পোড়াদহ মেলায় মুল আকর্ষণ ৪০ কেজির পাখি মাছ ১২ কেজির মাছ মিষ্টি

ষ্টাফ রিপোর্টার: বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলায় আসা দর্শনার্থীরা মেলার ঐতিহ্য নদীর বিশাল বিশাল বাঘাইড় মাছ না দেখলেও সমুদ্রে জাহাজের সামনে দিয়ে ছুটে চলা সাত ফুট বাই এক ফুটের ফ্লাইং ফিস বা পাখি মাছটি দেখতে ভিড় করছিলেন।

বিলুপ্তপ্রায় বাঘাইড় মাছ বেচা কেনার ওপর নিষেধাজ্ঞাসহ জরিমানা ঘোষণার পর বাঘাইড় মাছ আমদানী, প্রদর্শণ ও বিক্রি করতে দেখা না গেলেও বাঘাইড় মাছের জায়গা দখল করেছিল ২৬ কেজির বিশাল আকৃতির কাতল, ২৫ কেজির ব্লাক কার্প ও বিশাল বিশাল, রুই, বোয়াল, চিতল, আইড়।

বগুড়ার ফতেহ আলী বাজারসহ অন্যান্য বাজারে বাঘাইড় মাছ বিক্রি হলেও বাঘাইড় মাছ ছাড়াই বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলা লাখো মানুষের পদচারণায় অনুষ্ঠিত হলো।

এছাড়াও বরাবরের মত মেলার ২য় আকর্ষণ ছিল ১০ থেকে ১২ কেজির মাছ আকৃতির মিষ্টি। বগুড়ার গাবতলী উপজেলার মহিষাবান ইউনিয়নের গোলাবাড়িতে প্রতিবছর মাঘ মাসের শেষ বুধবার সন্যাসীপুজা উপলক্ষে প্রায় ৪শ’ বছরের পুরনো এ ঐতিহ্যবাহী মেলা বসে।

বড় বড় মাছের জন্য পোড়াদহ মেলা সারাদেশে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মেলা উপলক্ষে মেলার আশেপাশের গ্রামের প্রতিটি বাড়ির জামাই-মেয়ে ও অতিথি আপ্যায়নে বড় মাছ কেনার রীতিও বহু পুরনো। রীতি অনুযায়ী জামাইকে মেলা করার জন্য শ্বশুরবাড়ির লোকেরা টাকা দেয়। আর জামাইও সেই টাকা রেখে শ্বশুরবাড়ির জন্য তার সাধ্য অনুযায়ী মেলা থেকে বড় মাছ ও মিষ্টি কিনে বাড়ি ফেরেন। এজন্যই এ মেলাকে জামাই মেলাও বলা হয়।

মাছ ছাড়াও মেলায় প্রচুর আসবাবপত্র, বিভিন্ন সাইজের বড় মিষ্টি, পোশাক, বাঁশবেতের সামগ্রী, লোহার জিনিসপত্র, মেয়েদের প্রসাধনী সামগ্রী ছাড়াও ব্যাপক পরিমাণে পান খাওয়ার চুন পাওয়া যায়। মেলাকে কেন্দ্র করে একদিন আগে থেকেই বগুড়াসহ আশেপাশের উপজেলায় সাড়া পড়ে যায়।

ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলার নাম শুনে টাঙ্গাইল থেকে এবারই প্রথম মাছ ব্যবসায়ী ফয়সাল ও শরীফ নামের দুই উদ্যোক্তা মেলায় এসেছেন ৪০ কেজি ওজনের সামুদ্রিক মাছ সোর্ড ফিস বা পাখি ফিস নিয়ে। মেলার প্রথম আকর্ষণ ছিল এই মাছ। তারা জানান, বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে পাখি মাছ দেখার দর্শনার্থী অনেক কিন্তু কেনার মানুষ নেই। এই এলাকার মানুষ আসলে নদীর মাছ বেশি খেতে পছন্দ করেন। সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি মাছটি বিক্রি করতে পারেননি।

মেলার মধ্যে ২৪ থেকে ২৬ কেজি ওজনের সবচেয়ে বড় সাইজের কাতল মাছ এসেছেন বগুড়া ফতেহ আলী বাজারের ব্যবসায়ী আবু বক্কর সিদ্দিক ও সিরাজগঞ্জে ব্যবসায়ী আলহাজ্ব আব্দুস সামাদ। এই মাছগুলো তারা সিরাজগঞ্জের যমুনা নদী ও খুলনা থেকে এনেছেন। মেলার মধ্যে দেশি মাছের মধ্যে এই মাছ দুটোই সবচেয়ে বড় মাছ।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ