তাজউদ্দীন আহমদের ৯৫তম জন্মদিনে

বগুড়া নিউজ ২৪ঃ বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের অন্যতম নেতা তাজউদ্দীন আহমদের ৯৫তম জন্মদিন আজ । ১৯২৫ সালের ২৩ জুলাই গাজীপুরের কাপাসিয়ার শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে দরদরিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তারা বাবা ছিলেন মৌলভী মো. ইয়াসিন খান ও মা মেহেরুননেসা খান। তাদের ছিল চার ছেলে ও ছয় মেয়ে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধে তাজউদ্দীন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে তিনি মুক্তিযুদ্ধকে সফল সমাপ্তির দিকে নিয়ে যেতে অসামান্য অবদান রাখেন।

১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদসহ অন্য তিন জাতীয় নেতাকে।

তাজউদ্দীন আহমদের শিক্ষাজীবন শুরু হয় গ্রামের মক্তবে। এর পর বাড়ি থেকে দুই কিলোমিটার দূরের ভুলেশ্বর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। স্কুলজীবন শেষ হয় ঢাকার সেন্ট গ্রেগরিজ হাই স্কুলে। ১৯৪৪ সালে ঢাকার সেন্ট গ্রেগরিজ হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন, ১৯৪৮ সালে আইএ এবং ১৯৫৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি লাভ করেন তিনি। ১৯৬৪ সালে নেন আইনশাস্ত্রে ডিগ্রি।

১৯৪৩ সাল থেকে তিনি মুসলিম লীগের সক্রিয় সদস্য ছিলেন এবং ১৯৪৪ সালে বঙ্গীয় মুসলিম লীগের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। মুসলিম লীগ সরকারের গণবিচ্ছিন্ন রাজনীতির প্রতিবাদে তিনি এ দলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন। তিনি ছিলেন আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠনের (১৯৪৯) অন্যতম উদ্যোক্তা। ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত পূর্ববাংলা ছাত্রলীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা তাজউদ্দীন। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে তিনি ভাষা আন্দোলনকালে গ্রেফতার হন এবং কারা নির্যাতন ভোগ করেন।

তিনি পূর্ব পাকিস্তান যুবলীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং ১৯৫১ থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত এ সংগঠনের নির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন।

১৯৫৩ থেকে ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত তিনি ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক ছিলেন এবং পরে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

১৯৬৪ সালে তিনি আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ১৯৬৬ সালে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন।

১৯৭০ সালে তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ভারতে যান এবং প্রবাসী সরকার গঠনের চিন্তা করেন। ৪ এপ্রিল দিল্লীতে ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে তাজউদ্দীনের আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়। ১০ এপ্রিল আগরতলায় সরকার গঠন করার উদ্যোগ নেন। এই সরকার স্বাধীন সার্বভৌম ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার’। স্বাধীনতার সনদ বলে এই সরকারের কার্যকারিতা সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত হয়।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন সরকারে অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রীর দায়িত্ব পান তাজউদ্দীন। পরে ১৯৭৪ সালের ২৬ অক্টোবর বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন তিনি।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ