বগুড়া নিউজ ডেস্কঃ নানা ধরনের স্বাস্থ্যকর খাবারের মধ্যে বাদাম শরীরের জন্য একটি উপকারী খাবার। বাদাম নানা পুষ্টিগুণে ভরপুর। বাদামে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরে শক্তির যোগান দেয়, শরীরে ক্ষতিকর টক্সিনের পরিমাণ কমায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। বাদাম হৃদরোগের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি রক্তের খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমায়।
ফলে শরীরের নানা ঘাটতি পূরণ করে সুস্থ রাখে বাদাম। এজন্য চিকিৎসকেরা বাদাম খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। দুপুর কিংবা রাতের খাবারে পর্যাপ্ত পরিমাণে মাছ, মাংস, ডিম, দুধ যাই থাকুক না কেন প্রাতরাশে কটা বাদাম রাখবেনই। এই তালিকায় আমন্ড ছাড়াও কাজু বাদাম, পেস্তা, আখরোট, ম্যাকাডেমিয়া, পেকান, পিনাট রাখতে পারেন।
এবার জেনে নেয়া যাক বাদামের নানা পুষ্টিকথা –
#বাদামে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, ভিটামিন, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, ম্যাঙ্গানিজ, ফ্যাট, সেলেনিয়ামসহ নানা পুষ্টিগুণ রয়েছে। সব ধরনের মেশানো এক আউন্স বা ২৮ গ্রাম বাদাম খেলে তার ক্যালরির পরিমাণ প্রায় ১৭৩ কিলোক্যালরি। কোন বাদামে কার্বোহাইড্রেট বেশি আবার কোনটায় প্রোটিন বেশি। কিন্তু সব রকম বাদামই উপকারী।
# অনেকে মনে করেন বাদামের ফ্যাট শরীরের জন্য ক্ষতিকর, এ ধারণা একেবারেই ভুল। বরং বাদামে থাকা ফ্যাট হাই কোলেস্টেরলের মতো সমস্যা মোকাবিলা করে। আবার বাদামে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকার কারণে হার্টের রোগের আশঙ্কা কম থাকে এবং বয়স ধরে রাখতে সাহায্য করে।
# পেস্তা বাদাম টাইপ-২ ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করে। নানা সমীক্ষায় বার বার প্রমাণিত হয়েছে যে, রক্তে শর্করার পরিমাণ কমায় পেস্তা। তাই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরা বাদাম খেতেই পারেন, তাতে ক্ষতি নয় উপকারই হবে।
# ট্রাইগ্লিসারাইড কমাতে সাহায্য করে পেস্তা। কোলেস্টেরলের কারণে হার্ট ব্লক হয়, অ্যাটাক কিংবা স্ট্রোকের আশঙ্কা থাকে। কিন্তু বাদাম সেই আশঙ্কা অনেকটাই দূর করে। তাই চিকিৎসকরা সময় থাকতে বাদাম খাওয়ার পরামর্শ দেন।
# কাজু বাদাম কোলেস্টেরল কমানো ছাড়াও নার্ভ এবং হাড় সুস্থ রাখে। এছাড়া প্রতিদিন কাজু বাদাম খেলে চোখও ভালো থাকবে। বয়স বাড়ার সঙ্গে দৃষ্টিশক্তি কমার সমস্যাও মোকাবিলা করে কাজু।
# ফাস্ট ফুডের যুগে ওজন বেড়ে যাওয়া এবং ওবেসিটির সমস্যা প্রায় ঘরে ঘরে। সাম্প্রতিক সমীক্ষা বলছে, প্রত্যেক দিন অল্প পরিমাণে আমন্ড খেলে তা ওজন কমাতে সহায়ক। তাই ওজন কমাতে নিয়মিত বাদাম খাওয়া জরুরি।
# যে কোন আঘাত বা ব্যাকটেরিয়াজনিত ইনফেকশন থেকে শরীরে অনেক সময়ে ইনফ্ল্যামেশন হতে পারে। তা বাড়তে থাকলে শরীরের নানা রোগ বাসা বাঁধে। ইনফ্ল্যামেশন কমানোর সবচেয়ে ভাল প্রাকৃতিক ওষুধ হলো আমন্ড, ওয়ালনাট, পেস্তা ও ব্রাজিল নাট।
মনে রাখবেন, প্রতিদিন বিভিন্ন প্রকারের কয়েকটা বাদাম খেলে উপকারই হবে কোনো ক্ষতি নয়। কেননা এতে ভেজাল মেশানোর সম্ভাবনা থাকে না। বাদাম যে কোনো সময় খাওয়া যায় তবে প্রাতরাশ বা বিকেলের নাস্তায় খেলে ভালো। চিনা বাদাম খেলে অনেকেরই বেশি পরিমাণ নেয়ার প্রবণতা থাকে। সে ক্ষেত্রে মুড়ি বা চিঁড়ার সঙ্গে মিলিয়ে খেতে পারেন। মুখরোচক করে নয়, বাদাম খেতে হবে কাঁচা। নিয়ম করে খান এবং ভালো থাকুন।