নাটোরে প্রার্থীকে অপহরণ : স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুই নেতাকে অব্যাহতি

নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরে প্রতিদ্বদ্বী প্রার্থীকে অপহরণ ও মারধরের ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুই নেতাকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রাতে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে অব্যাহতির বিষয়ে দলীয় সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। অব্যাহতি প্রাপ্ত দুই নেতা হলেন সিংড়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি হাসান ইমাম ও সাধারণ সম্পাদক মোহন আলী।

১৫ এপ্রিল বিকেলে প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন অনলাইনে দাখিল করা মনোনয়নপত্রের অনুলিপি নাটোর জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে জমা দিতে যান। সেখান থেকে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক ও তার শ্যালক লুৎফুল হাবীবের ঘনিষ্ঠরা দেলোয়ার হোসেনকে অপহরণ করে শারীরিক নির্যাতন করে অচেতন অবস্থায় নিজ বাড়ির সামনে ফেলে যায়। ওই দিন দুপুরে আরও দুজনকে অপহরণ করা হয়। পরে দেলোয়ারকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া হয়। এ ঘটনায় দেলোয়ারের ভাই মুজিবর রহমানের দায়ের করা মামলায় পুলিশ দুই দফায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করে। এর মধ্যে আসামি সুমন আহমেদ ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে আওয়ামী লীগ নেতা লুৎফুল হাবীবের ঘনিষ্ঠজনদের সম্পৃক্ততার তথ্য উঠে আসে।  নাটোর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ জানিয়েছে, অপহরণ ও মারধরের বিষয়ে গত শনিবার সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ জরুরি সভা ডাকে। ওই সভায় অপহরণের সঙ্গে জড়িত নেতাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জেলা যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও শ্রমিক লীগকে চিঠি দেওয়া হয়। চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সিংড়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি হাসান ইমাম ও সাধারণ সম্পাদক মোহন আলীকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, প্রার্থীকে অপহরণ ও মারধরের ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেছেন তারা। মূলত দলের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে বিতর্কিত দুই নেতাকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ওই দুই পদে সিংড়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে এম এম ওয়াহিদুজ্জামানকে এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সোহেল রানাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এদিকে দেলোয়ার হোসেনকে অপহরণের ঘটনায় পুলিশ এ পর্যন্ত দুই দফায় দুইটি মাইক্রোবাস, দেশীয় অস্ত্র, নির্বাচনী লিফলেটসহ তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। সিসিটিভি ফুটেজ ও গ্রেপ্তার আসামির জবানবন্দিতে ঘটনার সঙ্গে প্রতিমন্ত্রীর শ্যালক লুৎফুল হাবীবের সম্পৃক্ততার বিষয়টি ওঠে আসে।  বিষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হলে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহম্মেদ পলক তার শ্যালক লুৎফুল হাবীবকে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেন। ওই নির্দেশনার পর রোববার লুৎফুল হাবীব প্রার্থীতা প্রত্যাহার করায় কোনো প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী না থাকায় মঙ্গলবার বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় অপহৃত প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে চেয়ারম্যান ঘোষণা করা হয়।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০