সুন্দরবনের সুন্দরী গাছ বন বিভাগের ট্রলারেই পাচার!

বগুড়া নিউজ ২৪ঃ করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সুন্দরবনে যখন সাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ; সে সময়ে দিনে-দুপুরে বনের ‘কর্তন নিষিদ্ধ’ সুন্দরী ও কাকড়া গাছ কেটে তা পাচারের অভিযোগ উঠেছে বাগেরহাট পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ঢাংমারী ষ্টেশনের ষ্টেশন অফিসার (এসও) মো. আনোয়ার হোসেন খাঁনের বিরুদ্ধে।

এই বন কর্মকর্তা বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বনের ঘাগরামারী এলাকা থেকে সুন্দরী ও কাকড়া গাছ কেটে বন বিভাগের পতাকাবাহী ট্রলারে তা পাচার করেন। এসময়ে বন বিভাগের পতাকাবাহী ট্রলারে ছিলো সুন্দরবনের তিন গাছ পাচারকারী। গাছ পাচারের সাথে জড়িত এক তরুন বলেন, এ গাছ ঘাগরামারী থেকে কেটে আনতে ঢাংমারী ষ্টেশন অফিসার আনোয়ার হোসেন তাদের অনুমতি দিয়েছেন।

তবে ঢাংমারী ষ্টেশনের ষ্টেশন অফিসার (এসও) মো. আনোয়ার হোসেন খাঁন বলেন, ঘাগরামারী টহল ফাঁড়ি থেকে এ গাছ ষ্টেশনের (ঢাংমারী) স্থাপনা তৈরীর কাজে আনা হচ্ছিল। এ ব্যাপারে তাদের উর্দ্ধতন কর্মকর্তার নির্দেশনা রয়েছে।

তবে বন বিভাগের পতাকাবাহী ট্রলারে গাছ নেয়ার সময় ছিলনা কোনও বনরক্ষী।

ঢাংমারী ষ্টেশন সংলগ্ন ভোজনখালী গ্রামের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা মুজিবর রহমান, সাবেক ইউপি মেম্বর মোঃ আফসার আলী ও সঞ্জয় কুমার বর্মন অভিযোগ করে বলেন, আনোয়ার হোসেন এবং ঘাগরামারীর অফিসের কর্মকর্তা রউফ তাদের লোক (দালাল) দিয়ে সুন্দরবন থেকে প্রতিনিয়তই কর্তন নিষিদ্ধ সুন্দরী, কাকড়া ও বাইনসহ বিভিন্ন প্রজাতির মূল্যবান গাছ পাচার করে থাকেন। যারা এসব অপকর্মের প্রতিবাদ করে তাদের বিরুদ্ধে হরিণ পাচারের মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেন বলেও অভিযোগ করেন তারা।

ওই তিন গ্রামবাসী অভিযোগ করে বলেন, এই দুই কর্মকর্তার সকল অনিয়মে সহযোগি হিসেবে কাজ করছেন ভোজনখালী গ্রামের বাসিন্দা বাদল ও ট্রলার মাঝি রহিম নামের দুই ব্যক্তি। বাদল এবং রহিমের অত্যাচারে গ্রামের সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ এখন অতিষ্ট।

এ দিকে বন বিভাগের স্থাপনা তৈরীর কাজে কোন কাঠ ব্যবহার করতে হলে তাদের জব্দকৃত গাছ ছাড়া ব্যবহার করতে পারবেনা বলে জানান বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. এনামুল হক।

আনোয়ার হোসেন খাঁনের গাছ কাটার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের ষ্টেশনের জেটি নির্মাণের জন্য ওই গাছ নেয়া হচ্ছিল। তবে ওই গাছ বন থেকে সদ্য কাটা কি না সেটি আমি বলতে পারব না।

এ বিষয়ে বনবিভাগের খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মো. মঈন খাঁন সাংবাদিকদের বলেন, সুন্দরবন থেকে সদ্য গাছ কেটে ষ্টেশনের কোন স্থাপনা তৈরী করার কোন সুযোগ নেই। দীর্ঘদিনের জব্দকৃত গাছ দিয়ে এসব স্থাপনা করতে গেলেও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের অনুমতির প্রয়োজন। কোন কর্মকর্তা বনের গাছ কেটে থাকলে তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১