প্রস্তাবিত বাজেট প্রত্যাখ্যান করল বিএনপি

বগুড়া নিউজ ২৪: ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বিএনপি প্রত্যাখ্যান করেছে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রোববার (৯ জুন) বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি কথা জানান।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই বাজেট কল্পনার এক ফানুস, ফোকলা অর্থনীতি ওপর দাঁড়িয়ে আছে। বাজেটে কর্মসংস্থান তৈরির কোনো দিক নির্দেশনা নেই। ডলার সংকটের কথা বলে আমদানি সংকুচিত করায় ক্যাপিটাল মেশিনারিজ এবং ‌র-মেটারিয়ালস আমদানি প্রায় অবরুদ্ধ। যার ফলে শিল্প কারখানা বন্ধের পথে।’

তিনি বলেন, ‘বাজেটে কালো টাকায় ঢালাও দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছে। ১৫ শতাংশ কর দিয়ে ব্যক্তির সঙ্গে যেকোনো কোম্পানিকেও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। সরকারের কোনো সংস্থাই কালো টাকা সাদাকারীদের কোনো ধরনের প্রশ্ন করতে পারবে না। অর্থাৎ দায়মুক্তি বা আইনি ছাড় দেওয়া হলো। এর ফলে সৎ ও বৈধ আয়ের করদাতাদের নিরুৎসাহিত এবং দুর্নীতিকে সরকারিভাবে উৎসাহিত করা হলো। দুর্নীতি করার এহেন লাইসেন্স প্রদান অবৈধ, অনৈতিক ও অসাংবিধানিক। ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার বিপরীতে সৎ করদাতাদের সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ হারে কর দেওয়ার বিধান বৈষম্যমূলক ও অসাংবিধানিক। এই পদক্ষেপ সংবিধানের ২০(২) অনুচ্ছেদের পরিপন্থি।’

তিনি আরও বলেন, ‘কথায় কথায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের বুলি যারা আওড়ায়, তাদের পক্ষে রাজস্ব বৃদ্ধির খোঁড়া যুক্তিতে দুর্নীতির বৈধ লাইসেন্স প্রদান যে অনৈতিক ও সাংঘর্ষিক- তা জেনেশুনেই দুর্নীতিবাজ সরকার অবৈধ সম্পদ অর্জনকারীদের দুর্নীতির এই লাইসেন্স দিচ্ছে। সরকারের আনুকূল্যে বেড়ে ওঠা আজিজ-বেনজীরদের মতো দুর্নীতিবাজদের কালো টাকা সাদা করার ঢালাও সুযোগ সৃষ্টির জন্যই এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে এই অস্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় কিছু রাজস্ব আদায় হলেও এতে সার্বিকভাবে রাজস্ব আহরণ ব্যাহত হবে। এই বাজেট দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ দখলদার আওয়ামী সরকার ও তাদের মাফিয়া গুরুদের মাঝে ভাগাভাগির এক সুনির্দিষ্ট ইজারাপত্র মাত্র।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‌‘বর্তমানে বাংলাদেশ লুটেরাদের কবলে। প্রস্তাবিত বাজেট নিজেদের চুরি হালাল করার ধান্দাবাজির বাজেট। এই বাজেটে দেশের অর্থ নতুনভাবে লুটপাটের পরিকল্পনা করা হয়েছে। আয়ের চেয়ে ব্যয় ধরা হয়েছে অনেক বেশি। অথচ পুরো বোঝাটা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে সাধারণ মানুষের ওপরে। ঋণ ও ঘাটতিভিত্তিক বড় বাজেট অতীতে বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি, আগামীতেও হবে না। একটি অনির্বাচিত সরকারের ওপর করদাতারা আস্থা রাখে না।’

তিনি বলেন, ‘এ বছর আগের ১২ বিলিয়ন ডলারের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ঋণের সুদ পরিশোধ করতে হবে। এই বাজেট আসলে শূন্যের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটির মধ্যে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটিই ঘাটতি। অর্থাৎ বাজেটের এক-তৃতীয়াংশই ঘাটতি, যা মেটানোর প্রস্তাব করা হয়েছে অভ্যন্তরীণ দেড় লাখ কোটি ও বৈদেশিক এক লাখ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে। ঋণ দিয়ে ঋণ পরিশোধের ফন্দি। অর্থাৎ কৈ’র তেলে কৈ ভাজা আর কি।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য এ সরকারের প্রস্তাবিত বাজেট দেশের সাধারণ দরিদ্র মানুষদের শোষণের লক্ষ্যে একটি সাজানো হাতিয়ার মাত্র। বর্তমান লুটেরা সরকারের এ বাজেট কেবল দেশের গুটিকয়েক অলিগার্কদের জন্য, যারা শুধু চুরিই করছে না, তারা ব্যবসা করছে, তারাই পলিসি প্রণয়ন করছে, আবার তারাই পুরো দেশ চালাচ্ছে।’

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০