মার্কিন সেনা বিতাড়িত না হওয়া পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্যের জনগণের বিশ্রাম নেয়া উচিত নয়: ইরান

যমুনা নিউজ বিডিঃ ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানি বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্য থেকে মার্কিন সেনারা চলে না যাওয়া পর্যন্ত এ অঞ্চলের জনগণের বিশ্রাম নেয়া বা শান্ত হওয়া উচিত হবে না। ইরান সফররত সিরিয়ার প্রধানমন্ত্রী ইমাদ আল-খামিসের সঙ্গে আজ (মঙ্গলবার) রাজধানী তেহরানে এক বৈঠকে হাসান রুহানি একথা বলেন। বৈঠকে তিনি সিরিয়ার তেল খনিগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেয়ার বিষয়ে মার্কিন প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেন, মার্কিন সেনাদের নিজেদের দেশে ফিরে যেতে বাধ্য করার জন্য এ অঞ্চলের জনগণকে সব রকমের প্রচেষ্টা চালাতে হবে।

ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, আজকের দিনে সিরিয়ার তেলক্ষেত্র দখলে নেয়ার ব্যাপারে ওয়াশিংটন ঘোষণা যে দিয়েছে এবং এ অঞ্চলের দেশগুলোতে আমেরিকা যে হস্তক্ষেপের নীতি গ্রহণ করেছেন তা থেকে একেবারে পরিষ্কার হয় যে, তারা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর স্বার্থ দেখে না এবং ভবিষ্যতেও দেখবে না। ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি’র কুদস ফোর্সের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে মার্কিন সেনারা হত্যা করার পর সিরিয়ার সরকার এবং জনগণ যেভাবে সমবেদনা জানিয়েছেন তাতে ইরানের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। তিনি বলেন, জেনারেল সোলাইমানি শুধুমাত্র ইরানের জনপ্রিয় কমান্ডার ছিলেন না বরং তিনি একইভাবে মধ্যপ্রাচ্যের মুক্তিকামী জনগণ ও সারা বিশ্বের কাছে সমান শ্রদ্ধার পাত্র ছিলেন। রুহানি বলেন, জেনারেল সোলাইমানি মার্কিন হত্যার শিকার হয়েছেন এই কারণে যে, তিনি এ অঞ্চলের নিপীড়িত জনগণের পক্ষে কাজ করছিলেন যার ফলে মার্কিন সরকারের নানামুখী ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়ে গেছে। প্রেসিডেন্ট রুহানি সুস্পষ্ট করে বলেন, আমেরিকার এই অপরাধযজ্ঞ আমরা কখনো ভুলবো না এবং মার্কিন সেনাদের এ অঞ্চল থেকে বহিষ্কারের জন্য প্রতিটি দেশের জনগণকে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। বৈঠকে তিনি ইরান এবং সিরিয়ার মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় চুক্তি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া জোরদার করার জন্য দু দেশের কর্মকর্তাদের প্রতি জোরালো আহ্বান জানান এবং তেহরান-দামেস্ক সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য ইরানের পক্ষ থেকে নিশ্চিত প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। রুহানি বলেন, উগ্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয় না আসা পর্যন্ত ইরান, সিরিয়া এবং অন্য দেশগুলোর মধ্যে অবশ্যই সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে হবে। বৈঠকে সিরিয়ার প্রধানমন্ত্রী ইমাদ আল-খামিস জেনারেল কাসেম সোলাইমানির শাহাদাতের ঘটনায় ইরানি জনগণকে সমবেদনা জানান। তিনি বলেন, জেনারেল সোলাইমানিকে হারানো বিশ্বের প্রতিটি স্বাধীনতাকামী জাতির জন্য বিরাট বড় ক্ষতি। তিনি আরো বলেন, ইরাকের ভেতরে মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের পক্ষ থেকে যে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে তার মাধ্যমে বলদর্পী আমেরিকা এবং তার মিত্রদের কাছে এই বার্তা পরিষ্কার হয়েছে যে, এ অঞ্চলে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির কোনো স্থান নেই। তিনি বলেন, এ অঞ্চলের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ চলছে এবং তা অব্যাহত থাকবে। সিরিয়ার মাটিতে মার্কিন সেনাদের অবস্থানকে ইমাদ আল-খামিস দখলদারিত্বের সুস্পষ্ট উদাহরণ বলে উল্লেখ করেন।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ