শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে জোড়ালো শ্রমিক আন্দোলনের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ।
রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার তোপখানা সড়কে বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে ‘শ্রমিক হত্যা, জবরদস্তিমূলক শ্রম পরিস্থিতি, নিবর্তনমূলক আইন ও ন্যায্য মজুরি বঞ্চিত শ্রমিক : গণতান্ত্রিক ও শ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
আনু মোহাম্মদ বলেন, মজুরি বৃদ্ধির দাবি করায় শ্রমিকের ওপরে যেভাবে গুলি করা হলো তা দেখলে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, এটা একটা শ্রেণি যুদ্ধ। এই শ্রেণি যুদ্ধে রাষ্ট্র একটা পক্ষে দাঁড়িয়েছে। আজ এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, সব কিছুই মাফিয়া গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। রাষ্ট্র তাদের হয়ে ভূমিকা পালন করছে মাত্র।
তিনি বলেন, কারো কারো এই বিভ্রান্তি হয়েছিল যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশে একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ভূমিকা রাখবে। এই বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারাই তাদের সাফল্য। প্রকৃত অর্থে তারা নিজেদের স্বার্থ নিয়েই কাজ করে। তাদের ওপরে নির্ভর করে শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে না। শ্রমিকের অধিকার আদায়ে জোড়াল শ্রমিক আন্দোলন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
জাতীয় শ্রমিক কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক মনজুরুল আহসান খান বলেন, জাতীয় শ্রমিক কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদ ১১ দফা দাবির ভিত্তিতে আন্দোলন করছে। সরকার শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি না মানলে সারা দেশের সংগঠিত ও অসংগঠিত সকল খাতের শ্রমিকদের একত্রিত হয়ে সর্বাত্মক ধর্মঘটসহ কঠোর আন্দোলনে নামতে হবে। অতীতের মত এবারও শ্রমিক আন্দোলন দেশের মানুষের ভোটাধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় পথ দেখাবে।
সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, দেশে সংগঠিত শিল্প খাতের বাইরে বিপুল জনগোষ্ঠী অসংগঠিত বিভিন্ন খাতে কাজ করছে। সেবাখাতসহ বহু অসংগঠিত পেশার শ্রমজীবী মানুষ শ্রম আইনের আওতার বাইরে থেকে যাচ্ছে। ফলে তারা আইনগত সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
সভায় প্রারম্ভিক লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি জহিরুল ইসলাম। আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের সভাপতি চৌধুরী আশিকুল আলম, গার্মেন্ট শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি মোশরেফা মিশু ও শ্রমিক নেতা হারুনার রশিদ ভুইয়াসহ অনেকে।