স্কুলছাত্র হত্যাসহ লাশ গুমের মামলায় ঘাতকের মৃত্যুদন্ড

ষ্টাফ রিপোর্টার : বগুড়ায় তৃতীয় শ্রেণির স্কুল ছাত্র বুলবুল হোসেন বিজয় (৯) কে হত্যা করে পুরাতন ইটভাটার চুল্লি লাশ ফেলে দিয়ে গুমের মামলার রায়ে অভিযুক্ত আসামি মোঃ সুজন সরকার (২৫) কে হত্যার দায়ে মৃত্যুদন্ডাদেশসহ ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেয়া হয়েছে।

এছাড়াও ওই স্কুল ছত্রের লাশ গুমের দায়ে ২ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেয়া হয়েছে। হাইকোর্টের অনুমোদন সাপেক্ষে আসামির মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত গলায় রশি দিয়ে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করতে হবে।

মৃত্যুদন্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামি মোঃ সুজন সরকার বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার মাদলা ইউনিয়নের লক্ষ্মীকোলা কাজীপাড়ার জাফর সরকারের ছেলে।

আজ রোববার (১০ মার্চ) বগুড়ার ১ম অতিরিক্ত দায়রা জজ হাবিবা মন্ডল এই মামলার রায় দেন। উল্লেখ্য, লক্ষ্মীকোলা কাজীপাড়ার সাইদুল ইসলাম সরকারের ছোট ছেলে ও লক্ষ্মীকোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র বুলবুল হোসেন বিজয় গত ২০২২ সালের ৫ অক্টোবর সকাল ৯ টারদিকে লক্ষ্মীকোলা বিদ্যালয় মাঠে খেলাধুলা করার কথা বলে বাড়ি হতে বের হয়।

এরপরে সে বাড়িতে ফিরে না এলে বাড়ির লোকজন বিভিনস্থানে খোঁজাখুঁজি করে তার সন্ধান না পেয়ে এলাকায় মাইকিং করে। এর ৫দিন পরে লক্ষ্মীকোলা গ্রামের এসএএম পুরাতন ইটভাটা হইতে পঁচা দুর্গন্ধ বের হতে থাকলে স্থানীয় লোকজনসহ ওই স্কুল ছাত্রের বাবা ওই ইট ভাটার চুল্লির (ডাম্প) সিমেন্টের ঢালাইয়ের ঢাকনা খুলে চুল্লির (ডাম্পের) ১০ফুট নিচে গভীরে টর্চের আলোতে স্কুলছাত্র বুলবুল হোসেন বিজয়ের লাশ দেখতে পায় এবং লাশ উদ্ধার করে।

এসময় লাশের পড়ণে কোন কাপড় ছিল না। নিহত বিজয়ের বাবা বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি উল্লেখ করে ১১ অক্টোবর শাজাহানপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা এসআই ফারুক আহমেদ অভিযুক্ত আসামি সুজন সরকারকে গ্রেফতার করে ১২ অক্টোবর আদালতে সোপর্দ করলে আসামি হত্যাকান্ডের ঘটনা স্বীকার করে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দী দেয় এবং বলে যে, বিজয় ৫ অক্টোবর তার কাছ হতে মধু খায়।

মধু খাওয়ার পরে সে মাছের টোপ আনার কথা বলে বাঁশঝাড়ে ডেকে নিয়ে যায়। এসময় বিজয় আসামি সুজনের মা সম্পর্কে খারাপ কথা বললে সে ক্ষিপ্ত হয়ে গলা চেপে ধরলে বিজয় অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়। এরপর আসামি সুজন বাসায় এসে চাকু নিয়ে গিয়ে বিজয়ের ২ হাতে পায়ে চাকু দিয়ে আঘাত করে পরনের কাপড় খুলে লাশ নিয়ে গিয়ে ওই ইটভাটার চুল্লির মধ্যে ফেলে দেয়।

তদন্ত শেষে ওই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। মামলাটি পরিচালনা করেন বাদি রাষ্ট্র পক্ষে এপিপি এড. রেজাউল হক ও এপিপি এড. নাছিমুল করিম হলি এবং আসামি পক্ষে এড. শাহাদৎ হোসেন সহল।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ