সঞ্চয়পত্র কেনার চেয়ে বিক্রি বেশি করছেন গ্রাহকরা

বগুড়া নিউজ ২৪: সঞ্চয়পত্র কেনার চেয়ে বিক্রি বেশি করছেন গ্রাহকরা। ফলে এটির নিট (প্রকৃত) বিক্রি নেতিবাচক হয়ে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম আট মাস অর্থাৎ জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারিতে সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রির ঋণাত্মক পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৮৯২ কোটি টাকা। আগের ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ে নিট বিক্রির পরিমাণ ছিল ঋণাত্মক ৩ হাজার ৫১০ কোটি টাকা। বিক্রি কমে যাওয়ার অর্থ হলো, সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের ঋণ নিতে হচ্ছে না। ফলে এ খাতে সরকারকে ঋণের সুদও গুনতে হবে না।

তবে আগে বিক্রি হওয়া সঞ্চয়পত্রের সুদ পরিশোধের বিপরীতে সরকারকে এখনো বাজেটে বড় অঙ্কের অর্থ বরাদ্দ রাখতে হচ্ছে। যেমন চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশি। ২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয় ৮০ হাজার ৮৫৮ কোটি টাকা। এর বিপরীতে গ্রাহকরা সঞ্চয়পত্র ভাঙান ৮৪ হাজার ১৫৩ কোটি টাকার। অর্থাৎ নিট বিক্রি ঋণাত্মক হয়ে যায় (৩ হাজার ২৯৫ কোটি)। এর মানে সরকার ওই অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে নিট ঋণ এক টাকাও পায়নি। নিট বিক্রিকেই সরকারের ঋণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে সরকারের নেওয়া ঋণের পুঞ্জীভূত পরিমাণ ২০২৩ সালের এপ্রিলে ছিল ৩ লাখ ৬০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, যা চলতি এপ্রিলে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৬০ হাজার ৭১৪ কোটি টাকা। এক বছরে মাত্র ২১৪ কোটি টাকা বেড়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সঞ্চয়পত্র ক্রয়ে কড়াকড়ি আরোপের পর থেকে এর বিক্রি কমে গেছে। বিশেষ করে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি), কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) ও ৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা; সুদ হার কমানোর প্রভাব রয়েছে। ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে এনআইডি ও টিআইএন জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা শুরু হয়। ফলে যারা আগে সঞ্চয়পত্র কিনেছিলেন, তাদের অনেকেই মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে নতুন করে আর এতে বিনিয়োগ করেননি। ৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ওপর অর্জিত সুদের বিপরীতে ১০ শতাংশ কর দিতে হয়। এছাড়া বিনিয়োগের পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে সঞ্চয়পত্রের সুদের হারের যে স্তর চালু করা হয়েছে, তাতে নতুন বিনিয়োগে বিমুখ হয়েছেন অনেকেই।

এছাড়া সম্প্রতি ব্যাংক আমানতে সুদহার বৃদ্ধিও একটি বড় কারণ বলে উল্লেখ করছেন সংশ্লিষ্টরা। ব্যাংকের সুদের হার যখন ৬ থেকে ৮ শতাংশ পর্যন্ত ছিল, তখন সঞ্চয়পত্রের সুদ ছিল গড়ে ১১ শতাংশ। এ থেকে যে বাড়তি আয় আসত, এখন সে সুযোগ কম। ব্যাংকে আমানতের সুদের হার বেশি হলে সঞ্চয়পত্রে মানুষের বিনিয়োগ কমবেই। ফলে সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রিতে প্রভাব পড়বে।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০