ডাকসুতে আর নির্বাচন করবেন না ভিপি নুর

বগুড়া নিউজ ২৪ঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) মেয়াদ আছে আর মাত্র ৫ সপ্তাহ। এর পরই নতুন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নতুন নেতৃত্ব পাবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আগামী নির্বাচনে অংশ নেবেন না সংসদের বর্তমান সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুর। যুগান্তরের সঙ্গে আলাপকালে এমনটিই জানিয়েছেন তিনি।

প্রায় তিন দশক পর গত বছরের ১১ মার্চ ছাত্রদের সরাসরি ভোটে ডাকসুর নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি হয়। ভিপি ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক বাদে বাদবাকি পদগুলোতে ছাত্রলীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়। এই দুটি পদে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের দুই নেতা নুরুল হক ও আখতার হোসেন জয়ী হন।

ডাকসুর কার্যনির্বাহী কমিটির মেয়াদ ৩৬৫ দিন। গত বছরের ২৩ মার্চ দায়িত্ব নেয়া বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হতে আর মাত্র ৩৬ দিন বাকি।

মেয়াদ শেষ হলেই নতুন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা। তবে এবার ডাকসু নির্বাচন নিয়ে তেমন একটা আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না প্রশাসনে। ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যেও তেমন তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

ভিপি পদে বিজয়ী নুরুল হক কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের নেতা হিসেবে পরিচিত। তিনি সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ থেকে নির্বাচন করেন।

গত নির্বাচনে ভিপি নুর ১৯৩৩ ভোটের ব্যবধানে হারান তৎকালীন ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক শোভনকে, পরে যিনি ছাত্রলীগ থেকে পদচ্যুত হন।

ভিপি পদে নুরুল হক পান ১১ হাজার ৬২ ভোট। ছাত্রলীগের ভিপি প্রার্থী রেজওয়ানুল হক শোভন পান ৯ হাজার ১২৯ ভোট। ওই নির্বাচনে ভোটারের সংখ্যা ছিল ৪৩ হাজার ২৫৫ জন। ভোট পড়ে ২৫ হাজারের কিছু বেশি।

গত নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হলেও এবার আর নির্বাচন করবেন না ভিপি নুর। নিয়মানুযায়ী তার আবার নির্বাচন করার সুযোগ আছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের নিয়মিত মাস্টার্সের এই ছাত্রের বয়স মাত্র ২৫ বছর।

নির্বাচন না করার কারণ হিসেবে ছাত্রলীগের হাতে বারবার মার খাওয়া এই ছাত্রনেতা বলেন, আমি ডাকসুতে নতুন নেতৃত্ব দেখতে চাই। আমি চাই নতুন কেউ এই পদে আসুক। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র হিসেবে ছাত্রসংসদের সবচেয়ে বড় পদে আমি নির্বাচন করে জয়ী হয়েছি। তাই আবার একই পদে নির্বাচন করার ইচ্ছা আমার নেই। নানা প্রতিকূলতা সত্ব্বেও ছাত্ররা ভোট দিয়ে আমাকে ভিপি নির্বাচিত করেছেন। আমি চেষ্টা করেছি তাদের পাশে দাঁড়াতে। আমি ভিপি হওয়ার আগেও সাধারণ ছাত্রদের দাবির প্রতি সোচ্ছার ছিলাম, ভিপি হওয়ার পরও ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকব।

কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের প্যানেল সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ থেকে ভিপি পদে জয়ী হয়েছিলেন ভিপি নুর। এবারও এই প্যানেল নির্বাচনে অংশ নেবে বলে জানান তিনি।

এবার কে ভিপি পদে নির্বাচন করবে-এমন প্রশ্নে নুর শুক্রবার টেলিফোনে এ প্রতিবেদককে বলেন, এখনও এ বিষয়ে আমাদের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণে অনেক কার্যকর নেতৃত্ব আছে, তাদের মধ্য থেকেই একজন ভিপি পদে নির্বাচন করবেন।

সে ক্ষেত্রে কে এগিয়ে আছেন-এমন প্রশ্নে ভিপি নুর বলেন, আমাদের সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন আছেন, তিনি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে নির্বাচন করবেন। রাশেদ, ফারুকসহ আরও অনেকে আছেন তাদের মধ্য থেকে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ নেতৃত্ব বেছে নেবেন।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনে কেন্দ্রীয় সংসদের ২৫টি পদের মধ্যে ২৩টিতেই জয়ী হয় ছাত্রলীগ।

জিএস-এজিএসসহ ২৩ পদে জয়ী হয় ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী পান ১০ হাজার ৪৮৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের রাশেদ খান পান ৬ হাজার ৬৩ ভোট।

এজিএস পদে ছাত্রলীগের সাদ্দাম হোসেন পান ১৫ হাজার ৩০১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ফারুক হোসেন পান ৫ হাজার ৮৯৬ ভোট।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ