আওয়ামী লীগের একজন একজন দায়িত্বশীল নেতা বলেছেন যে, আসন সমঝোতা হলে ভোটারদের উৎসাহ কমে যায়। তখন ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে যাবে না। যেখানে নৌকা প্রতীক থাকবে না, সেখানে ভোটাররা বুঝবে যে এটি সাজানো এবং পরিকল্পিত। তখন তাদের ভোটের উৎসব হারিয়ে ফেলবে। সেটি আওয়ামী লীগ কোন অবস্থাতেই যায় না। এ রকম একটা বাস্তবতায় জাতীয় পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগের টানাপোড়েন তীব্র আকার ধারণ করেছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, আগামী দু একদিনের মধ্যে যদি জাতীয় পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগ একটি সমঝোতায় না আসতে পারে তাহলে জাতীয় পার্টি নির্বাচন বর্জনের পথেও হাঁটতে পারে। এ ব্যাপারে জাতীয় পার্টি ইঙ্গিতও দিয়েছে। জাতীয় পার্টির একাধিক নেতা বলছেন যে, নির্বাচনে এখন পর্যন্ত সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি হয়নি। তাছাড়া আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচনে দাঁড়িয়েছে তাতে জাতীয় পার্টির জন্য নির্বাচন করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। সমঝোতা না হলে শেষ পর্যন্ত জাতীয় পার্টি কি করবে সেটা বোঝা যাবে আগামী দু একদিনের মধ্যে।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ