মানুষকে ভালো রাখাই আওয়ামী লীগ সরকারের লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী

বগুড়া নিউজ ২৪: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আবার ক্ষমতায় এলে সারা দেশে ভূমিহীন-গৃহহীন মানুষ থাকবে না। তিনি বলেন, মানুষকে ভালো রাখাই আওয়ামী লীগ সরকারের লক্ষ্য। বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে পাঁচটি জেলার নির্বাচনী জনসভায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে একথা বলেন তিনি। রাজধানীর তেজগাঁওয়ের ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ অফিস প্রান্ত থেকে জনসভায় যুক্ত হন সরকারপ্রধান। জেলাগুলো হচ্ছে— পঞ্চগড়, লালমনিরহাট, নাটোর, পাবনা ও খাগড়াছড়ি।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের একটি স্বাধীন দেশ দিয়ে গেছেন। তার ডাকে স্বাধীনতার যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঙালিরা বিজয় অর্জন করেছেন। জাতির পিতা যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশকে খুব স্বল্প সময়ে ঘুরে দাঁড় করাতে শুরু করেছিলেন। যখন দেশের মানুষ জাতির পিতার নেতৃত্বে স্বাধীনতার সুফল পেতে শুরু করেছিল তখনই সপরিবারে তাকে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধুকে যখন হত্যা করা হয় তখন আমরা দুই বোন দেশের বাইরে ছিলাম। আমাদের দেশে আসতে বাধা দেওয়া হয়েছিল। আমার ছোট বোনের পাসপোর্টটা পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, জীবন বাজি রেখে দেশে এসেছিলাম। দেশে আসার পর আমার একটাই উদ্দেশ্যে ছিল দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন ও জীবন মানে উন্নয়ন করা। জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে ক্যান্টনমেন্টে বন্দী করা হয়েছিল সেই ক্ষমতার জনগণের কাছেই ফেরত দেওয়া। এজন্য অনেক চড়াই উতরাই পার হতে হয়েছে আমাকে। দলের অনেক নেতাকর্মীদেরও হত্যা করা হয়েছে। তারপর আমাদের দমাতে পরেনি।

‘১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করা শুরু করে। এরপর ২০০১ সালে পরিকল্পিতভাবে আমাদের ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হয়নি। তখন বড় একটি দেশ আমাদের গ্যাস বিক্রি করার প্রস্তাব দিয়েছিল আমরা না করলেও খালেদা জিয়া সেই প্রস্তাবে রাজি হয়েছিল। এরপর বিএনপি ক্ষমতায় আসে, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর আবার অমানবিক নির্যাতন হত্যা, খুন, গুম শুরু করেছিল। বিএনপি সন্ত্রাস দুর্নীতি করার কারণে দুর্নীতিতে তারা পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।’

আওয়ামী লীগে দেশের জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান আরও বলেন, এখন দেশের মানুষ নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই সারা বাংলাদেশ উন্নয়ন অগ্রগতিতে পাল্টে গেছে। যেটা আমাদের লক্ষ্য ছিল আওয়ামী লীগ দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন, যেটা করতে পেরেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ যদি আবারও ক্ষমতায় আসতে পারে তাহলে প্রতিটি জেলা, উপজেলায় উন্নয়ন হবে। কোনো জেলায় ভূমিহীন গৃহীন থাকবে না। পাশাপাশি কর্মসংস্থানেরও সৃষ্টি করা হবে। দেশের দ্রব্যমূল্যের অনেক দাম বেড়ে গেছে তারপরও দেশ পেছনে যায়নি। সরকার খাদ্য আমদানি করে যাচ্ছে। যাতে দেশের মানুষ যাতে কষ্ট না পায়, তাই আমাদের যা যা দরকার তাই করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষকে বাঁচানোর জন্য আমরা দুই হাতে পানির মতো টাকা খরচ করেছি। পৃথিবীর কোনো দেশ বিনা পয়সায় ভ্যাকসিন দেয় নাই। কিন্তু বাংলাদেশ দিয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার উন্নয়ন করতে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নিয়ে তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। আমাদের একটাই উদ্দেশ্য, দেশের মানুষকে ভালো রাখা।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের দক্ষ করে তুলতে আমরা ভোকেশনাল বা কারিগরি শিক্ষা চালু করেছি। কারণ আমরা দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে চাই। চতুর্থ বিপ্লবের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলতে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে আমরা প্রযুক্তির শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, দেশের সম্পদ বিক্রি করে যারা ক্ষমতায় এসেছিল আজ তারাই আওয়ামী লীগের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। আমরা এদেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করি। আর বিএনপির কাজ হলো জ্বালাও-পোড়াও মানুষের ক্ষতি করা। দেশের ক্ষতি করা। পার্বত্য এলাকার উন্নয়নে তার সরকারের নানা পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, যে পার্বত্য চট্টগ্রাম একসময় যাতায়াতে কষ্ট ছিল, সেখানে রাস্তাঘাট করে দেওয়া হয়েছে। উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। পুরো বাংলাদেশের স্থল সীমান্ত চুক্তি করেছি। আলোচনা ও শান্তিপূর্ণভাবে এর সমাধান করে দিয়েছি।

‘ইসলাম ধর্ম শান্তি ধর্ম। জঙ্গিবাদ যাতে না ছড়ায় সে ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। অন্যান্য ধর্মের জন্যও কাজ করে যাচ্ছি। দেশের মানুষকে ভালো রাখার লক্ষেই কাজ করছে আওয়ামী লীগ।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ