ঝিনাইদহ-১ আসনের এমপি আব্দুল হাই মারা গেছেন

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহ-১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শনিবার (১৬ মার্চ) সকালে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

এ সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) হাশিম রেজা রিয়াদ বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন।

আব্দুল হাই নিউমোনিয়া, লিভার সিরোসিসসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ছিলেন। তিনি বেশ অসুস্থ হয়ে পড়ায় ১৮ ফেব্রুয়ারি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাকে থাইল্যান্ডে নেওয়া হয়।

তিনি ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। এ ছাড়া সাবেক প্রতিমন্ত্রী, ঝিনাইদহে স্বাধীনতার প্রথম পতাকা উত্তোলনকারী, ঝিনাইদহ-১ আসন থেকে পাঁচবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য তিনি।

আব্দুল হাই স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

এদিকে তার মৃত্যুর খবরে ঝিনাইদহের রাজনীতিবিদদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে।স্থানীয় রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা শোক প্রকাশ করছেন।

সরেজমিন দেখা গেছে, ঝিনাইদহ শহরের দুঃখী মাহমুদ সড়কে তার বাড়িতে স্থানীয়রা ভিড় করছেন। আত্মীয়স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে পরিবেশ।

আব্দুল হাই ১৯৫২ সালের পয়লা মে ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ফয়জুদ্দীন মোল্লা।

এ রাজনীতিবিদের রাজপথে পথচলা অনেক পুরোনো। তিনি ১৯৬৪ সালে শৈলকূপার বসন্তপুর হাইস্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৬৭ সালে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ঝিনাইদহ সরকারি কেসি কলেজে ভর্তি হন। সে সময় তিনি কেসি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।

তিনি ১৯৬৮ সালে মহকুমা ছাত্রলীগের সহসভাপতি এবং ১৯৬৯ সালে সরকারি কেসি কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন। একই বছর তিনি বৃহত্তর যশোর জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি নির্বাচিত হন।

১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে তিনি ঝিনাইদহে স্বাধীন বাংলার প্রথম পতাকা উত্তোলন করেন। দেশ স্বাধীনের পর তিনি ঝিনাইদহ যুবলীগের আহ্বায়ক এবং ১৯৭৩ সালে যুবলীগের মহকুমা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৮৭ সালে তিনি ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ১৯৯৮ সালে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০০৫ সালে আব্দুল হাই ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন।

২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রথমবারের মতো ঝিনাইদহ-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর নবম, দশম, একাদশ এবং সর্বশেষ গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পঞ্চমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এ ছাড়া মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ