বদলগাছীতে অতিরিক্ত টোল আদায় বন্ধে ডিসি-ইউএনও’র নির্দেশ মানা হচ্ছে না

বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি : নওগাঁর বদলগাছী হাট বাজারে অতিরিক্ত টোল আদায় বন্ধে ডিসি ইউএনও‘র নির্দেশনা মানছেনা ইজারাদাররা। উপজেলার ৮ ইউনিয়নে হাট বাজারে মাইকিং করে জানানো হয়েছে কৃষকরা যেন হাটে বাজারে টোল জমা না দেয়।

সরকারী নীতিমালা অনুসারে কৃষকের কাছ থেকে টোল নেওয়ার কোন বিধান নেই। কিন্তু কোন ইজারাদার মানছে না টোল আদায় নীতিমালা, মানছে না ডিসি ইউএনও‘র নির্দেশ।

এলাকা ঘুরে জানা যায় দীর্ঘ দিন থেকে অতিরিক্ত টোল আদায় ও কৃষক হয়রানী বন্ধে প্রতিবাদ করে আসছে এলাকাবাসী। সরকারী নীতিমালা অনুসারে কোন ক্রমেই দুপক্ষের কাছ থেকে টোল নেওয়া যাবে না। টোল নিতে হলে রশিদ দিতে হবে।

রশিদে তারিখ, টাকার পরিমান ও পন্যর নাম উল্লেখ থাকতে হবে। রশিদ বইতে হুবুহু কপি সংরক্ষণ করতে হবে। হাটে খোলা জায়গায় রেট চার্ট ঝুলাতে হবে। হত দরিদ্র অথবা কোন রকমে দিনানিপাত করে এমন কোন ভাসমান, অস্থায়ী দোকান থেকে টোল নেওয়া যাবে না।

নওগাঁ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায় বাংলা ১৪২৯সনে সর্বশেষ অনুমোদিত টোল রেট তরকারী, পটল, বেগুন, মুলা, সিম, লাউ, কপি ইত্যাদি কৃষিজাত শাকসবজি, মহিশের গাড়ী, গরুর গাড়ি প্রতি টোল ১৫ টাকা, টমটম গাড়ি প্রতি ১২ টাকা।

তরকারী দোকান প্রতি (বড়) ১২ টাকা। অথচ নেওয়া হয় ২০ টাকা। প্রতিটি পন্যেরে টোল বেশি নেওয়া হচ্ছে। গরু, মহিশ, ঘোড়া ৫০০ শত টাকা, ছাগল, ভেড়া প্রতি ২০০ টাকা, ক্রেতার কাছ থেকে টোল আদায় করতে হবে। নীতিমালা উপেক্ষা করে টোল আদায় করা হয় ক্রেতা বিক্রেতা উভয়ের কাছ থেকে।

গত পহেলা বৈশাখ থেকে সরকারি নীতিমালা অনুসারে টোল আদায় করতে প্রতিটি হাট ইজারাদারকে ডিসির আদেশ মোতাবেক ইউএনও সর্বশেষ অনুমোদিত টোল রেট নীতিমালা সংযুক্ত করে গত ৯ এপ্রিল চিঠি দেন। পহেলা বৈশাখ থেকেই ইউএনওর চিঠি উপেক্ষা করে হাটে হাটে চলছে অতিরিক্ত টোল আদায়।

বদলগাছী হাটে সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহকালে কোথাও কোন রেট চার্ট ঝুলানো দেখা যায়নি। সুবলডাঙ্গা গ্রামের কৃষক রহিম জানান ৮৩ কেজি আলু বিক্রি করেছে, টোল নিয়েছে ২০ টাকা হারে এবং ঝাড়ুদার নিয়েছে ১০ টাকা।

হাট ইজারাদার জনির সাথে অতিরিক্ত টোল আদায় বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনওর চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করে তিনি জানান কৃষকের কাছ থেকে টোল নেওয়া হচ্ছে না। নেওয়া হয় ব্যবসয়ী বা ক্রেতার কাছে। ৬০ কেজি ওজনের এক বস্তা পটল, আলু, বেগুনের জন্য টোল নেওয়া হয় ৩০ টাকা। ১২০ কেজি ওজনের বস্তা হলে নেওয়া হয় ৫০ টাকা।

মঙ্গলবার কোলার হাটে তথ্য সংগ্রহকালে বলরামপুর গ্রামের কৃষক সোহাগ জানায় ৩২ কেজি পটল এনেছিল। টোল নিয়েছে ২০ টাকা। ইউএনও‘র আদেশ উপেক্ষা করে কেন ক্রেতা বিক্রেতার কাছ থেকে টোল নেওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত হারে জানতে চাইলে কোলা হাট ইজারাদার ফেরদৌস জানান আমি ইউএনওর চিঠি পাইনি। প্রতি বছর যেভাবে টোল আদায় করা হয় আমি সেভাবেই তুলছি।

হাটে বাজারে অতিরিক্ত টোল আদায়ের প্রতিবাদ জানিয়েছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবু খালেদ বুলু।

সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সামসুল আলম খান অতিরিক্ত টোল আদায় ও কৃষক হয়রানী বন্ধে সম্প্রতি জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করলে জেলা প্রশাসকের আদেশে ইউএনও অতিরিক্ত টোল আদায় বা দুপক্ষের কাছ থেকে টোল আদায় বন্ধ করে নীতিমালা অনুসারে টোল নিতে চিঠি দেন হাট ইজারাদারদের।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হাসান সোহাগ (অঃদাঃ) জানান, সঠিক নিয়মে টোল নিতে হাট ইজারাদারদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। অমান্য করলে হাট ইজারা আইন অনুসারে ইজারাদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০