রংপুরে যথাযোগ্য মর্যাদায় রোকেয়া দিবস পালিত

রংপুর প্রতিনিধি: রংপুরে যথাযোগ্য মর্যাদায় রোকেয়া দিবস পালিত হয়েছে। শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে রোকেয়ার প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাসিবুর রশীদ, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সরিফা সালোয়া ডিনা, ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মজিব উদ্দিনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি, নীল দল ও বিভিন্ন আবাসিক হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরা। এরপর সেখানে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এদিকে মিঠাপুকুর উপজেলার খোর্দ্দ মুরাদপুর গ্রামে রোকেয়ার জন্মভিটার স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান, পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলী চৌধুরী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহরিয়ার রহমান, বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

এ সময় রোকেয়ার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। এরপর রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্র মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এদিকে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে রোকেয়া দিবস উপলক্ষ্যে পায়রাবন্দ সরকারি কলেজ মাঠে তিন দিনব্যাপী মেলা, আলোচনা সভা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন, নাটিকা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, আজ বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের ১৪৩তম জন্মদিন ও ৯১তম মৃত্যুবার্ষিকী। নারী জাগরণের এই পথিকৃৎ ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ গ্রামে জন্ম নেন এবং ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। ধর্মীয় গোঁড়ামি ও কুসংস্কারের শৃঙ্খল থেকে নারীকে মুক্ত করার লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে যাওয়া মহীয়সী এ নারীকে জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেছে।

বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন মুসলিম সমাজে মেয়েদের লেখাপড়া শেখানোর কোনো প্রচলন ছিল না। তাই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও পরিবারের সবার অগোচরে তার বড় ভাইয়ের কাছে উর্দু, বাংলা, আরবি ও ফারসি পড়তে এবং লিখতে শেখেন। তার জীবনে শিক্ষালাভ ও মূল্যবোধ গঠনে তার ভাই ও বড় বোন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছিলেন। পরবর্তী সময়ে বিহারের ভাগলপুরে সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। স্বামীর উৎসাহ ও নিজের আগ্রহে তিনি লেখাপড়ার প্রসার ঘটান।

গম রোকেয়া ২০০৪ সালে বিবিসি বাংলার সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জরিপে ষষ্ঠতম নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি প্রাবন্ধিক, ঔপন্যাসিক, সাহিত্যিক ও সমাজ সংস্কারক হিসেবে পরিচিত। তার উল্লেখযোগ্য রচনা হলো ‘মতিচূর’, ‘সুলতানার স্বপ্ন’, ‘পদ্মরাগ’, ‘অবরোধ-বাসিনী’।

১৯৭৪ সাল থেকে পায়রাবন্দবাসী বেগম রোকেয়ার স্মরণে রোকেয়া দিবস পালন করে আসছেন। সরকারিভাবে ১৯৯৪ সাল থেকে জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় বেশ ঘটা করেই দিবসটি পালন করা হয়।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ