বগুড়ার চরে মিষ্টি আলু চাষে বাম্পার ফলন

ষ্টাফ রিপোর্টার: বগুড়ার সারিয়াকান্দি, সোনাতালা ও ধুনট উপজেলার যমুনা ও বাঙালি নদীর চরাঞ্চলে জাপানি মিষ্টি আলু চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা। দেশি মিষ্টি আলুর চেয়ে ফলন অনেক বেশি হওয়ায় কৃষকরা আগ্রহী হয়ে উঠেছে এই আলু চাষে। চলতি মৌসুমে চরাঞ্চলে মিষ্টি আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে চাহিদা এবং ভালো দাম পাওয়া কৃষকরা বেশ খুশি।

জানা যায়, তিন উপজেলার যমুনা এবং বাঙালি নদীর কোলঘেঁষে জেগে ওঠা পতিত জমিতে কৃষকরা আদিকাল থেকেই মিষ্টি আলুর চাষ করে আসছেন। স্থানীয় দেশী জাতের মিষ্টি আলুর সাথে এ বছর চাষ হয়েছে জাপানি মিষ্টি আলু। দেশী মিষ্টি আলুর তুলনায় এ জাতের আলুর ফলন দ্বিগুণ হয়ে থাকে। মিষ্টি আলু চাষে সময় ও বিনিয়োগ কম লাগে। প্রতি বিঘায় আলু চাষ করতে খরচ হয় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। এক বিঘা জমিতে ১শ মণ মিষ্টি আলু উৎপাদন হয়। যার মূল্য এক থেকে দেড় লাখ টাকা। প্রতি মণ মিষ্টি আলুর দাম ১১শ টাকা থেকে ১১৫০ টাকায়। মিষ্টি আলু চাষে অল্প খরচে বেশি লাভবান হচ্ছে কৃষক। তাই মিষ্টি আলু চাষে ঝুঁকছেন তারা। বাজারে এর চাহিদা ও দামও ভালো। জেলার চাহিদা মিটিয়ে অন্যান্য জেলায় যাচ্ছে জাপানি জাতের মিষ্টি আলু। ক্ষেতেও বেশ সুস্বাদু। পুরো এলাকায় ক্ষেত জুড়ে চলছে মিষ্টি আলু তোলার উৎসব।

সারিয়াকান্দি উপজেলার কৃষক আব্দুস সামাদ জানান, ৯ বিঘা জমিতে জাপানি মিষ্টি আলু চাষ করেছেন। তিনি আলু তোলা শুরু করেছেন। জাপানি কোম্পানির সাথে আমরা চুক্তি সাপেক্ষে এ জাতের আলুর চাষ করেছেন তিনি। তারা আলুর চারা, সার, কীটনাশক সবকিছু দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। শুধু পরিচর্যা করেছি। যার ফলে লাভবান হচ্ছি।

সারিয়াকান্দি কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, গত বছর এ উপজেলায় ৪০০ হেক্টর জমিতে মিষ্টি আলুর চাষ হয়েছিল। এ বছরও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৪২০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে হেক্টর প্রতি ১৫ টন। আর জাপানি জাতের মিষ্টি আলু এ উপজেলায় ৫০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। দেশী জাতের আলুর তুলনায় এ জাতের আলুর ফলন খুব বেশি।

নারুতো জাপান কোম্পানি লিমিটেড চাষিদের মাঝে চারা, সার ও বীজ কারিগরি সহায়তা দিয়ে এ জাতের মিষ্টি আলুর চাষ শুরু করেছেন গত ২ বছর আগে। এ কোম্পানি কৃষকদের নিকট থেকে ১৫ হাজার টাকা মেট্রিক টন দরে আলু ক্রয় করেন। এরপর নারায়নগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে আদমজী ইপিজেড কোম্পানির কারখানায় প্রক্রিয়াজাত করে জাপান, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করে থাকে। উত্তরাঞ্চলের বগুড়া, দিনাজপুর, গাইবান্ধাসহ ৫ টি জেলার বিভিন্ন উপজেলার নদীবেষ্টিত চরাঞ্চলে এ জাতের মিষ্টি আলুর চাষ শুরু হয়েছে।

সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হালিম জানান, নতুন জাত হিসেবে এবং ফলন বেশি হওয়ায় এ জাতের মিষ্টি আলুর প্রতি কৃষকরা ঝুঁকছেন। আগামী বছরগুলোতে এ জাতের আলুর চাষ আরো বৃদ্ধি পাবে। মিষ্টি আলুতে নানা ধরনের ভিটামিন থাকায় এটি মানব দেহের জন্য খুবই উপকারি।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০