ইউজিসির সহায়তা: অসচ্ছলদের তালিকা নিয়ে ‘অন্ধকারে’ রাবি প্রশাসন

রাবি: অনলাইন ক্লাসের জন্য আর্থিকভাবে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের তালিকা তৈরি নিয়ে উভয়সংকটে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগগুলো। বিভাগ ও শিক্ষার্থীদের যোগাযোগের দূরত্ব, শিক্ষার্থী সম্পর্কে পর্যাপ্ত তথ্য না থাকাসহ বেশ কয়েকটি কারণে এক রকম ‘অন্ধকারে’ তৈরি হচ্ছে তালিকা। এতে প্রকৃত অসচ্ছল শিক্ষার্থীরা এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতে পারে বলে শঙ্কা করছেন শিক্ষকরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সভাপতি ফজলুল হক বলেন, ‘বিভাগগুলো শিক্ষার্থীদের থেকে আবেদন চেয়ে নোটিশ করে। যারা আবেদন করেছেন তাদের তালিকা করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখানে কে সচ্ছল বা কে অসচ্ছল সেটি যাচাই করার সময় হয়নি।’

তালিকা তৈরি নিয়ে অন্ধকারে আছেন উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘সব শিক্ষার্থীর সাথে এই সময়ে আমাদের যোগযোগ নাই। আমরা শঙ্কিত যে প্রকৃত অসচ্ছল শিক্ষার্থীরা যেন বঞ্চিত না হয়।’

একই সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার কথা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মনজুর হোসেন বলেন, ‘কে সচ্ছল এবং কে অসচ্ছল, শিক্ষার্থীদের সেই তালিকা তৈরি নিয়ে উভয়সংকটে পড়তে হচ্ছে।’

এর কারণ উল্লেখ করে অধ্যাপক মনজুর বলেন, ‘৫টি বর্ষের শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ভর্তি ফরমে কোথাও পারিবারিক অবস্থার কথা উল্লেখ নেই। এমনকি সেখানে পারিবারিক আয়ের পরিমান জানার মতো কোনো তথ্য নেই বিভাগুলোর কাছে। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর সাথে যোগাযোগের জন্যও পর্যাপ্ত তথ্য নেই। আর অর্থনৈতিক সহযোগিতার কথা শুনে স্বচ্ছলদের আবেদন করার ঘটনাও ঘটতে পারে বলে শংকা আছে। সে কারণে অস্বচ্ছল শিক্ষার্থী বের করা খুব মুশকিল হয়ে যাচ্ছে।’ এখন ক্লাস ক্যাপ্টেনদের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে একটি তালিকা তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

এর আগে, গত ৬ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক কামাল হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞাপ্তিতে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের তালিকা চাওয়া হয়।

সেই অনুযায়ী গত ১০ আগস্ট বিভাগ, ইনস্টিটিউটগুলোর কাছে তালিকা চায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যলয়ের একাডেমিক শাখা। সেখানে ১৮ আগস্টের মধ্যে একাডেমিক শাখায় তালিকা জমা দেওয়ার অনুরোধ করা হয়। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এখনও সবগুলো বিভাগ সেই তালিকা একাডেমিক শাখায় পাঠায়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক শাখার উপ রেজিস্ট্রার এ এইচ এম আসলাম হোসেন বলেন, ‘আগামী ২৫ আগস্টের মধ্যে এই তালিকা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে পাঠাতে হবে। সে জন্য আমরা একটা ডেট দিয়েছি। অনেকে দুই একদিন সময় চেয়েছে। তালিকা তৈরি হলে আমরা পাঠিয়ে দেবো।’

তালিকা তৈরিতে বিড়ম্বনার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অনেকে অসচ্ছল হলেও সামাজিক মর্যাদার কারণে তা বলছে না। আবার কেউ কেউ সচ্ছল হলেও তালিকায় নাম দিচ্ছে। সেজন্য অসচ্ছল বের করা কঠিন হচ্ছে। ইউজিসি তালিকা চেয়েছে আমরা তালিকা পাঠিয়ে দেবো। তবে সহায়তা কে পাবে বা পাবে না, বিষয়টি তারাই নির্ধারণ করবে।’ তবে কবে নাগাদ শিক্ষার্থীরা এই সহায়তা পাবে সেটি জানাতে পারেননি তিনি।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ