সাংবাদিকদের মূর্খ বললেন জবি উপাচার্য

বগুড়া নিউজ ২৪ঃ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রক্টর মোস্তফা কামালের নিয়োগ ও পিএইচডি ডিগ্রি পাওয়া নিয়ে অনিয়মের অভিযোগের সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকদের মূর্খ বললেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান। এদিকে এই সংবাদকে মিথ্যা অ্যাখায়িত করে গতকাল বুধবার ক্যাম্পাসে দুটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকা পুড়িয়েছে তাঁর অনুসারী জবি ছাত্রলীগের একাংশ। ক্যাম্পাসে মিছিল করে রফিক ভবনের সামনে তারা পত্রিকা দুটির সংখ্যায় আগুন ধরায়।

এদিকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রক্টরের নিয়োগ ও পিএইচডি ডিগ্রির অনিয়মের বিষয়ে প্রশাসনের স্পষ্ট ব্যাখ্যা ও জরুরি তদন্তের দাবি জানিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রগতিশীল ঐক্যজোট ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট। আর উপাচার্য সাংবাদিকদের মূর্খ বলায় প্রতিবাদ জানিয়েছে জবি সাংবাদিক সমিতি।

উপাচার্য ড. মীজানুর রহমান বলেন, যাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম-কানুন জানেন না, এমন মূর্খ সাংবাদিকরাই এ ধরনের সংবাদ লিখতে পারেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি ডিগ্রি প্রদানের নিয়ম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের একাডেমিক কাউন্সিলের নিয়ম ছিল, যদি কোনো বিভাগের শিক্ষক ওই বিভাগেই পিএইচডি করেন তবে তিনি দুই বছর পরেই পিএইচডি থিসিস জমা দিতে পারবেন। সে নিয়ম অনুসারে দর্শন বিভাগের শিক্ষক হাফিজুল ইসলামকে পিএইচডি প্রদান করা হয় ৩৭তম একাডেমিক কাউন্সিলে। এর এক বছর পর একই নিয়মে মোস্তফা কামালকে পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান করা হয়। এ নিয়মটি শুধু ফ্যাকাল্টি মেম্বারদের জন্যই প্রযোজ্য। তা ছাড়া বর্তমান প্রক্টর মোস্তফা কামালকে পিএইচডি দেওয়া হয়েছে ৩৯তম একাডেমিক কাউন্সিলে। সুতরাং তাঁর পিএইচডি যাবতীয় নিয়ম মেনেই দেওয়া হয়েছে।

জবি ছাত্রলীগের একাংশ ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জমান আসাদের অনুসারীরা পত্রিকা পোড়ানো প্রসঙ্গে দাবি করেন, ওই পত্রিকা দুটি জামায়াত ও বিএনপির এজেন্ট। তাদের অবস্থান প্রগতিশীল চিন্তার বিরুদ্ধে। তারা স্বায়ত্তশাসিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনকে অবমাননা করেছে।

এদিকে প্রগতিশীল ঐক্যজোটের নেতারা এক বৃিবতিতে বলেন, গত ১৪ জানুয়ারি দেশের কয়েকটি জাতীয় দৈনিকসহ অনলাইন পত্রিকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক মোস্তফা কামালের বিরুদ্ধে বিধিবহির্ভূতভাবে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের গুরুতর অভিযোগের সংবাদ প্রকাশিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক ও দায়িত্বশীল পদে থাকা ব্যক্তির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি করেছে। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের পরিপ্রেক্ষিতে কোনো রকম স্পষ্ট ব্যাখ্যা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দেয়নি। উপরন্তু উপাচার্যের পক্ষ থেকে কোনো রকম তদন্ত ছাড়াই অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।

এক প্রতিবাদ বার্তায় জবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি হুমায়ুর কবির ও সাধারণ সম্পাদক লতিফুল ইসলাম বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি বস্তুনিষ্ঠতায় বিশ্বাসী। বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরকে নিয়ে সম্প্রতি কয়েকটি পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ যথাযথ প্রমাণ ও নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে যাচাই করা। কিন্তু উপাচার্য ড. মীজানুর রহমান তাঁর নিয়োগ ও পিএইচডি ডিগ্রি প্রদানে অনিয়মের তদন্ত না করেই তাঁর পক্ষে সাফাই গেয়ে উল্টো সাংবাদিকদের মূর্খ আখ্যায়িত করেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সর্ব্বোচ্চ জায়গা থেকে উপাচাযের্র এ বক্তব্যে সাংবাদিক সমাজ হতাশ, যা কোনোভাবেই আশা করা যায় না।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ