বগুড়া নিউজ ২৪: পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ২৫ হাজার ১৬টি প্লটের মধ্যে প্রায় ৪ হাজার প্লট প্রবাসী কোটায় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এসব প্লটের অর্ধেকের বেশি এরই মধ্যে বেচে দেওয়া হয়েছে অন্যের কাছে। প্রবাসী কোটায় বরাদ্দগ্রহীতাদের মধ্যে হাতে গোনা কয়েকজন নকশা পাস করালেও এখনো বাড়ি বানাননি।
এর কারণ খুঁজতে গিয়ে রাজউকের কর্মকর্তারা জানতে পারেন, যাদের নামে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তাদের বেশির ভাগই উন্নত দেশগুলোতে বাংলাদেশ দূতাবাসে কর্মরত। আর অন্যরা বেসরকারি খাতে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি। ফলে তারা পূর্বাচলে বাড়ি বানানোর তাগিদ অনুভব করছেন না। শুধু কাগজ হস্তান্তর করে টাকা নিয়ে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে রাজউকের সদস্য (এস্টেট) মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম বলেন, প্রবাসী কোটার প্লট বিক্রি কী পরিমাণ হয়েছে তা সঠিক বলা কঠিন। তবে হস্তান্তর করা হচ্ছে অনেক। কোনো বরাদ্দগ্রহীতা যদি নিয়ম মেনে প্লট বিক্রি করতে চান, তখন আমরা আটকে রাখতে পারি না।
প্রকল্প নিয়ে কাজ করা এক প্রকৌশলীর মতে, যাদের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে, তারা কাঠাপ্রতি শ্রেণিভেদে ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা করে পেয়েছেন। রাজউক এই জমির উন্নয়নকাজ করে তা কাঠাপ্রতি শ্রেণিভেদে ২ লাখ থেকে ৩ লাখ টাকায় বরাদ্দ দিয়েছে। সেই জমি বিভিন্ন সময়ে একেক কাঠা ৭০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকায় বিক্রি করেছেন বরাদ্দগ্রহীতারা।
রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ভূমি শাখায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পূর্বাচলে গত কয়েক বছরে যত প্লট হস্তান্তর বা বিক্রি হয়েছে, তার বেশির ভাগই প্রবাসী কোটার।
পূর্বাচল প্রকল্পটি তিন দশকেও বাসোপযোগী না হওয়ার জন্য প্লট বরাদ্দের পদ্ধতি দায়ী বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, প্লট বরাদ্দ দেওয়ার পদ্ধতিটি ত্রুটিপূর্ণ।
নগরবিদ ও স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, যেখানে দেশে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের চরম আবাসনসংকট রয়েছে, সেখানে এই গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রকল্পে প্লটগুলোর একটা বড় অংশ গেছে প্রবাসী কোটায়। এটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক কাজ।
এসব বিষয়ে তিনি আরো বলেন, যারা দেশেই থাকেন না তাদের প্লটে তো বাড়ি হচ্ছে না। তাদের বাড়ি করার তাগিদ নেই। তারা এসব জমি ২৫-৩০ গুণ বেশি দামে বিক্রি করে দিয়ে টাকা নিয়ে যাচ্ছেন। আসলে জমি তো বিক্রি হচ্ছে না; বিক্রি হচ্ছে একটি কাগজমাত্র। এভাবে জমির মালিকদের নিঃস্ব করে ধনীকে আরো ধনী বানানোর কোনো যুক্তি দেখছি না।