ঈদে সেমাই খাওয়ার প্রচলন যেভাবে এলো

বগুড়া নিউজ ২৪: দিনের শুরুতে সেমাই ছাড়া ঈদ যেন একপ্রকার পানসে মনে হয়। ঈদের দিন অতিথি আপ্যায়নে সেমাই ছাড়া অন্য মিষ্টান্নের কথা ভাবাই যায় না।

পূর্বে গ্রাম বাংলায় হাতে বানানো সেমাই দিয়েই হতো অতিথি আপ্যায়ন। গ্রামের মহিলারা একযোগে সেমাই বানাতেন। তবে এখন বাজারে এসেছে নানা নামের ও ধরনের সেমাই।

বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গে লাচ্ছা সেমাইয়ের খুব কদর। ঈদের দিন সকালে দুধে ভেজানো লাচ্ছা সেমাই খেয়েই সবার দিন শুরু হয়।

বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত ও পাকিস্তানে ঈদে সেমাই খাওয়ার রেওয়াজ আছে। তবে ভারতীয় উপমহাদেশের বাইরে ঈদে সেমাইয়ের প্রচলন নেই বললেই চলে। ইতিহাসবিদদের মতে, উনিশ শতকের শেষের দিক থেকেই ঈদে ঘরে ঘরে সেমাই তৈরির সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, ত্রিশ-চল্লিশের দশক থেকে সেমাইয়ের জনপ্রিয়তা ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করে। যার কিছু সেমাই হাতে তৈরি হয় আবার কিছু তৈরি হতে থাকে বাণিজ্যিকভাবে। এখন যে সেমাই আমরা দেখি সেটির প্রচলন শুরু হয়েছে পঞ্চাশের দশক থেকে।

মুঘল কিংবা তার আগের সময়ে ভারতীয় উপমহাদেশে সেমাইয়ের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না। তবে গ্রিকরা সেমাইয়ের মতো দেখতে একটি খাবার খেত, যা উপমহাদেশের সেমাই থেকে অনেকটাই আলাদা।

তবে ঈদের দিন সকালে যে কারণে সেমাই খাওয়া হয় তা হলো ঈদুল ফিতরে ঈদগাহে যাওয়ার আগে মিষ্টিজাতীয় জিনিস খাওয়ার কথা ইসলাম ধর্মে বলা হয়েছে। সহিহ বোখারি ৯৫৩ হদিস অনুযায়ী, ঈদের দিন মিষ্টিমুখ করার এই ধর্মীয় বিধিটি ঈদের সুন্নতের অন্তর্ভুক্ত।

আর এ কারণেই ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ঘরে ঘরে ঈদের দিন সেমাই রান্না করেন। ঈদে মিষ্টিজাতীয় খাবার হিসেবে সেমাইকে অগ্রাধিকার দেওয়ার আরেকটি উল্লেখযোগ্য কারণ হলো অন্যান্য মিষ্টিজাতীয় খাবারের তুলনায় এ খাবার সাশ্রয়ী ও স্বাস্থ্যকর। সেই সঙ্গে দ্রুত ও সহজে তৈরি করার কারণে এটি এখন ঈদের আনন্দের একটি বড় অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০