চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গায় চলতি মৌসুমে দেশের ও জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বেলা ৩টায় এ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
এর আগে সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৫৬ শতাংশ এবং দুপুর ১২টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আদ্রতা ছিল ১৪ শতাংশ।
চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিস থেকে জানা গেছে, আজকের তাপমাত্রা এযাবৎ কালের সব রেকর্ড ভেঙেছে। এর আগে ২০০৫ সালের ২ জুন চুয়াডাঙ্গা সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ২০১৪ সালের ২১ মে এ জেলায় ৪৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল। সে হিসেবে ১০ বছর পর চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রার পারদ ৪৩ ডিগ্রিতে উঠলো।
চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রার পারদ কিছুতেই নামছে না, চড়চড় করে বেড়েই চলেছে। চলতি মৌসুমের প্রায় প্রতিদিনই দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড করা হয় এ জেলায়। গত এক সপ্তাহ ধরে চলছে খুব অতিতীব্র দাবদাহ।
একটানা এমন তাপমাত্রার ফলে খরতাপে জেলায় খুব অতিতীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এতে জনজীবন ওষ্ঠাগত। ভুগছে প্রাণীকূলও। প্রতিদিনই মারা যাচ্ছে ফার্মের মুরগি, পোষা কবুতর। এরইমধ্যে দাবদাহে জেলার দামুড়হুদা উপজেলায় এক নারীসহ ৩ জন মারা গেছে।
দিনের বেলায় প্রচণ্ড রোদ আর সন্ধ্যার পর ভ্যাপসা গরম নিত্যসঙ্গী হয়ে উঠেছে। এর সঙ্গে বিদ্যুতের লুকোচুরিতে (লোড শেডিং) চুয়াডাঙ্গার জনজীবনে নেমে এসেছে চরম অস্বস্তি।
স্বাস্থ্য সুরক্ষায় দুপুর ১২টা থেকে দুপুর সাড়ে ৩টা পর্যন্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ির বাইরে বের হচ্ছেন না। খুব প্রয়োজনে কেউ বের হলে ছাতা মাথায় বের হচ্ছেন। এই তাপপ্রবাহে বেশি বিপাকে পড়েছেন দিনমজুর এবং ভ্যান ও রিকশা শ্রমিকেরা। গরমে ঘেমে-নেয়ে অনেকে অসুস্থও হয়ে পড়ছেন।
এদিকে তীব্র দাবদাহে মাঠের ফল-ফসলও ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ছে। কোথাও কোথাও ফসল ঝলসে যাওয়ার খবর মিলেছে।
চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ জামিনুর রহমান জানান, মঙ্গলবার সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আদ্রতা ছিল ৫৬ শতাংশ। দুপুর ১২টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আদ্রতা ছিল ১৪ শতাংশ। বেলা ৩টায় জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। যা চলতি মৌসুমে দেশের ও এ জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ অনেক বেশি থাকায় ভ্যাপসা গরম অনুভূত হচ্ছে।
এর আগে শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বেলা ৩টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং শনিবার (২৭ এপ্রিল) সন্ধা ৬টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, রোববার (২৮ এপ্রিল) তাপমাত্রা ছিল ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সোমবার (২৯ এপ্রিল) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড করা হয়।
তিনি আরো জানান, জেলায় হিট অ্যালার্ট জারি আছে। জনসচেতনায় জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে প্রতিদিনই জেলাজুড়ে মাইকিং করা হচ্ছে। আজ পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রার পারদ সর্বোচ্চ ৪০ থেকে ৪৩ ডিগ্রিতে উঠা নামা করছে। সবাইকে সাবধানে থাকার অনুরোধ রইলো।