উলিপুরে ভাঙা ব্রিজে ঝুঁকি নিয়েই চলাচল

কুড়্রিগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামে বন্যার পানির তোড়ে ভেঙে গেছে ব্রিজ, যেকোনো মুহূর্তে দেবে যেতে পারে সেটি। তবুও নড়বড়ে ব্রিজটির ওপর দিয়ে প্রতিদিন সহস্রাধিক পথচারী ও যানবাহন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে। ফলে প্রতিদিনই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। আহত হয়েছেন অনেকেই। কিন্ত স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কেউ এগিয়ে আসেননি। এ নিয়ে চরম ক্ষোভ রয়েছে এলাকাবাসীর।

সরেজমিনে দেখা যায়, উলিপুর উপজেলার কামাল খামার ডারারপাড় মোড়ে জরাজীর্ণ ব্রিজটি দাঁড়িয়ে আছে। ওই পথ ধরে প্রতিদিন দুর্গাপুর ইউনিয়নের ডারারপাড় এলাকার কামাল খামার, ইসলামপুর, আমবাড়ি, তালেরতল এবং ধরণীবাড়ি ইউনিয়নের জানজায়গীর, মাঝবিল ও বাকারা মধুপুর গ্রামের কয়েকশ যানবাহনসহ হাজারো পথচারী যাতায়াত করেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করায় প্রতিদিনই ঘটছে ছোট-বড় নানা দুর্ঘটনা।

স্থানীয়রা জানান, প্রায় ৫০ বছর আগে ইসলামপুর গ্রাম থেকে তেতুলতলা বাজার সড়কে চতলা বামনি নদীর সংযোগ মুখে প্রায় ১২ ফুট দৈর্ঘের ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। গত বছর বন্যায় পানির তোড়ে ব্রিজের তলদেশের মাটি সরে গিয়ে সেটি ভেঙে যায়। স্থানীয়দের সহযোগিতায় মাটি ও কাঠ বিছিয়ে কোনো রকম যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্ত দীর্ঘ এক বছরেও ব্রিজটি সংস্কার কিংবা পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তা ব্যক্তিরা।

তাদের অভিযাগ, ব্রিজের দুই পাশের র‌্যালিংসহ এক পাশ ভেঙে গেছে ভেঙে। ব্রিজের এমন বেহাল দশায় আতঙ্কিত পথচারীরা। ব্রিজটির ওপর দিয়ে আশপাশের প্রায় ১০ গ্রামের মানুষ উপজেলা শহরে আসা-যাওয়া করে। এ ছাড়া ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, মিশুক গাড়ী, ভ্যান, সাইকেল, মোটর সাইকেল চলাচল করে। কিন্তু এক বছরের অধিক সময় ধরে ব্রিজটির বেহাল দশা হলেও কোনো সংস্কার করেনি কর্তৃপক্ষ।

ওই এলাকার বাসিন্দা হোসেন আলী বলেন, রাস্তাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ব্রিজটি ভেঙে গিয়ে জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। এই ব্রিজের ওপর দিয়ে কামালখামার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জানজায়গীর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কামালখামার ফাজিল ডিগ্রি মাদরাসার শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করে।

কামাল খামার তেতুল তলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মুনতাহা ও মাছুমা জানায়, ভাঙা ব্রিজটির জন্য স্কুল যেতে আমাদের অনেক অসুবিধা হয়। গাড়ীঘোড়া আসলে আমাদের দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। তবুও কষ্ট করে। স্কুলে যেতে হয়। দ্রুত ব্রিজটি ঠিক করে আমাদের স্কুল যাওয়ার অসুবিধা দূর করার দাবি তাদের।

কামাল খামার তেতুল তলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন বলেন, ভাঙা ব্রিজটি দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে আসতে হয়। এমনকি অনেক সচেতন অভিভাবক তাদের ছোট বাচ্চাদের মাঝে মাঝে স্কুলে পাঠান না।

পথচারী হোসেন আলী, হায়বর আলী, জামাল উদ্দিন, আব্দুস সালাম, ফরিদ মিয়া জানান, এই রাস্তাটি গ্রামের হলেও প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের হাজারের অধিক গাড়ী যাতায়াত করে। প্রতিদিন ছোট-বড় দূর্ঘটনা ঘটেই চলছে। যানবাহন চলতে অসুবিধা হচ্ছে। বৃষ্টির সময় আরো বেশি অসুবিধা হতে পারে। তারা আরো জানান, গত সপ্তাহে একটি মিশুক ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা যাত্রীসহ খাদে পড়ে গিয়ে গুরুত্বর আহত অবস্থায় এখনও রংপুর মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে একজন চিকিৎসাধীন। যে অবস্থা শুধু এখন দুই-একজন মরাটা বাকী আছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুল আলম বলেন, ব্রিজটি অতিদ্রুত নির্মাণ করা উচিত। ভাঙা ব্রিজটির ছবিসহ পিআইও অফিস ও উপজেলা প্রকৌশলীকে জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে উলিপুর উপজেলা প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার বলেন, কয়েকদিন আগে ব্রিজটি সম্পর্কে জানতে পেরেছি, যতদ্রুত সম্ভব সেখানে নতুন ব্রিজ নির্মাণ করা হবে।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১