বগুড়া নিউজ ২৪: জাতীয় নির্বাচনের আগে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফ (পিটিআই)-এর নির্বাচনকে বেআইনি বলে ঘোষণা করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন। শুধু তা-ই নয়, দলীয় প্রতীক ক্রিকেট ‘ব্যাট’ও কেড়ে নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
পাকিস্তানের প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিকান্দার সুলতান রাজার নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের একটি উচ্চপর্যায়ের প্যানেলের বরাত দিয়ে শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ডন।
পিটিআইয়ের সাবেক সদস্য আকবর এস বাবরের আবেদনের শুনানি শেষে কমিশন ১১ পৃষ্ঠার রায় ঘোষণা করে। আগামী ৮ই ফেব্রুয়ারি দেশ যখন নির্বাচনমুখী, সব দল মাঠে নেমে পড়েছে, তখন সাবেক ক্ষমতাসীন দল পিটিআইয়ের জন্য এই রায়কে বিরাট এক আঘাত হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এরই মধ্যে কয়েক মাস ধরে দলটির চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান জেলবন্দি। খুব সহসাই তিনি মুক্তি পাবেন বলে মনে হয় না। রায়ে বলা হয়েছে, আমাদের নির্দেশনা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে পিটিআই। তারা ২০১৯ সালের সংবিধান, ২০১৭ সালের নির্বাচনী আইন এবং ২০১৭ সালের নির্বাচন সংক্রান্ত নিয়মকানুন অনুযায়ী দলের ভিতর নির্বাচন করতে ব্যর্থ হয়েছে।
উল্লেখ্য, ইমরান খান জেলে যাওয়ার পর সম্প্রতি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দিয়েছেন ব্যারিস্টার গওহর আলি খানকে। কিন্তু তাকেও দলের প্রধান হিসেবে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে কমিশনে। রোববার নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার বর্ধিত সময়ের শেষ দিন ফুরিয়ে যাওয়ার পথে। ফলে তাদের হাতে শুধু আজ শনিবার একটি দিন সময়। এর মধ্যে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতের রায় আনতে হবে। বিষয়টি অত্যন্ত জটিল। যদি এ সময়ের মধ্যে তারা আদালতের রায় আনতে ব্যর্থ হয় নিজেদের পক্ষে, তাহলে এবারের নির্বাচন থেকে ছিটকে পড়বে ইমরান খানের দল। এরই মধ্যে পিটিআই বার বার অভিযোগ করেছে যে, তাদেরকে টার্গেট করা হচ্ছে। সমান লেভেল প্লেইং ফিল্ড দেয়া হচ্ছে না। শুক্রবার নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ দেয়ার কয়েক ঘণ্টা আগেও তারা বলেছে, তাদেরকে সমান সুযোগ দেয়া উচিত।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাজহার আব্বাস জিও টিভিকে বলেছেন, নির্বাচন কমিশন কখনোই কোনো রাজনৈতিক দলের ভিতরকার নির্বাচনকে বেআইনি ঘোষণা করেনি। ফলে এখন দেখে মনে হচ্ছে পিটিআই আক্রমণের মুখে রয়েছে। এমন ঘটনা কখনো ঘটেনি। নির্বাচনের প্রতীক কেড়ে নেয়া হয়েছে। প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন একটি দলের আভ্যন্তরীণ নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিয়েছে। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর ক্ষেত্রে বিকল্প পন্থা আছে, যা ১৯৮৫ সালে ঘটেছিল। সেই কৌশল কাজে খাটাতে পারে পিটিআই। তিনি বলেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে পিটিআই নিরপেক্ষ বা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে পারে। তবে একটি বিষয় খুব পরিষ্কার। তাহলো এই নির্বাচন পিটিআইয়ের জন্য কঠিন থেকে আরও কঠিন হয়ে উঠছে।
ওদিকে রায়ের জবাবে পিটিআই হাইকোর্টে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। মনোনয়ন জমা দেয়ার সময়সীমা প্রায় শেষ হয়ে আসায় শনিবারের মধ্যে তাদেরকে একটি ইতিবাচক রায় পেতে হবে। দলটির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গওহর আলি খান জিও নিউজকে বলেছেন, আমরা নির্বাচন বর্জন করবো না। আমাদের ‘প্লান বি’ আছে। তবে কি সেই প্লান সে সম্পর্কে বিস্তারিত বলেননি তিনি। ওদিকে পাকিস্তান নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিব কানওয়ার মুহাম্মদ দিলশান বলেছেন, কমিশনের নির্দেশের পরে পিটিআই সদস্যরা নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারেন।