গাজার কাছে এবার ভয়ঙ্কর সাবমেরিন মোতায়েন যুক্তরাষ্ট্রের

বগুড়া নিউজ ২৪: সাবমেরিন বা ডুবোজাহাজ চুপ করে সমুদ্রের গভীরে ডুবে থাকে। প্রয়োজনে ক্ষেপণাস্ত্র হানা চালাতে পারে। ভয়ঙ্কর সেই ডুবোজাহাজ আমেরিকা মোতায়েন করেছে পশ্চিম এশিয়ার পানিতে। এই ‘ওহায়ো ক্লাস’ ডুবোজাহাজের কী কী বৈশিষ্ট্য রয়েছে, জানলে চমকে উঠতে হয়।

কেন পশ্চিম এশিয়ার সমুদ্রের গভীরে মোতায়েন করা হয়েছে সেই ডুবোজাহাজ? জানা গিয়েছে, ইসরাইল এবং হামাসের যুদ্ধে কোন কোন দেশ মাথা গলাতে চাইছে, তা পর্যবেক্ষণ করার জন্যই ঘুরছে সেই ডুবোজাহাজ। কোনো দেশ কোনো পক্ষে যোগ দিতে চাইলে তাদের প্রতিহত করারও চেষ্টা করছে ‘ওহায়ো ক্লাস’।

গত ৫ নভেম্বর আমেরিকার সেন্ট্রাল কমান্ড জানিয়েছিল, ‘ওহায়ো ক্লাস’ ডুবোজাহাজটিকে তারা ওই অঞ্চলে মোতায়েন করেছে। পশ্চিম এশিয়ায় আমেরিকার সেনাবাহিনীর অভিযান নিয়ন্ত্রণ করে এই সেন্ট্রাল কমান্ড।

আমেরিকার প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার ‘ওহায়ো ক্লাস’ ডুবোজাহাজ। ১৯৮১ সালে প্রথম সমুদ্রে ভেসেছিল এটি। তার ফলে ডুবোজাহাজের প্রযুক্তির ইতিহাসে নতুন যুগ এসেছিল।

ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়তে পারে, প্রথমে এমনভাবেই তৈরি করা হয়েছিল ‘ওহায়ো ক্লাস’ ডুবোজাহাজ। কয়েকটিকে পরে ‘গাইডেড মিসাইল’ ডুবোজাহাজে পরিণত করা হয়েছিল। অর্থাৎ যেগুলো পরমাণু অস্ত্র বহন করে এবং প্রয়োজনে নিক্ষেপ করতে পারে।

এই ‘ওহায়ো ক্লাস’ ডুবোজাহাজের দৈর্ঘ্য ৫৬০ ফুট। এর আগে এত বড় ডুবোজাহাজ আমেরিকার নৌবাহিনীর জন্য তৈরি করা হয়নি। বিশালতার দিক থেকে এই ডুবোজাহাজটি পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম।

ডুবলে এই ডুবোজাহাজের ওজন হয় ১৮ হাজার ৭৫০ টন। পরমাণু রিয়্যাক্টর শক্তি জোগায় ‘ওহায়ো ক্লাস’-কে। দীর্ঘ সময় সমুদ্রের গভীরে ডুবে থাকতে পারে।

ট্রাইডেন্ট ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বহন করে ‘ওহায়ো ক্লাস’ ডুবোজাহাজ। এই আধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র একাধিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে।

আমেরিকার পরমাণু যুদ্ধকৌশলের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রয়েছে ‘ওহায়ো ক্লাস’ ডুবোজাহাজের। সমুদ্রের নীচে যখন এই ডুবোজাহাজ চলে, তখন তাকে সহজে দেখা যায় না। সেভাবে সকলের অলক্ষ্যে থেকে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। এটাই এই ডুবোজাহাজের সব থেকে বড় বৈশিষ্ট্য।

পর পর আঘাত হানার ক্ষমতা রয়েছে এই ডুবোজাহাজের। টোমাহক ক্ষেপণান্ত্রও রয়েছে এই ডুবোজাহাজে। অনেক দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে এই ক্ষেপণাস্ত্র।

পানির নিচে ঘুরে ঘুরে টহল দেয় এই ডুবোজাহাজ। তাতে সওয়ার থাকে দু’টি দল (ক্রু)— নীল এবং সোনালি। এক একটি দল ৭০ থেকে ৯০ দিন টহল দেয়।

ডুবোজাহাজে রসদ রাখারও বড় জায়গা রয়েছে। জাহাজ মেরামতির সরঞ্জাম রাখারও জায়গা রয়েছে। ফলে সমস্যা দেখা দিলে সহজেই মেরামতি করা যাবে এই জাহাজ, সময়ও বাঁচবে।

‘ওহায়ো ক্লাস’ ডুবোজাহাজ এক সাথে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করতে পারে এমন ২৪টি লঞ্চার (এসএলবিএমএস) বহন করতে পারে। তারা স্বাধীনভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে।

এই ডুবোজাহাজগুলো চওড়ায় প্রায় ৪২ ফুট। এক-একটিতে সওয়ার হতে পারেন ১৫৫ জন। দলে থাকেন ১৫ জন কর্মকর্তা, ১৪০ জন সওয়ারি।

সাধারণত আমেরিকার ওয়াশিংটন, জর্জিয়া, কিংস বে তে রাখা থাকে ‘ওহায়ো ক্লাস’ ডুবোজাহাজগুলো। ৭৭ দিন পানিতে থাকে। বাকি দিন বন্দরে রাখা হয় রক্ষণাবেক্ষণের জন্য।

আমেরিকার কাছে যতগুলো এই ডুবোজাহাজ রয়েছে, সেগুলো ১৯৭৪ থেকে ১৯৯৭ সালের মধ্য তৈরি হয়েছে। ২০৩১ সালে এগুলোকে সরিয়ে আধুনিক ডুবোজাহাজ মোতায়েন করা হবে। ‘কলম্বিয়া ক্লাস’ ডুবোজাহাজ মোতায়েন করা হতে পারে বলে খবর।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০৩১